বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বিতর্কিত অধ্যায়! রাজনৈতিক নেতা ও তাঁদের ভূমিকা
১৯৯২-এর ৬ ডিসেম্বর। বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়েছিল। সেই সময় কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিল নরসীমা রাওয়ের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার। অন্যদিকে উত্তর প্রদেশে ক্ষমতায় ছিল কল্যান সিং-এর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। সেই সময় বিতর্কিত বাবরি মসজিদ নিয়ে নানা ভূমিকা পালন করেছিলেন রাজনৈতিক নেতারা। সেই সময়কার নেতাদের ভূমিকা একনজরে।

লালকৃষ্ণ আডবাণী( তৎকালীন বিজেপি সভাপতি)
১৯৮৪-তে ২ টি আসন তেকে ১৯৮৯ সালের নির্বাচনে ৮০ আসনে জয় পায় বিজেপি। অন্যদিকে ১৯৮৯ থেকে বিজেপির সভাপতি এলকে আাডবাণী। অযোধ্যায় রামমন্দির গড়ার দাবি নিয়ে তিনি গুজরাতের সোমনাথ থেকে রথযাত্রা বের করেন। আডবাণীকে থামিয়ে দেন তৎকালীন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব। ১৯৯১-এর নির্বাচনে লোকসভায় বিজেপি সদস্য সংখ্যা ১০০ পার হয়ে যায়। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর, যেদিন অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয় সেদিন, অযোধ্যায় উপস্থিত চিলেন আডবাণী-সব বিজেপির অন্য নেতারা। করসেবকদের উদ্দেশে তারা ভাষণ দিয়েছিলেন।

কল্যাণ সিং ( তৎকালীন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী, বর্তমানে রাজস্থানের রাজ্যপাল)
তৎকালীন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং-এর দায়িত্ব ছিল বাবরি মসজিদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। কিন্তু তা হয়নি। লিখিত প্রতিশ্রুতি থেকে বিধানসভায় বক্তব্য সবেতেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া এফিডেভিটে তিনি প্রতীকী কর সেবার কথা বলেছিলেন। কিন্তু কোনও প্রতিশ্রুতিই রক্ষা হয়নি। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর তিনি ইস্তফা দেন। উত্তর প্রদেশে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়। এরপর ১৯৯৭ থেকে তিনি ফের উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ২ বছরের জন্য। মাঝে বিজেপি ছেড়ে ছিলেন ২ বার। বর্তমানে রাজস্থানের রাজ্যপালের পদে রয়েছেন তিনি।

পিভি নরসীমা রাও( তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী, ২০০৪ সালে প্রয়াত)
তিনি বাবরি ধ্বংস বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিলেন। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের জন্য অনেকে তাঁকেই দায়ী করে থাকেন। কেননা তাঁর সামনে বাবরি ধ্বংসের আগে উত্তর প্রদেশে রাষ্ট্রপতি জারি করার মতো সুযোগ থাকলেও, তিনি তার করেননি। মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং-এর কথা বিশ্বাস করেছিলেন। তিনি ছিলেন ভারতের নবম প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সময়েই দেশে অর্থনৈতিক সংস্কারে কাজ শুরু হয়েছিল।

লালু যাদব( তৎকালীন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী)
১৯৯০-এ আডবাণীর রথযাত্রাকে থামিয়ে ছিলেন বিহারে। দিনটি ছিল ২৩ অক্টোবর। সমস্তিপুরে আডবাণীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে। বর্তমানে বিবিন্ন কেলেঙ্কারিতে তাঁকে জেলবন্দি হয়ে থাকতে হচ্ছে।

উমা ভারতী ( তৎকালীন বিজেপি নেতা, বর্তমানে মন্ত্রী)
মূলত রাম জন্মভূমি আন্দোলন থেকে উঠে এসেছিলেন উমা ভারতী। আর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় যে কয়েকজন নেতা নেত্রী সেখানে উপস্থিত ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন উমা। বাবরি মসজিদ ধ্বংস নিয়ে গঠিত লিবারহান কমিশনও বাবরি ধ্বংসে তাঁর ইন্ধনের ইঙ্গিত করেছিল।

অশোক সিংঘল( তৎকালীন বিশ্বহিন্দু পরিষদের প্রধান, ২০১৫-তে প্রয়াত)
রাম মন্দির আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা বলা হয়ে থাকে তাঁকে। ৮০ দশকে মন্দির নিয়ে প্রচারের আলোয় আাসেন তিনি। আডবাণী এবং বাজপেয়ীর কাছের হিসেবে পরিচিত সিংঘল ১৯৯২-এর ৬ ডিসেম্বর বাবরি ধ্বংসের জায়গায় হাজির ছিলেন।