দেশের প্রধান বিচারপতি পদে বারবার ব্রাহ্মণরাই কেন, প্রশ্ন তুললেন কেরলের CPIM সাংসদ
রাজ্যসভায় তুলকালাম ফেলে দিলেন কেরলের সিপিআইএম সাংসদ জন ব্রিটাস। নিজের প্রথম বক্তব্যেই চাপে ফেললেন সরকারপক্ষকে। ভারতীয় আইনব্যবস্থা এবং তার নিয়োগ নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুললেন জন।

লক্ষ্য ব্রাহ্মণরা?
শীতকালীন অধিবেশনে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের চাকরি এবং মাইনে সংক্রান্ত সংশোধনী বিল আনতে চলেছে সরকার। এই প্রসঙ্গেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে বেশ কিছু বিষয়ে আলোকপাত করেন জন। ভারতীয় আইনব্যবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে ব্রাহ্মণদের বাড়বাড়ন্ত দেখতে পেয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ভারতের মোট ৪৭ জন প্রধান বিচারপতির ১৪ জনই ব্রাহ্মণ।

কী বললেন জন?
তিনি বলেন, 'স্বাধীনতা উত্তর ভারতবর্ষে ৪৭ জন প্রধান বিচারপতির মধ্যে ১৪ জন ব্রাহ্মণ৷ ১৯৫০ থেকে ১৯৭০ অবধি সুপ্রিম কোর্টে সর্বোচ্চ ১৪ জন বিচারপতি ছিলেন। তাদের মধ্যে ১১জনই ব্রাহ্মণ ছিলেন৷ এই সভাঘর হয়ত চমকে উঠতে পারে, তবে ১৯৮০ অবধি আমাদের দেশে কোনও বিচারপতি এসসি অথবা ওবিসি জাতির ছিলেন না।' বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে সরকারকে আক্রমণও করেন ব্রিটাস। ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাপয়েনমেন্টস কমিশন নিয়ে সরকার চুপ কেন বলে প্রশ্ন করেন তিনি।

ব্রিটাস আরও বলেন!
ব্রিটাস বলেন, 'গোটা বিশ্বে এমন রহস্যময় বিচারপতি নিয়োগ ব্যবস্থা নেই। একমাত্র ভারতেই এটা সম্ভব। আমাদের আইনমন্ত্রী এই ঘটনার নীরব দর্শক মাত্র। বিচারব্যবস্থার স্বতন্ত্রতা আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও তিনি এই বিষয়ে সহানুভূতিশীল নন। যদি ভবিষ্যতে তিনি এই বিষয়ে সদর্থক মন্তব্য না করেন, তাহলে বুঝব বর্তমান সরকার এই পছন্দমাফিক বিচারপতি নিয়োগকে সমর্থন করছে'।

প্রসঙ্গ অখিলেশ কুরেশি!
উদাহরণ হিসেবে বিচারপতি অখিল কুরেশির কথা বলতে শোনা যায় তাঁকে। তিনি বলেন, ' আমি নাম নিতে চাই না। তবে আমরা কি বিচারপতি অখিল কুরেশির সম্পর্কে জানতে পারি? কেন তাঁকে ইচ্ছাকৃতভাবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির পদে উত্তীর্ণ করা হল না? তাঁর কী দোষ ছিল? তিনি এক প্রভাবশালীকে জেলে পাঠিয়েছিলেন বলেই কি এরূপ বিচার? উল্লেখ্য, ২০১০ সালে সোহরাবুদ্দিন শেখ এনকাউন্টার কেসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন অখিল)
ব্রিটাস আরও বলেন, ' আমি নিশ্চিত আমাদের সংবিধান প্রণেতা এবং দেশের প্রথম আইনমন্ত্রী বিআর আম্বেদকর আইনব্যবস্থার এই হাল দেখে নিজের কবরে বিলাপ করছেন'।
