সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ! কাশ্মীরের ছাত্রদের জীবনধারায় বড় 'পরিবর্তন'
৫ অগাস্ট থেকে কাশ্মীরের জন্য বিশেষ আইন, ৩৭০ ধারা রদ করা হয়েছে। এরপর থেকে সেখানকার শিশুদের জীবন ধারায় বড় পরিবর্তন হয়েছে। যেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুকে খেলে বেরাত, সেখানে দিনের বেশিরভাগ সময় তাদের ঘরেই কাটাতে হচ্ছে। এমনটাই জানাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, শ্রীনগরের খ্যান্যারের বেসরকারি স্কুলে পড়ে বছর তেরোর ইদ্রিশ মীর। সে স্কুলের সেরাদের অন্যতম। ষষ্ঠ শ্রেণির এই ছাত্র পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিদিনই বাড়ির কাছের মাঠে ক্রিকেট খেলতো। কিন্তু গত একমাসে সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। ৫ অগাস্টের পর থেকে দিনের বেশিরভাগ সময় ঘরেই কাটছে তার।
বাড়িতে তার দুই দাদা রয়েছে, তারা স্নাতক। তারা ইদ্রিশকে পড়তে বললেও সে অস্বীকার করছে। নিজের ভালোলাগার সময়টুকু ছাড়া, পড়তে বললেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
৫ অগাস্টের দিন পনেরো পরে সরকারের তরফ থেকে স্কুল খোলার কথা ঘোষণা করা হলেও, কাশ্মীরের বেশিরভাগ স্কুলই বন্ধ। অন্যদিকে বাবা-মা বলছেন স্কুলে পাঠটাতে ভরসা পাচ্ছেন না। যদিও সরকার ইতিমধ্যেই ফিক্সড ল্যান্ডলাইন ফোনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। বেশিরভাগ জায়গায় মোবাইলে ইনকামিং কলের সুযোগও বহাল হয়েছে।
এক শিক্ষক জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর অন্য সহকর্মীরা প্রতিদিনই স্কুলে যাচ্ছেন। কিন্তু অভিভাবকরা ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না। বর্তমান পরিস্থিতি শিশুদের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
স্কুল শিক্ষার ডিরেক্টর ইউনুস মালিক জানিয়েছেন, উপত্যকার স্কুলগুলিতে উপস্থিতির হার কম থাকলেও, তা আস্তে আস্তে বাড়ছে। স্কুলগুলিতে ২০ শতাংশ পর্যন্ত উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শ্রীনগরের লাল বাজারের এপর এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, এই একমাসের বেশি সময় ধরে শিশুরা ঘরে বসে রয়েছে আর টিভি দেখছে। আর ঘরের মধ্যেই খেলছে। এছাড়া তাদের আর কিছু করার উপায় নেই বলে জানাচ্ছেন তিনি।
তবে অনেক অভিভাবক ঘরে টিউশনের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু যাঁদের সামর্থ নেই তাঁদের পরিস্থিতিটা অন্যরকমের। কিন্তু স্কুলে শিক্ষার জায়গায় বাড়িতে পড়াশেনা কতটা তাদের ফাঁক পূরণ করতে পারবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বাসিন্দাদের মনে।