নিয়োগেই ইতিহাস গড়লেন বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি জোশেফকে মানতে বাধ্য হল কেন্দ্র
বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে উন্নীত করা হল। ফলে তাঁকে নিয়ে এই মুহুর্তে সুপ্রিম কোর্টে একসঙ্গে তিনজন মহিলা বিচারপতি হলেন। যা আগে কখনও দেখা যায়নি।
ইতিহাস রচনা করলেন বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার এই প্রথম ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একই সঙ্গে তিন-তিনজন মহিলা বিচারপতি পেল। তাঁর সঙ্গেই শুক্রবার সুপ্রিন কোর্টের বিচারপতি পদে উন্নিত হলেন ওড়িশা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বিনীত সরন ও উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি কে.এম. জোশেফ।
৬০ বছর বয়সী মাদ্রাজ হাইকোর্টের এই সদ্য প্রাক্তন বিচারপতি অষ্টম মহিলা হিসেবে সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হলেন। ১৯৮৯ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট প্রথম মহিলা বিচারপতি পেয়েছিল। কিন্তু কখনই একসঙ্গে তিনজন মহিলা বিচারপতি পায়নি শীর্ষ আদালত। ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগে থেকেই সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতির দায়িত্ব সামলে আসছেন বিচারপতি আর বানুমথি ও বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রা।
কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তনী ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় গত শতাব্দীর আটের দশকের মাঝামাঝি কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একজন আইনজীবী হিসেবে। তারপর নেন বিচারপতির দায়িত্ব। ২০০২ সালে তিনি হাই কোর্টের বিচারপতি নির্বাচিত হন। গত বছরই তাঁকে মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে মনোনীত করা হয়েছিল। মাত্র দু সপ্তাহ আগেই তাঁকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তাঁর সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির দায়িত্ব পাচ্ছেন বিচারপতি বিনীত সরন ও বিচারপতি কেএম জোশেফ। গত কয়েকমাসে বিচারপতি কে.এম. জোশেফের নিয়োগ নিয়ে প্রচুর নাটক হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম তাঁকে বেছে নিলেও আপত্তি জানিয়েছিল কেন্দ্রী সরকার। সরকার তাঁর নাম পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠায় কলেজিয়ামে।
কিন্তু নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে কলেজিয়াম। নিয়ম অনুযায়ী কলেজিয়াম দ্বিতীয়বার কারোর নাম সুপারিশ করলে তা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না কেন্দ্রের। কিন্তু এরপরেও তাঁর নিয়োগ নিয়ে সরকার টালবাহানা করবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু সরকারি সূত্র সেই বিষয়টি মানতে চায়নি। তাদের বক্তব্য বিচারপতি জোশেফের নিয়োগে কেন্দ্রের আপত্তি ব্যক্তি স্তরে ছিল না, ছিল পদ্ধতিগত কারণে।
সেই দাবি অবশ্য অনেক সরকার সমালোচকই মানছেন না। তাদের পাল্টা দাবি ২০১৬ সালে উত্তরাখণ্ডে প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি জোশেফ রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে দিয়েছিলেন। যার ফলে সেই রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল কংগ্রেস। তার জন্যই জোশেফে আপত্তি ছিল সরকারের।