অস্ত্রোপচারের পর ইমান আহমেদের শারীরিক অবস্থা আরও সঙ্কটজনক দাবি বোনের, অভিযোগ অস্বীকার চিকিৎসকের
অস্ত্রোপচারের পর থেকে বিশাল পরিমাণ ওজন কমেছে ইমান আহমেদের, দাবি মুম্বইয়ের চিকিৎসকের। যদিও চিকিৎসকের সঙ্গে সহমত নন ইমানের বোন শাইমা সলিম। বরং চিকিৎসকের বিরুদ্ধে 'মিথ্যা দাবির' অভিযোগ এনেছেন সাইমা।
মুম্বই, ২৫ এপ্রিল : বিশ্বের সবচেয়ে "ভারি" মহিলা ইমান আহমেদকে চিকিৎসার জন্য মিশর থেকে আনা হয়েছে মুম্বইতে। সেখানে চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছেন ইমান। অস্ত্রোপচারের পর থেকে বিশাল পরিমাণ ওজন কমেছে তাঁর, দাবি মুম্বইয়ের হাসপাতাল ও চিকিৎসকের। যদিও চিকিৎসকের সঙ্গে সহমত নন ইমানের বোন শাইমা সলিম। বরং চিকিৎসকের বিরুদ্ধে 'মিথ্যা দাবির' অভিযোগ এনেছেন শাইমা।
বিশ্বের সবচেয়ে ভারি মহিলা ইমান আহমেদ ২ মাসে ২৪২ কেজি ওজন কমিয়েছেন
ডাঃ মুফজ্জল লাকড়ওয়ালা জানিয়েছিলেন ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এখনও পর্যন্ত ৩২৭ কেজি কমেছে ইমানের। নিজে থেকে তিনি উঠে বসতে পারছেন। এবং তাঁর শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আগের চেয়ে ভাল করে কাজ করছে। যেভাবে চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন ইমান তাতে উচ্ছ্বসিত চিকিৎসকরা। কিন্তু শাইমার দাবি, মিথ্যা দাবি করছেন চিকিৎসকরা। ইমানের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বন্ধ করতে ইমানের উপর কড়া ডোজের ওযুধ দেওয়া হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রের তরফে মনে করা হচ্ছে, মিশরে চিকিৎসা পরিষেবার পরিকাঠামো উন্নত নয়। তাই ইমানের পরিহার চাইছে যাতে ইমানকে এই হাসপাতালে বেশিদিন রাখা যায়। আর সেই কারণেই এইসব অভিযোগ করছেন সাইমা।
সাইফি হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে ইতিমধ্যে ইমানকে মিশর থেকে ভারতে আনাতে, তাঁর চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের ২ কোটি টাককা এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে। আলাদাভাবে কিছু টাকা অনুদান হিসাবে মিলেছে সারা বিশ্বের মানুষের কাছ থেকে।
যেখানে হাসপাতালের তরফে ছবি প্রচার করা হয়েছে যেখানে স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে আগের থেকে অনেক ওজন কমেছে ইমানের। সে বসে টিভি দেখছে, গান শুনছে। কিনন্তু ইমানের বোন সাইমার দাবি, ইমানের শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। ১০ দিন আগে ইমানের থ্রম্বোসিস হয়। এখানে আসার পর এই নিয়ে দুবার এই একই জিনিস হল ইমানের সঙ্গে।
ইমানের পরিবারের তোলা অভিযোগের কারণে স্বভাবতই হতাশ ডাঃ লাকড়াওয়ালা। তিনি বলেন, "কেউ ইমানের চিকিৎসা করতে রাজি ছিল না। এখন যখন ইমানের এতটা ওজন কমেছে তখন ওর পরিবার আমাদের মানবিকতার প্রচেষ্টা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন।"
শাইমার অভিযোগ "এই হাসপাতালে ইমানের চিকিৎসা করার পরিকাঠামোই নেই। এখানকার চিকিৎসকরা শুধু কাজ দেখাতে চান ও মিডিয়ার প্রচারে আসতে চান। ২৬০ থেকে ৩০০ কেজি ওজন কমানোর যে দাবি করা হচ্ছে তা পুরোপুরি মিথ্যা। ইমান গত দেড় মাস ধরে সঙ্কটজনক। ইমানের মুখ ও হাত নীলচে হয়ে গিয়েছে।"
ডাঃ লাকড়াওয়ালার কথায়, "ইমান চিকিৎসায় সাড়া দিলেও ওর পরিবারের তরফে সহযোগিতা করা হচ্ছে না। ইমান ওজন কমতে শুরু করেছে। তার পরিবারের দাবি এখনও ওকে হাঁটাতে হবে তা এখনও সম্ভব নয়। ইমানকে রাইস টিউব দিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে। কিন্তু ওর বোন জোর করে মুখ দিয়ে খাওয়াতে গেলে সমস্যা হয়। এখনও গলা দিয়ে তরল খাবারও খেতে পারছে না ইমান।"
তবে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, "তবে ইমানের পরিবারের তরফে যতই অভিযোগ করা হোক না কেন আমরা আমাদের কাজ করহ। তবে এই অভিযোগ বেদনাদায়ক। কারণ ডিসেম্বরের শেষ দিন থেকে বহু চিকিৎসক, কর্মী নিজের একশো শতাংশ দিয়ে ইমানকে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করছে। কিন্তু তার পরেও যদি এই ধরণের অভিযোগ তোলা হয় সত্যিই খারাপ লাগে। তবে তা বলে আমরা নিজেদের কর্তব্য থেকে পিছোব না।"