'কিপ্যাড জিহাদি'দের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করলো কাশ্মীর পুলিশ, বিস্তারিত জানুন
ভূয়ো খবর, ছবি, ভিডিও ছড়ানো কিপ্যাড জিহাদিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করলো কাশ্মীর পুলিশ।
'কীপ্যাড জিহাদি'। এই নামেই ডাকা হচ্ছে তাদের। বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বিষ ছড়ানোটাই এদের কাজ। ভুয়ো খবর, ছবি, ভিডিও প্রকাশ করে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করে অথবা ইন্টারনেটে গুজব ছড়ায় বা যে কোনও ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রঙ লাগায়। কাশ্মীর উপত্যকায় বন্দুক হাতের আসল জঙ্গিদের আগে এদের পাকড়াও করাটাই এখন বেশই জরুরী বলে মনে করছে পুলিশ।
রমজান মাস উপলক্ষ্যে সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধ থাকলেও কি প্যাড জিহাদিদের রেয়াত করছে না পুলিশ। তারা জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই পাঁচটি টুইটার হ্যান্ডেলের বিরুদ্ধে তারা মামলা করেছে। ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের কাছেও এই ধরনের বিভ্রান্তিমূলক পোস্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। পাশাপাশি পুলিশ কর্তারা জানান, বিস্তারিত তথ্যের জন্য টুইটারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁরা চাইছেন প্রথম রাতেই বেডা়ল মারতে। ওই টুইটার ব্যবহারকারীদের দ্রুত চিহ্নিত প্রথমেই শাস্তি দিতে পারলে এই প্রবণতায় রাশ আনা যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা, নাহলে অবস্থা হাতের বাইরে চলে যেতে পারে।
পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম-এর মতো বার্তা পরিষেবার অ্যাপগুলির বিভিন্ন গ্রুপের ওপরেও কড়া নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। তারা মনে করছে আগে এই কি বোর্ডের পেছনে থাকা 'ভূয়ো' জঙ্গিদের শায়েস্তা করতে না পারলে প্রকৃত বন্দুকধারী সন্ত্রাসবাদীদের নির্মূল করতে মন দেওয়া যাচ্ছে না। ২০১৬-র পর থেকেই কাশ্মীরে এবং জম্মুতে বিভিন্ন গোষ্ঠী যে কোন ঘটনাকেই নিজেদের মতো রঙ চাপিয়ে প্রচার করেছে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বাধার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
কাশঅমারের পুলিশ কর্তারা বলছেন, যুদ্ধটা আর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এবং সংকীর্ণ রাস্তায়, বনাঞ্চলের মধ্যে আটকে নেই। নতুন প্রজন্মের জিহাদিরা বন্দুকের মতোই কম্পিউটার ও স্মার্টফোন ব্যবহারে দক্ষ। এই দুটো 'অস্ত্র' নিয়েই তারা উপত্যকা বা বাইরের যে কোন জায়গা থেকে যুদ্ধ করতে সক্ষম। সে ঘরে বসে হোক, বাইরে রাস্তায়, ক্যাফেতে - যেখান থেকে খুশি।
কিরকম তাদের আক্রমণের ধারা? পুলিশ কর্তারা জানাচ্ছেন, দেশের অন্য়ন্ত্র যেমন দাঙ্গাবাজরা ভূয়ো ছবি ছড়িয়ে, কোনও সম্প্রদায়কে খেপিয়ে তুলে আরেক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে, সেই একই পথে কিবোর্ড জিহাদিরা উপত্যকায় হামলা চালায় সেনা বৈাহিনীর ওপর। স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে অসামরিক ব্যক্তিদের গুলি করা ও বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনার ভূয়ো খবর, হত্যাকান্ডের মিথ্যা খবর প্রচার করা হয়।
আবার আরেকটা ধরণ হল, সাধারণ নাগরিকদের ছবি ফটোশপ করে জঙ্গি হিসেবে চালানো। তাতে একদিকে ওই সাধারণ নাগরিকের পেছনে ছুটে সময় নষ্ট হয়। সেই ফাঁকে প্রকৃত জঙ্গিরা মিটিং ইত্যাদি সারে। পাশাপাশি শুধু শুধু নাকাল হতে হয় বলে সেনার ওপর ক্ষোভ বাড়ে জনমানসে।
সামনেই রয়েছে দীর্ঘ দুই মাসের অমরনাথ যাত্রা। গতবারও তার্থযাত্রীদের এপর হামলা হয়েছিল। এবার তাই নিরাপত্তা জোরদার করতে বন্দুকধারী জঙ্গিদের আগে এই কিপ্যাড জিহাদিদের কব্জা করতে চাইছে সেনা।