শ্রীরামপুর কলেজ থেকে বলিউড হয়ে দিল্লির মন্ত্রিত্ব! বাবুল সুপ্রিয়র জীবন সফর একনজরে
হুগলির চকবাজার এলাকায় পৌঁছলেই শোনা যায়, বড়াল বাড়ির বিখ্যাত দুর্গাপুজোর কাহিনি। হুগলি-চুঁচুড়া অঞ্চলের অন্যতম প্রসিদ্ধ বড়াল বাড়ির কয়েকশো বছরের পুরনো দুর্গা প্রতিমার পুজো।
হুগলির চকবাজার এলাকায় পৌঁছলেই শোনা যায়, বড়াল বাড়ির বিখ্যাত দুর্গাপুজোর কাহিনি। হুগলি-চুঁচুড়া অঞ্চলের অন্যতম প্রসিদ্ধ বড়াল বাড়ির কয়েকশো বছরের পুরনো দুর্গা প্রতিমার পুজো। এই বাড়িরই সন্তান বাবুল সুপ্রিয়। যাঁর আসল নাম সুপ্রিয় বড়াল। আভিজাত্যপূর্ণ বাঙালি বাড়িতে বেড়ে ওঠা বাবুল সুপ্রিয় এখন দিল্লির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। একনজরে দেখে নেওয়া যাক হুগলি থেকে দিল্লি পর্যন্ত বাবুলের জীবন সফর।
আসানসোলের লড়াই
আসানসোলে ২০১৯ সালের লড়াই রীতিমতো কঠিন ছিল বাবুল সুপ্রিয়োর কাছে। আসানসোলের মাটিতে বাবুলকে কুপোকাত করতে ব্যাপক চেষ্টা করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। মুনমুন সেন তাঁর বিপক্ষে দাঁড়ালেও , মূলত আসানসোলে বাবুলের বিরুদ্ধে লড়াইতে নেমেছিলেন এলাকার মেয়র জিতেন তিওয়ারি।জেলা জুড়ে দীর্ঘ সংঘর্ষ, লড়াইয়ের পর মুনমুনকে এর লাখেরও বেশি ভোটে হারিয়ে দিয়ে নিজের গড় ধরে রাখেন বিজেপির এই সাংসদ।
ফ্ল্যাশব্যাক
এই ঘটনা ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের খানিক আগের। শোনা যায়, একই ফ্লাইটে যাচ্ছিলেন বাবলু সুপ্রিয় ও যোগগুরু রামদেব। তখনই বাবুলকে বিজেপিতে যোগ দানের কথা বলেন যোগগুরু। এরপর যেটা হয়েছে তা সবারই জানা। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে আসানসোল আসন থেকে প্রথমবার নির্বাচিত হন বাবুল সুপ্রিয়।
শুরুর কাহিনি
সুনীল চন্দ্র বড়াল ও সুমিত্রা বড়ালের সন্তান বাবুলের বেড়ে ওঠা হুগলির উত্তরপাড়ায় । ছোটবেলায় 'ডনবসকো' স্কুলে পড়াশোনার পাঠ শেষ করতেই , শ্রীরামপুর কলেজে কমার্স বিভাগে পড়াশোনা শুরু করনে বাবুল। এই সময়টাতেই আরও বেশি করে সঙ্গীত নিয়ে কেরিয়ার গড়ার কথা ভাবতে থাকেন ধ্রুপদী সঙ্গীতের ছাত্র বাবুল।
'কহো না প্যায়ার হ্যায়'
পড়াশোনার জীবন শেষ হতেই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্য়াঙ্কে বেশ কয়েকদিন কাজ করেন বাবুল। এরপর সঙ্গীতই হয়ে ওঠে তাঁর ধ্যান -জ্ঞান। ১৯৯২ সালে বলিউডে স্বপ্নের কেরিয়াল গড়তে বাবুল পাড়ি দেন মুম্বইতে। সেখানে একাধিক শো -তে লাইভ পারফরম্যান্স করার সুযোগ পেলেও ফিল্মে প্লেব্যাকের সুযোগ কিছুতেই পাচ্ছিলেন না বাবুল। লড়াই কিন্তু ছাড়েননি তিনি। এরপর ২০০০ সাল। সেই বছর হৃতিকের বলিউড ডেব্যুতে ফ্যান ফলোইং এর বিস্ফোরণ ঘটে যায়! 'কহো না প্যায়ার হ্যায়' ছবির হাত ধরে হৃতিক লাইমলাইট পেলেও বাবুলের প্লেব্য়াক পেয়েছিল 'লাইফলাইন'।
ব্যক্তিগত জীবন
শোনা যায়, টোরন্টোতে শাহরুখের একটি শো চলাকালীন বাবুলের সঙ্গে আলাপ হয় রিয়ার। ১৯৯৫ সালে তাঁর সঙ্গেই বিয়ে হয় বাবুলের। তাঁদের সন্তান শর্মিলীও সঙ্গীত নিয়েই কেরিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখে। তবে বাবুলের এই দাম্পত্য জীবনের ইতি ঘটে ২০১৫ সালে। এরপরই তিনি ২০১৬ সালে বিয়ে করেন রচনা শর্মাকে। একসময়ের এয়ারহোস্টেস রচনা ও বাবুলের এক কন্য়া সন্তান রয়েছে।
মুম্বইয়ের গানের জগত থেকে দিল্লির মন্ত্রিত্ব
আসানসোল থেকে প্রথমবার সাংসদ হয়েই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়ে যান বাবুল। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। বিজেপি তাঁর ওপর আস্থা রেখেই ফের আসানসোলের টিকিট দেয় বাবুলকে। আর ২০১৯ লোকসভায় আসানসোল জিতে ,তা ফের একবার পদ্মশিবিরকে উপহার দেন বাবুল সুপ্রিয়। আর এবার ফের একবার মোদী মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পেলেন বাবুল।