বন্যার ধ্বংসলীলার মধ্যে উড়ছে গুজব, কেরালায় প্রশাসনের বাড়তি বিপত্তি 'ফেক নিউজ'
গত এক শতাব্দীর মধ্য়ে সবচেয়ে খারাপ বন্যা পরিস্থিতির সম্মুখীন এখন কেরালা। দুঃখজনকভাবে দুরূহ উদ্ধার ও ত্রাণকার্যের মধ্যে রাজ্য প্রশাসনকে জাল খবরের সাথেও মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক বন্যার মুখোমুখি কেরালা। ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা ৩৬৮-তে পৌঁছেছে। কয়েক লক্ষ মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন। এই অবস্থায় যেখানে উদ্ধার ও ত্রাণের কাজ চালানোই দুরূহ হয়ে পড়েছে, সেখানে সরকারকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে আরেক বিপত্তির - ভুয়ো বা জাল খবর।
দুঃখ জনক হলেও এটাই সত্যি। এই ভয়ানক বিপর্যয়ের সময়ে যখন বেশিরভাগ মানুষ যতভাবে পারা যায় বন্যা দুর্গতদের সাহায্য করার চেষ্টা করছেন, কিছু মানুষ সেই সময় গুজব রটাচ্ছেন। কখনও রটানো হচ্ছে কোনও জল ছাড়ার কথা কখনও আবার বলা হচ্ছে বাঁধ ভেঙে পড়ার কথা।
১৮৯৫ সালে তৈরি হয়েছিল কেরালার মুল্লাপেরিয়ার বাঁধ। স্বভাবতই বন্যার সময় এই শতাব্দী প্রাচীন বাঁধটির স্থায়ীত্ব নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে শঙ্কা রয়েছে। সেটিকে কাজে লাগিয়ে রটানো হয়েছে জলের চাপে বাধটির গায়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে সেই খবর। তাতে উপদ্রুত এলাকার মানুশদের মধ্যে রীতিমতো আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
[আরও পড়ুন:কেরালার বন্যা - মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৬৮, কোচি নাভাল এয়ার বেস থেকে উড়বে বাণিজ্যিক বিমান ]
এরপর স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন টুইট করে জানান, মুল্লাপেরিয়ার বাঁধ সংক্রান্ত ওই খবরগুলি জাল। তিনি ভুয়ো খবর ছড়ানো থেকে বাসিন্দাদের বিরত থাকতে বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন গুজবে কান না দিয়ে শুধুমাত্র সরকারি ঘোষণাকে বিশ্বাস করার জন্য। এছাড়া মুখ্য়মন্ত্রীর দপ্তরের টুইটার হ্যান্ডেল, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, মন্ত্রী, জেলা কালেক্টর, কেরালা পুলিশ ও দমকলের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টেও বন্যা পরিস্থিতির প্রতিমুহূর্তের আপডেট থাকছে।
[আরও পড়ুন:বীরসেনানিদের দুঃসাহসিক অভিযান কেরলে, সদ্যোজাতকে উদ্ধারের ভিডিও গায়ে কাঁটা দেয়]
তারপরেও অবশ্য গুজবের কারবারিদের থামানো যায়নি। কেরালার জলসম্পদ মন্তরকের সচিব টিঙ্কু বিসওয়াল-ও মুল্লাপেরিয়ার বাঁধ নিয়ে যাবতীয় গুজবের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। ইদ্দুকি জেলার কালেক্টর জীবন বাবু জানিয়েছেন ভুয়ো খবরের বিষয়টু এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছে যে ভুয়ো খবর যারা তৈরি করছেন ও ছড়াচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার।
সোশ্যাল মিডিয়া ভুয়ো খবরের জেরে গত এক বছরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একের পর এক গণহিংসার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কেরালার এই বছরের বন্যার মতো ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যেও তার থাবা পড়বে তা কেউ ভাবতে পারেননি। কেরালার বিপর্যয়কে আরও কয়েকগুণে বাড়িয়ে তুলছে এই লজ্জাজনক কার্যকলাপ।