ফিরে দেখা ২০১৯ : কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ আইন এবছরে পাশ হল জেনে নিন
শেষ হতে চলল ২০১৯। কিন্তু এই ২০১৯ এর শেষের দিকেই যেমন সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে একের পর এক ঐতিহাসিক রায়, ঠিক তেমনই বিজেপি নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠের জোরে সংসদের দুই কক্ষ থেকেই পাস করিয়ে নেয় একের পর এক ঐতিহাসিক আইন।

তিন তালাক আইন
২০১৭ সালের অগাস্ট মাসে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ তাৎক্ষণিক ভাবে তিন তালাককে নিষিদ্ধ হিসাবে ঘোষণা করেন। এ বছরের জুলাই মাসে সংসদে পাশ হয়েছে মুসলিম মহিলা সুরক্ষা বিল, ২০১৯। এই আইন বলে তিন তালাক এবার থেকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধরা প্রত্যাহার
২০১৯ এর ৫ই আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীর থেকে বিলোপ করা হয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা। ১৪৪ ধারা জারি করে বন্ধ করে দেওয়া হয় সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা। নিরাপত্তা ব্যবস্থা দ্বিগুণ করে দিয়ে কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও সহ ৫০০০ এর বেশি জনকে আটক করে কাশ্মীর থেকে বাতিল করা হয় সংবিধানের ৩৭০ ধরা। গৃহবন্দি করে রাখা হয় একাধিক বিরোধী নেতাদের।

বেআইনি ক্রিয়াকলাপ প্রতিরোধ আইন, ২০১৯ বা ইউএপিএ আইন
চলতি বছরের ৮ই জুলাই এই বিলটি সংসদে উত্থাপিত করা হয়। তারপর ১৫ই জুলাই সেটি লোকসভায় এবং ১৭ই জুলাই রাজ্যসভায় পাস হয়। এই আইন মূলত জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ সহ প্রশাসনের হাত শক্ত করেছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। বর্তমান ইউএপিএ আইন অনুযায়ী তদন্তকারী অফিসারকে এই মামলায় কোথাও তল্লাশি চালানো বা কিছু বাজেয়াপ্ত করার আগে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলের অনুমতি নিতে হতো। প্রস্তাবিত সংশোধনী বিল অনুযায়ী, তদন্তকারী যদি এনআইএ-র অফিসার হন, তাহলে এই অনুমতি এনআইএ-র ডিরেক্টর জেনারেলের থেকে নিলেই হবে।

ভারতে নতুন ট্রাফিক আইন এবং জরিমানা, ২০১৯
মোটর ভেহিকেল (সংশোধনী) আইন ২০১৯, ১লা সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। দেশ জুড়ে সাধারণ যে সব ট্রাফিক আইন লঙ্ঘিত হয়ে থাকে, এই আইনের মাধ্যমে তা আরও করা করেছে কেন্দ্রের। এই আইনের মাধ্যমে কেও মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালালে ১০,০০০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। যেখানে এই জরিমানার পরিমাণ আগে ছিল ২০০০ টাকা। বেপরোয়া গাড়ি চালানোর জন্য জরিমানা ১০০০ থেকে বেরিয়ে ৫০০০ টাকা করা হয়।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ২০১৯
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল লোকসভায় বিনা বাধায় পাস হওয়ার পর তা রাজ্যসভাতেও পাস হয়েছে সম্প্রতি। আইন অনুসারে, হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সী এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকেরা যারা তাদের ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে ৩১শে ডিসেম্বর, ২০১৪ এর আগে ভারতে এসেছেন তাদের অবৈধ অভিবাসী হিসাবে বিবেচনা করা হবে না এবং তাদের প্রত্যেককে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
আইনটিতে আরও বলা হয়েছে যে, অমুসলিম শরণার্থীরা পাঁচ বছরের বেশি সময় ভারতে থাকলেই তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। যদিও এই আইনের পর উত্তাল হয়েছে গোটা দেশ। আইনের বিরোধিতায় সরব হয়েছে সমস্ত বিরোধীরা।