মাতৃবন্দনায় ১১তম বছরে পা রাখল বেঙ্গালুরুর কগ্গদাসপুরা বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের দুর্গাপুজো
বেঙ্গালুরুর কগ্গদাসপুরায় গুটিকয়েক বাঙালি মিলে দুর্গাপুোজর পরিকল্পনা করেছিলেন। আর সেই পুজোই এখন বিশাল আয়তন নিয়েছে।
গুটিকয়েক হুজুগে বাঙালি একজায়গায় হলে কিছু না কিছু একটা কাণ্ড করবেই। এই আপ্তবাক্যকে সত্যি প্রমাণিত করে বেশ কিছুবছর আগে বেঙ্গালুরুর কগ্গদাসপুরায় গুটিকয়েক বাঙালি মিলে দুর্গাপুোজর পরিকল্পনা করেছিলেন। আজ সেই পুজোই বিশাল আয়তন নিয়েছে। বহরে বেঙ্গালুরুর অন্যতম বড় পুজো হয় এই কগ্গদাসপুরায়। তবে শুধু বহরে নয়, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠায়ও এই পুজো অন্য বড় পুজোগুলিকে টেক্কা দিতে পারে।
[আরও পড়ুন:রামকৃষ্ণের স্মৃতি বিজরিত দুর্গা পুজো রানি রাসমণির বাড়িতে]
কগ্গদাসপুরা বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের দুর্গাপুজো এবছর ১০ পেরিয়ে ১১ বছরে পা দিচ্ছে। গতবছরে দশ বছরের পূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেননি উদ্যোক্তারা। এবছরও একইভাবে গ্র্যান্ড সেলিব্রেশনের আয়োজনে ব্যস্ত সকলে।
পূর্ব বেঙ্গালুরুর এই এলাকাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বহু বাঙালি বাস করেন। পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতীয় বাদেও হিন্দিভাষী উত্তর ভারতীয়রাও রয়েছেন প্রচুর। ফলে সবমিলিয়ে দুর্গাপুজোর সময়ে কগ্গদাসপুরার পুজোয় এলে মনে হবে যেন সকলে মিলেমিশে এক হয়ে গিয়েছেন।
মাতৃবন্দনাই যেখানে সবচেয়ে আশু সেখানে থিম নির্ভর সাজসজ্জায় না গিয়ে একেবারে চিরাচরিত ভঙ্গিতে দেবী দুর্গার বন্দনা করা হয় এখানে। সুবিশাল প্যান্ডেলে থিমের মারপ্যাঁচ নেই। দেবীর আসন থেকে শুরু করে বসার জায়গা পুরোটাই ঢেকে দেওয়া হয়। যাতে রোদ-বৃষ্টিতে অভ্যাগতদের কোনও অসুবিধা না হয়।
পাশাপাশি আর একটি স্টেজ বেঁধে পুজোর সবকটি দিনই কোনও না কোনও অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। স্থানীয় বাঙালিদের পাশাপাশি অন্য ভাষার মানুষও সমানতালে সেই অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এবছরও টিভির পরিচিত শিল্পীদের নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। আসতে পারেন গায়ক রথিজিৎ। গতবছরে যেমন এসেছিলেন গায়ক অঞ্জন দত্ত ও তাঁর ছেলে নীল দত্ত, সঙ্গে তাঁদের ব্যান্ড। শুধু পুজোর সময়ই নয়, তার পরেও নানা অনুষ্ঠান করে থাকে কগ্গদাসপুরা বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন। অর্থাৎ সারা বছরই এলাকার বাঙালিদের একাত্ম করে রাখার কাজ করে এই অ্যাসোসিয়েশন।
প্রথমে অ্যাসোসিয়েশনে গুটিকয়েক সদস্য থাকলেও গত দশবছরে তা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। এখন সেটা পাঁচশো ছাড়িয়ে গিয়েছে। ভিনরাজ্যে বাঙালি সংষ্কৃতিকে এভাবেই বাঁচিয়ে রেখেছেন কতিপয় সংষ্কৃতিমনা বাঙালি। এবছরের পুজো আরও সুন্দর ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠুক, সকলে প্রাণখোলা আনন্দে মেতে উঠুন। শুভেচ্ছা রইল।