মধুচন্দ্রিমা হঠাৎ তেতো, কংগ্রেসের ওপর খাপ্পা চন্দ্রশেখর রাও
হঠাৎ কেন এমন অবস্থা? আসলে কংগ্রেসের আচরণে বেজায় খাপ্পা হয়েছেন টিআরএস সুপ্রিমো কে চন্দ্রশেখর রাও। কারণ হল দু'টি। প্রথমত, কংগ্রেসের 'আলটপকা' মন্তব্য। দ্বিতীয়ত, টিআরএসের বিদ্রোহী বা বহিষ্কৃত নেতা-কর্মীদের কংগ্রেস ঠাঁই দিচ্ছে।
তেলেঙ্গানা বিল পাশ হওয়ার পর প্রস্তাবিত তেলেঙ্গানা রাজ্য ঘুরে দেখতে এসেছিলেন কংগ্রেসের হেভিওয়েট জয়রাম রমেশ। অন্ধ্রপ্রদেশ ভাগ করে আলাদা রাজ্য গঠনে যে মন্ত্রীগোষ্ঠীকে নিয়োগ করা হয়েছিল, তাতে ছিলেন এই জয়রাম রমেশও। তিনি তেলেঙ্গানা সফরের সময় বলেছিলেন, "রাজ্যভাগ কংগ্রেসের স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে। তবু তেলেঙ্গানার মানুষের দাবির কথা মাথায় রেখে এই ভাগাভাগি করা হয়েছে। তেলেঙ্গানায় এবার সামন্তবাদী প্রভুরা দাপিয়ে বেড়াবে। যথারীতি বৈষম্য থাকবে। আর টিআরএস যদি ক্ষমতায় আসে, তা হলে বিপর্যয় হবে।" এমন কথায় স্বাভাবিকভাবেই চটে লাল হয়ে যান চন্দ্রশেখর রাও।
"আমাদের সম্মান দিক কংগ্রেস"
এখানেই শেষ নয়। টিআরএস থেকে বহিষ্কৃত সাংসদ বিজয়শান্তিকে দলে ঠাঁই দিয়েছে কংগ্রেস। আর এক বিদ্রোহী বিধায়ক অরবিন্দ রেড্ডিকে জামাইআদর করে বরণ করে নিয়েছে কংগ্রেস। এঁরা দু'জনই চন্দ্রশেখর রাওয়ের চোখের বিষ ছিলেন। দু'জনের রাজনীতিক জীবন শেষ করে দিতে সব রকম ব্যবস্থা করে ফেলেছিলেন চন্দ্রশেখর রাও। এই অবস্থায় কংগ্রেস তাঁদের অক্সিজেন দিল। এবার বাইরে থেকে কলকাঠি নেড়ে এরা টিআরএসে ভাঙন ধরাবে বলে আশঙ্কা।
এমন পরিপ্রেক্ষিতে চন্দ্রশেখর রাও জানান, ৩ মার্চ অর্থাৎ সোমবার তিনি দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন। কংগ্রেসের সঙ্গে মিশে যাওয়া বা জোট গড়া, যাই হোক কেন, সিদ্ধান্ত হবে ওইদিন। তিনি বলেছেন, "ওরা (কংগ্রেস) যদি ভালো হয়, তা হলে আমাদের সম্মান দিক। আমরা এক সঙ্গে কাজ করব। আমি নিজের ইচ্ছায় কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। দলে সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। মনে রাখবেন, আমরা তেলেঙ্গানা অর্জন করেছি। মানুষের সহযোগিতা পেলে ছ'-সাত বছরেই স্বপ্নপূরণ হবে।"
এদিকে, টিআরএসের এই যুদ্ধং দেহী মনোভাবে এখন কংগ্রেসের সামনে দু'টি পথ খোলা রইল। হয় সুর নরম করে আলোচনায় বসা, নইলে ছলচাতুরি করে টিআরএসে ভাঙন ধরানো। টিআরএসের সঙ্গে জোট হলে তেলেঙ্গানায় তবুও ভালো ফল করবে কংগ্রেস। সেটা না হলে বিপদ অবশ্যম্ভাবী। তবে টিআরএসে ভাঙন ধরাতে সক্ষম হলে অবশ্য সমীকরণ অন্যদিকে মোড় নেবে তেলেঙ্গানায়।