কানপুরের ল্যাব টেকনিশিয়ানকে অপহরণ করে খুন, নিখোঁজ দেহ, প্রশ্নের মুখে যোগী সরকার
উত্তরপ্রদেশের আইন শৃঙ্খলা ক্রমেই অবনতির পথে এগোচ্ছে। সম্প্রতি কানপুরের এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে খুন করা হয় গত সপ্তাহে। মুক্তিপণের টাকা পাওয়ার পরও অপহরণকারীরা ওই ব্যক্তিকে খুন করে। যা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যের যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে।
শুক্রবার উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে যে, ল্যাব টেকনিশিয়ান সঞ্জীত যাদবকে তাঁরই অপহরণকারীরা খুন করেছে। ২৮ বছরের যুবককে অপহরণ করা হয়েছিল ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণের জন্য। পুলিশের উপস্থিতিতে পরিবার সেই অর্থ অপহরণকারীকে দেয়ও। উত্তরপ্রদেশ সরকার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবারই আইপিএস অফিসার অপর্না গুপ্তা সহ চারজনকে বহিষ্কার করেছে। যাঁরা ল্যাব টেকনিশিয়ানের এই অপহরণ ও খুনের ঘটনার কোনও কিনারা করতে পারেনি। অপহরণের এক সপ্তাহের মধ্যেই ল্যাব টেকনিসিয়ানকে খুন করা হয়। এখনও তাঁর দেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
২২ জুন ২৮ বছরের ওই ব্যক্তিকে অপহরণ করা হয়। রিপোর্ট অনুযায়ী ওই ল্যাব টেকনিশিয়ান সঞ্জীত যাদবকে অপহরণের পর অপহরণকারীরা তাঁর মুক্তির জন্য ৩০ লক্ষ মুক্তিপণের দাবি করে। বরা পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করা হয়। সঞ্জীতের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের উস্কানিতেই তারা ৩০ লক্ষ মুক্তিপণের বন্দোবস্ত করে। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে ১৩ জুলাই তারা মুক্তিপণের অর্থ রেলওয়ে ট্র্যাকে রেখে আসে। যাদবের অপহরণকারীরা মুক্তিপণের টাকা নিলেও তাঁকে মুক্তি দেয় না। এত সবের মধ্যেও পুলিশ কোনও ভূমিকা নেয়নি বলে অভিযোগ করে পরিবার।
মুক্তিপণ দেওয়ার পরের দিন যাদবের পরিবার এসএসপি–এর অফিসের দ্বারস্থ হয়। এসপি দক্ষিণ অপর্না গুপ্তা জানান যে যাদবের পরিবারের অভিযোগ সত্য নয়। বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়ে বরার স্টেশন হাউস অফিসারের বিরুদ্ধে, যিনি যাদবের পরিবারকে মুক্তিপণের অর্থ বন্দোবস্ত করতে বলেছিলেন। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ যেখানে অভিযোগ অস্বীকার করেছে, সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। তিনি জানিয়েছেন কারা এইসব অপরাধীদের সমর্থন করছে যে তারা পুলিশকেও ভয় পাচ্ছে না ও মুক্তিপণের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। অখিলেশ যাদব টুইটে বলেন, 'এই অপহরণ বিজেপি সরকারের আমলে নির্লজ্জকর ঘটনা।’
যদিও ১৫ জুন যাদবের পরিবার পাল্টি খেয়ে জানিয়েছে যে পুলিশের উপস্থিতিতে মুক্তিপণ দেওয়ার অর্থ হল যাতে সঞ্জীত যাদবকে নিরাপদে ছেড়ে দেওয়া হয়। যাদবের বোন জানিয়েছেন যে ব্যাগে কোনও মুক্তিপণের অর্থ ছিল না। তাঁদের কেউ মুক্তিপণ দেওয়ার কথা বলেছিল ঠিকই। কিন্তু এখন তাঁরা যাদবের দেহ খুঁজে না পাওয়ায় উদ্বিগ্ন রয়েছে এবং তাঁদের আশা পুলিশ শীঘ্রই দেহ খুঁজতে সফল হবে। পুলিশের চাপের মুখে পড়েই যাদব পরিবার তাঁদের বিবৃতি বদল করে বলে পরে জানা যায়। এই ঘটনা নিয়ে যোগী সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন যে উত্তরপ্রদেশের আইন শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে।