নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিমকোর্টে এবার আবেদন কেরল সরকারের
নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টে মামলা দায়ের করল কেরলের এলডিএফ সরকার। কেরল প্রথম রাজ্য যারা এই পদক্ষেপ নিল। মাত্র তিনদিন আগেই গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে সারা দেশে সিএএ লাগুর ঘোষণা করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। এর মধ্যেই এর বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে গেল কেরল।
সুপ্রিমকোর্টে জমা পড়েছিল ৬০টি পৃথক আবেদন
সংসদে সিএএ পাশ হওয়ার পরেই এই আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিমকোর্টে জমা পড়েছিল ৬০টি পৃথক আবেদন। সেই আবেদনগুলির ভিত্তিতেই আজ এক যৌথ শুনানি হয় সুপ্রিমকোর্টে। তবে ১৮ ডিসেম্বরের সেই শুনানিতে এই আইনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া থেকে বিরত থাকে শীর্ষ আদালত।
কেরল বিধানসভায় পাশ সিএএ বিরোধী রেজলিউশন
আগের বছরের শেষ দিকে কেরল বিধানসভায় পাশ করা হয় সংশোধন আইন বিরোধী রেজলিউশন। সেখানে সিএএ বাতিলের দাবি করা হয়েছিল। নিজেদের মধ্যে মতবিরোধ ভুলে প্রস্তাব পাশ করিয়েছে সিপিএম নেতৃত্বাধীন এলডিএফ এবং বিরোধী কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ। বিধানসভায় একমাত্র বিজেপি সদস্য প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সিএএ নিয়ে প্রতিবাদী রাজ্যগুলিকে বাদ দিয়েই পদ্ধতিতে তারা এগিয়ে নিয়ে যাবে।
অন্য রাজ্যেও এরকম রেজোলিউশন
কেরলের পর তামিলনাড়ুতেও একইভাবে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন বিরোধী রেজলিউশন পেশ করার কথা ভাবে সেরাজ্যের বিরোধী দল ডিএমকে। কংগ্রেস শাসিত পুদুচেরিতেও একইরকম ভাবে সিএএ বিরোধী সিএএ বিরোধী রেজোলিউশন পেশের চিন্তা ভাবনা শুরু হয়।
প্রধান বিচারপতির এজলাসে মামলা
এর আগের মামলাগুলির শুনানি প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চের সামনে হয়। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন বিআর গাভাই এবং সূর্য কান্ত। আবেদনকারীদের মধ্যে আছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ এবং অসমে ক্ষমতাসীন বিজেপির সহযোগী দল অসম গণ পরিষদ।
অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বিরোধ
১২ ডিসেম্বর মধ্যরাতে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরিত হয়ে বিলটি পরিণত হয় আইনে। তবে আইনে পরিণত হলেও এটিকে মানতে নারাজ বিরোধী দলগুলি। পাশাাপশি অনেকগুলি অ-বিজেপি শাসিত রাজ্য ইতিমধ্যে জানিয়েও দিয়েছে তারা এই আইন প্রণোয়ন করবে না। এদিকে রাজনীতির উত্তাপ ছড়িয়েছে রাস্তায় ও দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একাধিক আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে।
কী এই আইন?
নতুন এই আইনের শর্ত, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ বা তার আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে যে সমস্ত অমুসলিম শরণার্থীরা ভারতে এসেছেন, তাঁদের প্রত্যেককেই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। অর্থাৎ, হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, পারসি বা জৈন ধর্মের যেই লোকেরা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে থেকে ভারতে বসবাস করেছেন, তারা ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন। বিলটি গত সপ্তাহের সোমবার ৩১১-৮০ ব্যবধানে পাশ হয়। বুধবার রাজ্যসভায় এটি পাশ হয় ১২৫-৮২ ব্যবধানে।