ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারীর দলে আথিরা! আমেরিকায় প্রশিক্ষণের সুযোগ কেরলের তরুণীর
ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারীর দলে আথিরা! আমেরিকায় প্রশিক্ষণের সুযোগ কেরলের তরুণীর
কানাডা ভিত্তিক ভারতীয় আথিরা প্রীথারানি আমেরিকার ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিইট অফ অ্যাস্ট্রোনটিক্যাল সায়েন্সের মহাকাশচারীর প্রশিক্ষণের বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। এই প্রশিক্ষণের পরেই আথিরা কল্পনা চাওলা বা সুনিতা উইলিয়ামসের মতো ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারীর দলে নাম লেখাতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
মহাকাশচারীর পথে আথিরা
২৪ বছরের এই তরুণীর মহাকাশযানের একটি বিশেষত্ব রয়েছে। সেখানে ভারতের জাতীয় পতাকার তিনটি রঙ থাকবে বলে জানা গিয়েছে। কানাডা থেকে অথিরা প্রীথারানি বললেন, 'যদিও আমি কানাডায় থাকি। কিন্তু ভারতের নাগরিক হিসেবে মহাকাশচারী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির জন্য আবেদন করেছি। আমেরিকাতে আমি একজন ভারতীয় হিসেবেই মহাকাশচারীর প্রশিক্ষণ নেব। আমার প্রশিক্ষণের জন্য যে বিমান রয়েছে, তাতে ভারতের গর্বের তিন রঙ থাকবে।' জানা গিয়েছে আথিরাকে আইআইএএস -এর নেতৃত্বে PoSSUM প্রোজেক্টের অধীনে একটি অ্যারোনোমি গবেষণা প্রোগ্রামে আথিরাকে নির্বাচিত করা হয়েছে।
ফাইটার জেটের প্রশিক্ষণে আগ্রহী
PoSSUM প্রোজেক্টে নির্বাচিত হয়ে খুশি অথিরা। তিনি বলেছেন, PoSSUM প্রোজেক্ট সাধারণ মানুষকে মহাকাশচারী হওয়ার প্রশিক্ষণ দেয়। শুধু মহাকাশচারী নয়, এর সঙ্গে সঙ্গে নানা গবেষণাও করা যেতে পারে। আমেরিকার ফ্লোরিডা টেক মহাকাশচারীর প্রশিক্ষণে তিনি নিজেকে একজন ফাইটার জেটের পাইলট হিসেবে গড়ে তুলতে চান। এই সুযোগের জন্য তাঁকে দুই বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল। তিনি মনে করছেন, স্কুবা ড্রাইভিং ও ফাইটার জেট চালানোর অভিজ্ঞতা একজন মহাকাশচারীর প্রশিক্ষণকে আরও মজবুত করবে।
ছোটবেলা থেকেই আগ্রহ মহাকাশ বিজ্ঞানে
অথিরা জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকে মহাকাশ নিয়ে বিশেষ আগ্রহ ছিল। সেই আগ্রহের কারণেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি গোষ্ঠী আস্ট্রো-র অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। তিনি জানিয়েছেন, মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি কম্পিউটার পোগ্রামিং অ্যাসাইমেন্ট থেকে উপার্জনের জন্য বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসেন। সেই সময় তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল, জীবন ধারনের জন্য, নিজের খরচ নিজেই চালাবেন। এর এক বছর পর রোবটিক্স সায়েন্স পড়ার জন্য কানাডায় চলে যান। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই তিনি তাঁর পুরনো ভালোবাসা মহাকাশ বিজ্ঞানের কাছে ধরা দেন। পৃথিবীর কক্ষপথ, উপগ্রহ, আন্তঃগ্রহ অনুসন্ধান নিয়ে তিনি আগ্রহী হয়ে পড়েন। তিনি ও তাঁর বন্ধু গোকুল কানাডায় একটি সংস্থা তৈরি করেছেন। সেখান থেকে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে।
মহাকাশ বিজ্ঞান গবেষণায় আথিরার উদ্যোগ
অথিরা জানিয়েছেন, মহাকাশে ধ্বংসাবেশেষের ম্যাপ তৈরি করার উপায় খুঁজছে তাঁর সংস্থা। এই বিষয়ে গবেষণাও করা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, আমাদের সংস্থার প্রধান উদ্দেশ্য হব স্পেস ট্যাগ ডিজাইন, উৎপাদন এবং তা মহাকাশে পাঠানো। তিনি বলেছেন, কানাডা ও আফ্রিকার মহাকাশ নিয়ে গবেষণারত বেশ কয়েকটি সংস্থা তাঁদের কাজে আগ্রহ দেখিয়েছে। তিনি দেশের মহাকাশ নিয়ে আগ্রহী পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে বলেন, হঠাৎ করে মনে হতেই পারে, মহাকাশ বিজ্ঞান খুব কঠিন। কিন্তু তা নয়। মহাকাশ বিজ্ঞান একটা শৃঙ্খলায় আবদ্ধ। অনেকটা অংসশ অঙ্ক রয়েছে। অঙ্কের মতো সমাধান করতে করতে এগোলে মহাকাশ বিজ্ঞানের অনেক কিছুর হদিশ পাওয়া যাবে।