ভোট বড় বালাই, নিজেদের 'ধর্ম বিরোধী' তকমা ঝেড়ে ফেলতে মরিয়া সিপিআইএম
বিরোধীদের যাবতীয় 'অভিযোগ' ধুলোতে মেশাতে নিজেদের 'ধর্ম বিরোধী' তকমা ঝেড়ে ফেলতে মরিয়া সিপিআইএম। কেরলের রাজনৈতিক আঙিনায় ক্রমেই বড় ইস্যু হয়ে উঠছে সবরীমালা। এবং মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগকে ভোট বাক্সে প্রতিফলিত করতে উঠে পড়ে লেগেছে কংগ্রেস-বিজেপি। আর বিরোধীদের এই প্রচেষ্টায় জল ঢালতেই এবার আয়াপ্পা ভক্তদের মন গলাতে চাইছে বাম জোট।
ইতিমধ্যেই ময়দানে নেমে পড়েছে কংগ্রেস এবং বিজেপি
সবরীমালা ইস্যুকে কাজে লাগাতে ইতিমধ্যেই ময়দানে নেমে পড়েছে কংগ্রেস এবং বিজেপি। সিপিএম-এর ভোটে থাবা বসাতে ক্রমেই এই ইস্যুতে কেরল সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস-বিজেপি। এদিকে এই ইস্যুতে সব দলকে সঙ্গে নিয়েই কাজ করতে চাইছে সিপিএম। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং সিপিএম-এর সাধারণ সম্পাদক এ বিজয়রাঘবন বলেন, 'সুপ্রিমকোর্টের রায় এলেই এই বিষয়ে সব দলের সঙ্গে বসে আলোচনা করবে সরকার।'
সবরীমালার প্রথা
প্রথা অনুযায়ী রজঃস্বলা মহিলাদের (১০-৫০ বছরের) সবরীমালায় প্রবেশাধিকার ছিল না৷ ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট জানায় এই প্রথা লিঙ্গবৈষম্যকে সমর্থন করে৷ বেআইনি এবং অসাংবিধানিকও৷ সু্প্রিম কোর্ট মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশাধিকার দেয়৷ ২০১৮ সালে সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তা পুনর্বিবেচনার জন্য ৬০টিরও বেশি আবেদন আদালতে জমা পড়ে৷ দাবি করা হয়, ওখানে প্রতিষ্ঠিত দেবতা 'ব্রহ্মচারী', তাই রজঃস্বলা মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া উচিত নয়৷ রায় পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্ট৷
মহিলাদের কেন সবরীমালায় প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে না?
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যর সাংবিধানিক বেঞ্চে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনগুলির শুনানি হয়েছিল। শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'মহিলাদের কেন সবরীমালায় প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে না তা বৃহত্তর বিতর্কের অন্তর্ভুক্ত, যার মধ্যে মুসলিম মহিলাদের মসজিদে ও পার্সি মহিলাদের উপাসনাস্থলে প্রবেশাধিকারের বিষয়টিও রয়েছে।'
সবরীমালা ইস্যুতে বামপন্থীদের মত
এরপর কেরল সরকার সুপ্রিমকোর্টের এই রায়কে সমর্থন জানায়। অপরদিকে বাম সরকারকে চাপে ফেলতে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ জোট এবং বিজেপি জানায়, মন্দিরের পুরাতন প্রথা মেনে চলা উচিত। বিরোধীদের এই চাপের মুখে বামপন্থাতে 'বদল' আনার কথা জানান সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এমভি গোবিন্দম।
মধ্যপন্থার পথে হাঁটতে চাইছে সিপিএম
সিপিএম এখন চাইছে যে এই ইস্যুতে মধ্যপন্থা মেনে এগোতে। নয়ত তাদের আশঙ্কা, বিজেপি হিন্দু ভাবাবেগকে কাজে লাগিয়ে তাদের ভোটে থাবা বসাতে সমর্থ হবে। সিপিএম এখন ধর্ম নিরেপেক্ষতার পথে হেঁটে 'ধর্ম বিরোধী' তকমা ঝেড়ে ফেলতে মরিয়া। সিপিএম-এর অন্দরের খবর, মধ্যযুগীয় এই প্রথা যদি তাত্তিক ভাবে মোকাবিলা করা হয়, তাহলে মানুষের মনে দলের বিষয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে।