জইশ-এর ক্যাম্প ধ্বংস করতেই মোট ১.৭ কোটি টাকার বোমা নিক্ষেপ করল ভারত, আর কোথায় কত খরচ হল
পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে বায়ু সেনা বিমান থেকে মোট ১কোটি ৭০ লক্ষ টাকার বোমা নিক্ষেপ হয়েছে। এমনই তথ্য মিলেছে বায়ু সেনা সূত্রে।
পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে বায়ু সেনা বিমান থেকে মোট ১কোটি ৭০ লক্ষ টাকার বোমা নিক্ষেপ হয়েছে। এমনই তথ্য মিলেছে বায়ু সেনা সূত্রে। এই অভিযানে মোট কত টাকার জিনিসপত্র ব্যবহার হয়েছিল তার হিসাবেও চোখ কপালে উঠতে পারে। এরমধ্যে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হত তাহলে তার হিসাবটা অনুমান করলে আঁতকে উঠতে হবে। এরসঙ্গে কোনও প্রাণহানির ঘটনা যুক্ত হত তাহলে বোঝাই যাবে কতটা বিপজ্জনক ছিল এই অভিযান। যদিও, বায়ুসেনা সূত্রে দাবি, এই ধরনের অভিযানে সবার আগে যেটায় নজর দেওয়া হয় তা হল ব্যাটলফিল্ডে থাকা কোনও সদস্যের যেন প্রাণহানি বা শারীরিক ক্ষতি না হয়। তাই এই ধরনের অভিযানে নিযুক্ত করা মেশিনারি-র ক্ষতি নিয়ে চিন্তার অবকাশ নেই। চেষ্টা করা হয় যাতে বড় কোনও 'কোল্যাটারাল ড্যামেজ' না হয়।
জানা গিয়েছে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতীয় বায়ুসেনার যে বহর প্রবেশ করেছিল তাঁর মেশিনারির-র মোট মূল্য ছিল ২ হাজার ৫৬৮কোটি টাকা। ১০০০ কিলো বোমা যা ব্যবহৃত হয়েছে তার এক একটার মূল্য ৫৬ লক্ষ টাকা। মোট ৬টা ১০০০ কিলো-র বোমা ব্যবহার করা হয়েছে অভিযানে। এই ৬টি বোমা দিয়েই বালাকোট-এ জইশ-এর বড়সড় ঘাঁটি, মুজফ্ফরবাদ ও চাকোথি-তে জইশ-এর ছোট ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে।
এই অভিযানে মোট ৬,৩০০ কোটি টাকার ইনস্টলেশন ব্যবহার করেছে বায়ুসেনা। এরমধ্যে ৩,৬৮৬ কোটি টাকার ইনস্টলেশনকে স্ট্যান্ডবাই মোডে রাখা হয়েছিল। একটা এয়ারবোন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম বা এডবলুএসিএস সার্ভাইল্যান্স এয়ারক্র্যাফট-এর মূল্য ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। এই অভিযানে এই এয়ারক্র্যাফটটিকে রাখা হয়েছিল পাকিস্তানের দিক থেকে গতিবধি নজর করার জন্য।
একটি ইলুশিন মিড-এয়ার রিফিলিং ট্যাঙ্কার এয়ারক্র্যাফট-এর মূল্য ২২কোটি টাকা। এই এয়ারক্র্যাফটটিকেও অভিযানে সামিল করা হয়েছিল। বায়ুসেনার হারন সার্ভাইল্যান্স ড্রোনের মূল্য ৮০ কোটি টাকা।
অভিযানে সামিল ছিল ৩টি রুশ সুখোই সু-৩০এমকেআই সুপিয়রিটি এয়ারক্র্যাফট। যার এক একটি-র মূল্য় ৩৫৮কোটি টাকা। তবে ২১ মিনিটের এই অভিযানেই সুখোই-এর তিনটি যুদ্ধ বিমান-ই স্ট্যান্ডবাই মোডে ছিল। ভারতীয় ভূখণ্ডে তাঁরা অপেক্ষা করছিল এমারজেন্সি কলের জন্য। ৫টি মিগ ২৯এস বিমানও সামিল ছিল অভিযানে। এদের একটি বিমানের মূল্য ১৫৪ কোটি টাকা। এই ৫টি বিমানও গ্রাউন্ডে সতর্ক অবস্থায় ছিল।
[আরও পড়ুন: পাকিস্তানের পাশে নেই চিনও! ভারতের প্রত্যাঘাতের পর কি 'বন্ধু' হারালেন ইমরান]
১২টি মিরাজ ২০০০ বিমান এই অভিযানের মূল আক্রমণকারী ছিল। একটি মিরাজ ২০০০-এর দাম ২১৪কোটি টাকা। গোয়ালিয়র এয়ারবেস থেকে ওড়া এই বিমানগুলিতে আবার ২২৫ কিলোর জিবিইউ-১২ কনভেনশনাল লেসার-গাইডেড বোমা লোড করা হয়েছিল। এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল আমেরিকায় তৈরি প্রিসিসন গাইডেন্স।
প্রতিটি জিবিইউ-১২ পেভওয়ে ২(গাইডেড বোম্ব ইউনিট) যা ১৯৭৬ সালে আমেরিকা প্রথম ব্যবহার শুরু করেছিল, বহন করছিল ২২৫কিলোর ওয়ারহেড। যার মূল্য ১৪ থেকে ১৪.৭লক্ষ টাকা। বায়ুসেনা তিন স্থানে ৪ থেকে ৫টি বোমা নিক্ষেপ করেছিল। যাদের এক একটি-র মূল্যই ৫৬ লক্ষ থেকে ৭৩.৫ লক্ষ টাকা।
[আরও পড়ুন: ভারতীয় কমিশনার-কে ডেকে ধমক ইসলামাবাদের, 'মিথ্যা বলছে ভারত', দাবি মেহমুদ কুরেশির ]