নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সপক্ষে দেওয়া যুক্তি কোন কোন কারণে খাটে না জেনে নিন একনজরে
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সপক্ষে যুক্তি কোন কোন কারণে খাটে না জেনে নিন
নতুন নাগরিকত্ব আইনে বলা হচ্ছে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে বিভিন্ন সময়ে ভারতে আসা নির্যাতিত সংখ্যালঘুরা ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু এটা শুধুমাত্র আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের নিপীড়িত হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, পার্সি ও শিখ নাগরিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। তালিকা থেকে বাদ পড়েছে মুসলিমরা।
আর এখানেই সরকারকে প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড় করিয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপি তথা বর্তমান কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন নাগরিক সমাজের একটা বড় অংশও। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কেন এই নাগরিকত্ব আইন সমর্থনযোগ্য নয়।
ধন্দ ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের সময়সীমা নিয়ে
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বারবার বলছেন এই আইন নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য, এই আইন নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য। যদি সত্যিই দেশে সংখ্যালঘুদের অধিকারকে এতই প্রাধান্য দেওয়া হবে তাহলে তালিকা থেকে মুসলিমরা বাদ পড়লো কেন সেই প্রশ্ন ভেসে আসছে সমাজের একাধিক মহল থেকে।
পাশাপাশি প্রশ্ন আসছে নাগরিকত্ব দেওয়ার সময়সীমা নিয়েও। অনেকেই প্রশ্ন করছেন ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পর তাহলে যে সমস্ত ধর্মীয় নিপীড়িত সংখ্যালঘু ভারতে এসেছেন তাহলে তাড়া কি নাগরিকত্ব পাবেন না ?
প্রশ্নের মুখে সাংবিধানিক বৈধতা
নতুন নাগরিক আইন ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারাকে লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ উঠছে একাধিক মহল থেকে। সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারা প্রধানত সাম্যের অধিকারের কথা বলে। সেখানে বলা রয়েছে কোনও ব্যক্তি দেশি, বিদেশি, নাগরিক-অনাগরিকও কিন্তু ভারতে বাস করেন, তিনিও সংবিধানে বর্ণিত ওই সাম্যের অধিকার ভোগ করবেন। কিন্তু অনেকেরই প্রশ্ন এই নতুন নাগরিকত্ব আইনের ফলে সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারাটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে গেছে।
প্রশ্ন উঠছে ভারত-পাক চুক্তির বৈধতা নিয়েও
দেশের মধ্যে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ভারত পাক চুক্তির বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে সুরু করে। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে দেশের সংখ্যালঘুদের নিয়ে ধর্মীয় পরিচয় ভিত্তিক পাকিস্তান তৈরি সেখানে উল্টোদিকে ধর্মনিরপেক্ষ ভারত রাষ্ট্র। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন সেই তার পর থেকে এই প্রথমবার ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় পরিচয়কে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
প্রতিবেশী দেশ গুলির সংখ্যা লঘুদের প্রতি মনোভাব নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
নতুন নাগরিকত্ব আইনে শুধুমাত্র আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের নিপীড়িত হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জরথুষ্ট্রবাদী, জৈন ও শিখের কথা বলা রয়েছে। অন্যদিকে, সিএএকে যদি আরও বিস্তৃত আইন হিসাবে বোঝানো হয়, তবে প্রতিবেশী অন্যান্য দেশগুলির সংখ্যালঘু জনসংখ্যা কেন তার পরিধির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন অর্থাৎ মায়ানমার এবং শ্রীলঙ্কা কেন এর অন্তুর্ভুত নয় তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন? কেন ময়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমান, শ্রীলঙ্কার তামিল হিন্দু, তিব্বতী বৌদ্ধ, চিনের উইঘুর মুসলমান কিংবা পাকিস্তানের ইহুদি এই সুবিধা পাবেন না তা নিয়েও জোরদার সওয়াল করছেন অনেকেই।