For Quick Alerts
For Daily Alerts
বিচার পেল আসিফা, কাঠুয়া ধর্ষণকাণ্ডের ঘটনাক্রম এক নজরে
বিচার পেল পটে আসিফা। তবে অনেক দেরিতে। কবরে ঘুমিয়ে থাকা কাটা ছেঁড়া শরীরটার এখন হয়তো কিছই অবশিষ্ট নেই।
বিচার পেল পটে আসিফা। তবে অনেক দেরিতে। কবরে ঘুমিয়ে থাকা কাটা ছেঁড়া শরীরটার এখন হয়তো কিছই অবশিষ্ট নেই। সবটাই মিশে গেছে মাটিতে। বেঁচে থাকতে হয়তো দোষীদের থেকে বেশি কাঁটা ছেঁড়া করা হতো কৈশরের পথে পা বাড়ানোর ছোট্ট মেয়েটি। কারণ গত এক বছর ধরে বিচারের নামে যে পরিমাণ কথা প্রকাশ্য আদালতে তাঁকে বলতে হতো। সেতুলনায় দোষীদের পাঁচ বছরের যাবজ্জীবন বা ৫ বছরের কারাণ্ডের সাজা তুচ্ছ বলেই মনে হতো। কারণটা খুবই স্পষ্ট আমাদের দেশে আইন যে পথে চলে তাতে ধর্ষণকারীর চেয়ে ধর্ষিতাকেই সমাজের কাছে মুখ লুকিয়ে থাকতে। যেন অপরাধ তারই বেশি। বেঁচে থাকলে কাঠুয়ার ৮ বছরের আসিফাকেও দাঁড়াতে হত সেই কঠিন বাস্তবের মুখে।
- ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারির ছিল সেই অভিশপ্ত দিন। কাশ্মীরের কাঠুয়া জেলার ছোট্ট গ্রামের মুসলিম আদিবাসী পরিবারের মেয়ে আসিফা প্রতিদিনের মতো বাড়ির ঘোড়া চড়াতে বেরিয়েছিল। বাড়ির কাছেই একটি ছোট্ট পুকুরে জল খাওয়াতে নিয়ে গিয়েছিল সে।
- ২০১৮ সালের ১২ জানুয়ারি, ঘোড়াটি একাই ফিরে আসে বাড়িতে। মা-বাবার খেয়াল পড়ে মেয়েটি তো ফেরেনি। বাড়ির কাছের হিরানগর থানায় মেয়ের নিখোঁজ ডায়রি করেন আসিফার বাবা।
- ১৭ জানুয়ারি ২০১৮, বাড়ি থেকে ৮০০ মিটার দূরে পাওয়া যায় আসিফার নিথর দেহ। পুলিস দেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উঠে আসে নারকীয় গণধর্ষণের ঘটনা।
- ১৮ জানুয়ারি, ২০১৮, আসিফার এই মর্মান্তিক পরিণতির খবর সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসে রাজনৈতিক মহল। তোলপাড় হয় জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভা। সেই আঁচ গিয়ে পড়ে রাজধানী দিল্লিতেও। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে একাধিক সংগঠন।
- ২২ জানুয়ারি, ২০১৮, আসিফার গণধর্ষণে ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানাতে থাকে কাশ্মীরের বাকওয়াল সম্প্রদায়। তাঁরা অভিযোগ করতে থাকেন পুলিস তদন্তে গাফিলতি করছে। চাপে পড়ে শেষে মুফতি সরকার ঘটনার তদন্তভার রাজ্যের গোয়েন্দাদের হাতে দেন।
- ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, সেদিনই ঘটে সবচেয়ে বড় অঘটন, উপত্যকার বিজেপি নেতারা পথে নামেন অভিযুক্তদের সমর্থনে। দেশ জুড়ে শুরু হয় ছি ছি কার। তাতে কী উপত্যকার বিজেপি নেতারা দাবি করতে থাকেন এমন কিছুই অপরাধ করেনি সঞ্জি রামরা।
- ১ মার্চ, ২০১৮: পিডিপি-বিজেপি জোট সরকারে দুই মন্ত্রী চৌধুরি লাল সিং এবং চন্দ্র প্রকাশ গঙ্গা হিন্দু একতা মঞ্চের র্যালিতে অংশ নিয়ে অভিযুক্তদের পাশে দাঁড়ান। তার পরেই তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। মেহবুবা মুফতিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করায় বিরোধীরা।
- ২১ মার্চ, ২০১৮, গণধর্ষণের মামলায় চার পুলিস অফিসার সহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিসকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তাঁরা তথ্য প্রমাণ লোপাট এবং নষ্টের চেষ্টা করেছিলেন। ধৃতদের মধ্য একজনকে অপ্রাপ্তবয়স্ক প্রমাণের চেষ্টা চলে। যদিও পড়ে প্রমাণিত হয় তার বয়স ১৯ বছর।
- ৪ এপ্রিল, ২০১৮, ঘটনার তদন্তে উঠে আসে চঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায় আসিফাকে অপহরণ করে মন্দিরের পিছনের ঘরে রেখেছিল অভিযুক্তরা। সেখানেই তাকে মাদক খাইয়ে বেহুঁশ করে রাখা হয়েছিল। সেখানেই টানা তিনদিন ধরে চলে ধর্ষণ। তারপর নৃশংসভাবে পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয় আসিফাকে।
- ১০ এপ্রিল, ২০১৮: ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই উত্তাল হয়ে ওঠে কাশ্মীর। রাস্তায় নেবে বিক্ষোভ অবরোধ শুরু করেন বাসিন্দারা।
- ১৪ এপ্রিল ২০১৮, অবশেষে কাঠুয়া গণধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দোষীদের যথাযথ শাস্তি হবে বলে আসিফার মা-বাবাকে আস্বস্ত করেন তিনি। সেই বিচার পেতে সময় লেগে গেল এক বছর। ১১৪ সাক্ষীর বয়ান নিয়ে দিল্লি থেকে পাঠানকোট পর্যন্ত ছুটোছুটি করে তবেই বিচার পেল আসিফা।
English summary
Kathua Rape case timeline at a glance