করোনা আবহেও প্রতিশ্রুতি পূরণ! দিল্লিতে বেসরকারি স্কুলকে টেক্কা দিল কেজরিওয়ালের সরকারি স্কুল
করোনা আবহে কীভাবে কেজরিওয়াল সরকার পরিচালিত স্কুল ৯৮ শতাংশ মার্কস পেল দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায়? প্রশ্নটা অনেককেই ভাবিয়েছে। এই শুভ লক্ষণের নেপথ্যে যে কঠোর পরিশ্রম রয়েছে তার খোঁজে এখন অনেকেই। ২০১৫ সালের নির্বাচনে যখন কেজরিওয়াল ভোটারদের কাছে নিজের প্রতিশ্রুতির পসরা সাজিয়ে বসছিলেন, তখন শিক্ষার উন্নতির বিষয়টি পসরার একদম উপর দিকে ছিল। এবং সেই মতো কাজ করেই আজ দিল্লির সরকারি স্কুলের মান এতটা উন্নত করতে পেরেছেন তিনি।
এই বছরের পরীক্ষার রেজাল্ট কেজরিওয়ালের জন্যে অনেক কারণেই স্পেশাল। লাগাতার পঞ্চম বছর সরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে পাশের হারের রেকর্ড ভেঙেছে দিল্লির সরকারি স্কুলগুলি। দ্বিতীয়ত করোন আবহে পঠনপাঠন স্তব্ধ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও দিল্লির নামি-দামী প্রাইভেট স্কুলগুলিকে সরকারি স্কুলের এই ভাবে টেক্কা দেওয়ার মানসিকতা ফুঁটে ওঠা।
এই বিষয়ে খুশি হয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও দিল্লির ডেপুটি মখ্যমন্ত্রী তথা শিক্ষামন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া। এই বিষয়ে টুইটারে নিজের সরকারের সদস্যদের পাশাপাশি শিক্ষক ও ছাত্রদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন দুইজনেই। এবং পরবর্তীতে শিক্ষার মান আরও উন্নত করারও বার্তা দিয়ে রেখেছেন তাঁরা।
এই আশাতীত সাফল্যের নেপথ্যে দিল্লি সরকারের কোন নীতিগুলি রয়েছে একনজরে দেখে নেওযা যাক :
- দেশের মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি খরচ করে দিল্লি। বাজেটের ২৫ শতাংশ টাকাই বরাদ্দ থাকে শিক্ষা খাতে।
- ৬ বছরের মধ্যে দুই গুণ করা হয়েছে ক্লাসরুমের সংখ্যা। বর্তমানে দিল্লিতে ৩৭ হাজার ক্লাসরুম আছে। পাঁচ বছর আগে তা ছিল মাত্র ১৭ হাজার।
- বিশ্বমানের ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরি করে তার সাহায্যে শিক্ষার মানের উন্নয়ন ঘটাচ্ছে দিল্লির সরকারি স্কুলগুলি। অত্যাধুনিক ল্যাব ও লাইব্রেরি তৈরি করা হচ্ছে স্কুলে।
- শিক্ষকদের ট্রেনিংয়ের জন্য পাঠানো হচ্ছে কেমব্রিজ, সিঙ্গাপুর, ফিনল্যান্ডের মতো স্থানে।
- শিক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে স্বয়ং কেজরিওয়াল স্কুলে ঘুরে বেরান। এতে শিক্ষক ও ছাত্রদের মনোবল অনেক বেড়ে যায়।
- শিক্ষা ব্যবস্থা কীভাবে তলতে পারে, তার দিক নির্দেশনার জন্য তৈরি কোর টিমকে পরামর্শ দেন অক্সফোর্ডে শিক্ষা নেওয়া অতীশি। বিভিন্ন এনজিওর সাহায্যে এই কোর টিম দিল্লির শিক্ষা ব্যবস্থা বদলে ফেলছেন পুরোপুরি।
- প্যারেন্ট-টিচার্স মিটিংয়ের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। এতে ছাত্রদের মা-বাবারা আরও বেশি করে যোগ দিচ্ছেন এই শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের ক্ষেত্রে।
- প্রাক্তন সেনা কর্মীদের স্কুলের এস্টেট ম্যানেজার হিসাবে নিযুক্ত করা হচ্ছে। এর ফলে স্কুলের প্রিন্সিপাল শুধু মাত্র পড়াশোনার দিকে মনোনিবে করেন। বাকি বিষয় নিয়ে মাথা ঘআমাতে হয় না তাঁকে।
- সকল সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা ট্যাব ব্যবহার করে শিক্ষা দেওযার পদ্ধতি বদলে ফেলেছেন। এই ইনোভেশনের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিবছর আরও বেশি উন্নত স্তরে পৌঁছে যাচ্ছে।