অপহরণ করে ধর্ষণ, চণ্ডীগড়ে বিক্রির পরিকল্পনা দিল্লির তিন কিশোরীকে, ধৃত ৪
গত ৬ অগাস্ট দিল্লির রোহিনী এলাকায় তিন কিশোরীকে অপহরণ করে, তাদের মাদকাসক্ত করার পর ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে। দিল্লি পুলিশ এই ঘটনায় গত ৮ অগাস্ট ২ জন মহিলা সহ চারজনকে পুলিশ ধর্ষণের জায়গা থেকে গ্রেফতার করেছে। তবে মূল অভিযুক্ত, যে কিশোরীদের লোভ দেখিয়ে রোহিনী এলাকার ওই ঘরে নিয়ে গিয়েছিল, সে পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতার অভিযুক্তরা
গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তরা হল বাঙালি লাল শর্মা (৪৫), রুকসানা (৪০), সন্দীপ (৩৬) ও জ্যোতি (১৯)। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধর্ষণ, পাচার, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে ধারা ও পকসো আইনে মামলা দায়ের হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা কিশোরীদের চণ্ডীগড়ে বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু কিশোরীরা পালিয়ে আসতে সফল হয় এবং পরে ৮ অগাস্ট পুলিশ তাদের করোল বাগ থেকে উদ্ধার করে। ৬ অগাস্ট এই কিশোরী তিন মেয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পরই পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তিন কিশোরীর মধ্যে এক কিশোরীর বাবা ডিফেন্স কলোনীর পুলিশের কাছে গিয়ে নিখোঁজ অভিযোগ দায়ের করে। ২দিন পর করোল বাগ থেকে তিন নিখোঁজ মেয়েকে পাওয়া যায়।
একই স্কুলের তিন কিশোরী নিখোঁজ
ডিসিপি (দক্ষিণ) বিনিতা মেরি জাইকার এ প্রসঙ্গে বলেন, 'একই স্কুলের তিন কিশোরী নিখোঁজ হয়ে যায়। ওই এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। আমরা এরপর জানতে পারি যে ওই তিনজন কিশোরীকে করোলা বাগ এলাকায় দেখা গিয়েছে। তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তিনজনকেই যৌন নির্যাতন করা হয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া যায়।' দিল্লি পুলিশের কাছে সব তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে দিল্লি মহিলা কমিশন এবং পুলিশকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে বলেছে।
মুম্বই যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল কিশোরীদের
দিল্লি মহিলা কমিশনারের রিপোর্ট অনুযায়ী ওই তিন কিশোরী মুম্বই যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল এবং দিল্লি রেল স্টেশনে পৌঁছায় তারা, এরপর অভিযুক্তদের মধ্যে একজন তাদের টিকিট বুক করে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তাদের রোহিনী এলাকায় নিয়ে যায় এবং তাদের মাদকাসক্ত করে যৌন নির্যাতন করে।
কীভাবে ঘটেছিল ঘটনা
কিশোরীদের বয়ানের ভিত্তিতে পুলিশ রোহিনী এলাকার ওই বাড়িতে তল্লাশি চালায়। বাঙালি শর্মাকে ওই বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করে এবং তদন্তে উঠে আসে যে মেয়ে পাচারের এটি একটি অংশ। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে যে রুকসানার সঙ্গে এই চক্র চালাতো বাঙালি শর্মা। জাইকার বলেন, 'কিশোরীরা অভিযুক্তদের সনাক্ত করেছে এবং জানিয়েছে যে এদের সঙ্গে পঞ্চম প্রধান অভিযুক্ত তাদের রোহিনীর বাড়িতে নিয়ে যায় এবং তাদের মাদক মেশানো পানীয় দেয়। বর্তমান তথ্য অনুযায়ী একমাত্র প্রধান অভিযুক্তই কিশোরীদের যৌন নির্যাতন করে।'
পলাতক অভিযুক্ত আগেও এ ধরনের কাজ করেছে
পুলিশ জানিয়েছে প্রথমে তারা কিশোরীদের নিয়ে মেট্রোতে চড়ে এরপর অটোতে করে রোহিনীর বাড়ি পৌঁছায়। এই বাড়িটি প্রধান অভিযুক্তের এবং এখানে আগেও বহু এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণের ঘটনা যখন ঘটছিল সেই সময় দু'জন অভিযুক্ত মহিলা সেখানে উপস্থিত ছিল। তদন্তে জানা গিয়েছে যে সন্দীপ ও শর্মা মেয়েদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কাজ করে।