স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর থেকে জরিমানা আদায় করেও পুরস্কৃত দুই পুলিশ!
কে জে জর্জ। কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। গত ৭ ডিসেম্বর এক বন্ধুর বাড়িতে আড্ডা দিতে যাচ্ছিলেন নিজের অডি গাড়িতে চেপে। পিছনের আসনে একাই বসেছিলেন তিনি। ব্যক্তিগত কাজে যাচ্ছেন বলে সঙ্গে পুলিশ পর্যন্ত নেননি।
কে জে জর্জ কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বেঙ্গালুরুর অশোকনগরের ডি'সুজা জংশনে গাড়ি আটকান দুই ট্রাফিক পুলিশ। অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর এইচ আর শ্রীনিবাস এবং কনস্টেবল পি পবন। ট্রাফিক আইন ভাঙার দায়ে ১০০ টাকা জরিমানা চান ড্রাইভারের কাছে। মন্ত্রী যে পিছনে বসে আছেন, সেটা তাঁরা খেয়াল করেননি বা চিনতে পারেননি। প্রথমে চালক দাবি করে, সে আইন ভাঙেনি। কিন্তু, নিজেদের ব্ল্যাকবেরিতে দুই পুলিশকর্মী দেখিয়ে দেন, গাড়িটি আইন ভেঙেছে এবং 'কেস পেন্ডিং' দেখাচ্ছে। অতএব জরিমানা না দিয়ে নিস্তার নেই। 'নুরু রুপাই কোডি' অর্থাৎ একশো টাকা দিন। পুলিশকর্মীদের নাছোড় অবস্থা দেখে মন্ত্রী কে জে জর্জ নিজের পরিচয় গোপন রেখেই একশো টাকা দেন। এইচ আর শ্রীনিবাস জরিমানা আদায় করে রসিদ কেটে তবে গাড়িটিকে যেতে দেন।
পরদিন সকালে সচিবালয় থেকে ফোন পুলিশ কমিশনারের কাছে। বলেন, ওই দুই পুলিশকর্মীকে এক্ষুণি তাঁর কাছে পাঠাতে। অশোকনগর ট্রাফিক গার্ড মারফত খবর যায় ওই দু'জনের কাছে। মন্ত্রী ডেকেছেন শুনে তো ভিরমি খাওয়ার উপক্রম।
সচিবালয়ে যেতেই দু'জন বিস্মিত। এ যে সেই লোকটা! গাড়িতে বসেছিল সেই দিন। ততক্ষণ আর বোঝার কিছু বাকি নেই। কিন্তু বিস্ময় আরও বাকি ছিল। 'বন্নি বন্নি' অর্থাৎ আসুন-আসুন বলে মন্ত্রী একগাল হেসে নিজে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ান। দু'জনের সঙ্গে করমর্দন করেন। তার পর কাজের বিস্তর প্রশংসা করে চা খাইয়ে, পুরস্কৃত করে তবে যাওয়ার অনুমতি দেন।
খবরটি প্রথমে চেপে রেখেছিলেন প্রচারবিমুখ এই মন্ত্রী। কিন্তু, জানাজানি হতে মিডিয়া ছেঁকে ধরে। মন্ত্রীর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, "ওঁদের সততা আমায় মুগ্ধ করেছে। জরিমানা নিয়েছে, কিন্তু আমার ড্রাইভারকে একটাও খারাপ কথা বলেনি। দু'জনে খুব ভদ্র। তাই ওঁদের ডেকে প্রশংসা করলাম।"
আর অপরপক্ষের কী প্রতিক্রিয়া? শ্রীনিবাসের জবাব, তাঁরা স্বপ্নেও ভাবেননি মন্ত্রী এমন মিষ্টি করে কথা বলবেন। ভেবেছিলেন চাকরি গেল বোধ হয়। লাজুক মুখে মন্ত্রীকে শুধু বলেছেন, 'তুম্ব ধন্যবাদগলু'। অনেক ধন্যবাদ।