ভোটের টানে সব কাজ হয়, তাই গনতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগে সামিল এই 'ব্রাত্য'রাও
কর্ণাটকে ৫০০০-এর বেশি রূপান্তরকামী ভোট দিলেন।
এবারই প্রথম ভোট দিলেন আক্কাই পদমশালী। ভোট দিয়ে বেরিয়ে তাঁর মুখে ছিল দিগ্বিজয়ীর হাসি। অত্যন্ত গর্ব একহাতে ভোটার পরিচয়পত্র নিয়ে আরেক হাতে ভোটের কালি দেখাচ্ছিলেন। আসলে সহজে তো ভোট দেওয়ার অধিকার মেলেনি। তা, আদায় করতে হয়েছে। লেগে গেছে ১৬ বছর। অবশেষে মিলেছে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ। এবারও আরেকটু হলেই হাতছাড়া হয়ে যেত। নির্বাচন কর্মকর্তারা ভোটের কার্ডে তাঁকে 'মহিলা' বলে পরিচয় দিতে চাননি। কারণ আক্কাই একজন রুপান্তরকামী। তবে হাল ছাড়েননি এই পরিচিত যাইহোক ট্রান্সজেন্ডার অ্যাক্টিভিস্ট। প্রায় এক বছরের প্রক্রিয়ায় পর তাঁকে অবশেষে ভোটার পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। আইডি কার্ড দেওয়া হয়েছিল। ভোটকেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, 'আমি যে শেষ অবধি ভোট দিতে পারলাম এতে দারুন আনন্দ হচ্ছে।'
কর্ণাটকের এবারের বিধানসভা ভোটে প্রায় ৫০০০ এরও বেশি রুপান্তরকামী ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পেয়েছেন। গত পাঁচ বছরের এই সংখ্যাটা দ্বিগুন হয়েছে। শুধুমাত্র বেঙ্গালুরু শহর থেকেই তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ১৬২৯ জন। ভোটকেন্দ্র হিসেবে সবচেয়ে বেশি ট্রানসজেন্ডার ভোটার আছেন বেঙ্গালুরুর সি বি রমন নগরের সেন্ট অ্যালয়সিয়াস প্রিইউনিভার্সিটি কলেজ ভোটকেন্দ্রে। এই কেন্দ্রে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ জন ততীয় লিঙ্গের মানুষ ভোট দিয়েছেন।
তাঁদের একজন লাবন্য। তিনিও এবারই প্রথমবার ভোটাধিকার প্রয়োগ করলেন। তিনি বলেন, 'ভোট দেওয়া অধিকার নয়, কর্তব্য। আমি তাই করতে এসেছি। প্রচারের সময় অনেক প্রার্থীই আমাদের সম্প্রদায়ের কাছে ভোট চাইতে এসেছিলেন। আমার মনে হয় এভাবেই ভবিষ্যতে আমাদের চাহিদা, দাবি দাওয়া সম্পর্কে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী পাল্টাবে। আরেক রুপান্তরকামী ভোটার কার্তিক জানান, এমনিতে তাঁদের সম্প্রদায়ের জন্য কারোর কোনও মাথাব্যথা নেই। কিন্তু তাঁরা দেখেছেন ভোটের বালাই বড় বালাই। ভোট পেতে এদেশের নেতারা সব করেন। তাই নিজেদের কন্ঠ জোরালো করতেই ভোট দিতে এসেছন বলে জানান তিনি।
তবে এর পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বেঙ্গালুরু শহরে এখনও তৃতীয় লিঙ্গের প্রায় অর্ধেক মানুষের ভোটার আই-কার্ড নেই। কমিশনের কর্তারা বৃহন্নলা সম্প্রদায়ের মধ্যে ভোট নিয়ে সচেতনতা আরও বাড়ানোর কথা সুপারিশ করেছেন।