লকডাউনে আস্ত একটি বিমান তৈরি করে ফেললেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইঞ্জিনিয়ার, দু’বছর পর মিলল ওড়ার অনুমতি
লকডাউনে আস্ত একটি বিমান তৈরি করে ফেললেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইঞ্জিনিয়ার, দু’বছর পর মিলল ওড়ার অনুমতি
২০২০ সালে করোনা মহামারী বিশ্বের বুকে থাবা বসায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ঘরবন্দি মানুষ যখন ডালগোনা কফি করতে মজেছিলেন কিংবা ওয়েব সিরিজ বা সিনেমা দেখতে ব্যবস্ত ছিলেন, সেই সময় ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটেনের এই ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করে ফেললেন আস্ত এক বিমান। সেই বিমানে চারজন যাত্রী সওয়ারী হতে পারবেন। বিমান তৈরির দুই বছর পর তিনি আকাশে ওড়ানোক অনুমতি পান। ইতিমধ্যে এই বিমানে করে তিনি একাধিক দেশে পাড়ি দিয়েছেন।
বিমান তৈরির পরিকল্পনা মাথায় এল কীভাবে
কেরলের আলাপ্পুঝারের বাসিন্দা অশোক থামরাক্ষণ। তিনি আরএসপি নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক এভি থামরাশনের ছেলে অশোক। তিনি ২০০৬ সালে এনএসএস কলেজে ইঞ্জিনিয়ামরিং নিয়ে পড়াশোনা করেন। ফোর্ডের চাকরি নিয়ে তিনি ব্রিটেনে চলে যান। সেখানেই স্থায়ীভাবে বাস করতে শুরু করেন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেন, 'ব্রিটেনে স্থায়ীভাবে বাস শুরু করার পর থেকে আমি বিমান কেনার বিষয়ে আগ্রহী হয়ে পড়ি। ব্রিটেনে গিয়ে বিমান চালানো শিখি। বিমান চালানোর লাইসেন্স পাওয়ার পরেই জেদটা বেড়ে গেল। তখন মনে হয়েছিল, যেভাবেই হোক বিমান কিনতে হবে। এই বিষয়ে খোঁজ খবর করতে শুরু করি। বুঝতে পারি একটি ছোট বিমান কিনতে কম করে পাঁচ থেকে ছয় কোটি প্রয়োজন হবে। ব্রিটেনের অনেকে ছোট ছোট বিমান তৈরি করেছে। সেই বিমানের যন্ত্রাংশ অনেক সহজলভ্য। তারপরেই আমি নিজে বিমান তৈরির সিদ্ধান্ত নিই।' তিনি জানান, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বিমানের যন্ত্রাংশ, অস্ট্রিয়া থেকে ইঞ্জিন এবং আমেরিকা থেকে অ্যাভিওনিক্স যন্ত্রপাতি কিনেছেন। এরপরেই ২০২০ সালে ব্রিটেনে নিজের বাড়িতে একটি ওয়ার্কশপ তৈরি করেন। এপ্রিল মাস থেকে বিমান তৈরির কাজ শুরু করেন।
লকডাউনে তৈরি করে ফেলেন বিমান
অশোক জানিয়ছেন, করোনা মহামারীর জেরে তাঁর সংস্থার কাজকর্ম সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে বিমান তৈরির কাজ অনেকটা সহজ হয়েছে। তিনি বলেন প্রথমে আমি দুই আসন বিশিষ্ট একটি বিমান তৈরির পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে পারিবারিক ভ্রমণে যেতে চারটি আসনের প্রয়োজন। পরে নিজের সিদ্ধান্ত বদলাই। চার আসনের বিমান তৈরি করি। ব্রিটেমনের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বা ইউকে অ্যাভিয়েশনের তরফে তাঁর বিমান তৈরির প্রতিটি পর্যায় পর্যবেক্ষণ করেছে। বর্তমানে তাঁকে তাঁর তৈরি বিমান চালানোর অনুমতি দিয়েছে।
নিজের বিমানেই বিদেশে পাড়ি
অশোক
জানান,
প্রায়
তিন
মাস
তাঁর
বিমান
বিমানটাকে
ওড়ানো
হয়।
তারপরেই
ইউকে
অ্যাভিয়েশনের
পক্ষ
থেকে
তাঁর
বিমানটিকে
ওড়ার
অনুমতি
দিয়েছে।
অশোক
চলতি
বছর
ফেব্রুয়ারিতে
এই
বিমানটি
ওড়ানোর
অনুমতি
পেয়েছেন।
এই
বিমানটি
তৈরি
করতে
প্রায়
১.৮
কোটি
টাকা
খরচ
করা
হয়েছে।
১,৫০০
ঘণ্টা
লেগেছে
এই
বিমানটি
তৈরি
করতে।
বিমানটির
ওজন
প্রায়
৫২০
কেজি।
বিমানটির
৯৫০
কেজি
ওজন
বহন
করতে
পারবে
বলে
অশোক
জানিয়েছেন।
এই
বিমানটি
এক
ঘণ্টায়
প্রায়
২৫০
কিলোমিটার
যেতে
পারে।
তিনি
তাঁর
মেয়ের
নাম
(দিয়া)
অনুসারে
বিমানের
নাম
দিয়েছেন
জি-দিয়া।
এই
বিমানে
করেই
তিনি
দুই
বন্ধুকে
সঙ্গী
করে
ফ্রান্স,
জার্মানি,
চেক
প্রজাতন্ত্র
সফরে
গিয়েছেন।
বিমানটি
ইতিমধ্যে
৮৬
ঘণ্টা
ওড়ার
রেকর্ড
করেছে।
আগামী
মাসে
তিনি
ব্রিটেনে
ফিরে
আসবেন
বলে
জানা
গিয়েছে।
ছবি সৌ:ফেসবুক