নাড্ডার ছেলের বিয়েতেই প্রসারিত হয়েছিল জ্যোতিরাদিত্যর বিজেপি যোগ!
বিজেপির পথে যে তিনি পা বাড়িয়ে দিয়েছেন তা স্পষ্ট হয়ে যায় হোলির দিন সকালেই। মঙ্গলবার সকাল সকাল প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে যান প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধ্যা। সিন্ধিয়া যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই মোদীর বাসভবনে ঢোকেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। জল্পনা ছিল আগেই। তবে এই ছবি সামনে আসতেই আর সব সন্দেহ চলে যায়। এর পরপরই কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দেন সিন্ধিয়া ঘনিষ্ঠ ১৯ জন বিধায়ক। পরে ইস্তফা দেন আরও বেশ কয়েকজন। মোট ২২ জন বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে দেন। এদের সকলেরই পরবর্তী গন্তব্য বিজেপি। কিন্তু কখন থেকে এই পথ বদলের সূচনা?
কংগ্রেসের অন্দরে কোণঠাসা হয়েছিলেন সিন্ধিয়া
কংগ্রেসের অন্দরে কোণঠাসা হয়েছিলেন বহুদিন। কমনাথ-দিগ্বিজয় সিং লবির কাছে বারবার পর্যদস্তু হচ্ছিলেন। এই কারণেই হয়ত দলবদলের ভাবনা শুরু হয় তাঁর মাথায়। তবে সেই ভাবনা চূড়ান্ত পরিণতি পায় জেপি নাড্ডার ছেলের বিয়ের রিসেপশনে। এমনটাই কিন্তু জানা যাচ্ছে। কংগ্রেসের হাইকমান্ডের সঙ্গে যত দূরত্ব বেড়েছে জ্যোতিরাদিত্যর, তত সেই ক্ষোভে ঘৃতাহুতি দেওয়ার কাজ তলে তলে চালিয়ে যাচ্ছিল বিজেপি নেতৃত্ব। সেই রেশ ধরেই শেষ পর্যন্ত হাত ছেড়ে পদ্ম শিবিরে নাম লেখানোর পথে সিন্ধিয়া।
নাড্ডার ছেলের বিয়েতে সিন্ধিয়া
জানা যায় চার দিন আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন জ্যোতিরাদিত্য। সেখানে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। সেখানেই নাকি শিবরাজ সিং চৌহান মধ্যপ্রদেশের এই অস্থির অবস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে অবগ করেছিলেন। যার পর জ্যোতিরাদিত্যর বিজেপিমুখী হওয়ার রাস্তা আরও প্রসরিত হয়।
সিন্ধিয়া নিয়ে আলোচনা হয় বিজেপির শীর্ষে
মঙ্গলবার সকালে, যখন গোটা দেশ হোলি উদযাপনে ব্যস্ত ছিল সেই সময় জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর, লোক কল্যাণ মার্গের বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে সেখানে যোগ দেন অমিত শাহ। তাঁর শিলমোর পেতেই কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করার পত্রটি জনসমক্ষে আনেন সিন্ধিয়া। ইস্তফা পত্র টুইট করে জানিয়ে দেন কংগ্রেস থেকে বিদায়ের কথা। আর এর ১৫ মিনিট পরেই তাঁকে বহিষ্কার করার কথা ঘোষণা করা হয় কংগ্রেসের তরফে।
মধ্যপ্রদেশের রাজনীতি নিয়ে আলোচনায় ছিলেন মোদীও
সূত্রের খবর, জে পি নাড্ডার ছেলে গিরিশের বিয়ে উপলক্ষে দিল্লিতে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাছাড়া অমিত শাহ সহ দলের শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এদের সবার উপস্থিতিতে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং তাঁর অনুগামী বিধায়কদের বিক্ষুব্ধতা সম্পর্কে দলীয় সহকর্মীদের জানান। আর তারপর থেকেই সিন্ধিয়াকে বিজেপিতে নিয়ে আসার কাজ শুরু করে গেরুয়া দল।
সিন্ধিয়ার বিদায়ে টালমাটাল কমলনাথের সরকার
এদিকে এই ইস্তফার হিড়িকে কমলাথের সরকারের পতন এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। ২২ জন কংগ্রেস বিধায়ক ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কমল নাথ সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যরাও আছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত কমল নাথ সরকারের সঙ্গে ১২০ জন বিধায়কের সমর্থন ছিল। সেখানে বিজেপির সদস্য সংখ্যা ১০৭। সরকার গড়তে দরকার ১১৫-জন বিধায়কের সমর্থন। সেক্ষেত্রে কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করা ২২ জন বিজেপিতে যোগ দিলে সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে কমল নাথের সরকার। পাশাপাশি একধাক্কায় সরকার গড়ার ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে যাবে বিজেপি।