আর্থিক তছরূপের অভিযোগে সাংবাদিক রানা আয়ুবের বিরুদ্ধে, ১.৭৭ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত ইডির
আর্থিক তছরূপের অভিযোগে সাংবাদিক রানা আয়ুবের বিরুদ্ধে
শাসক বিজেপি দলের সোচ্চার সমালোচক হিসাবে পরিচিত সাংবাদিক রানা আয়ুবের কাছ থেকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি ১.৭৭ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ তছরূপ ও জনহিতকর কাজের জন্য নেওয়া অর্থ প্রতারিত করার অভিযোগ রয়েছে। ইডি তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
ইডি সূত্রের খবর, প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ইডি সাংবাদিক ও তাঁর পরিবারের নামে থাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিও অ্যাটাচ করে। সম্পত্তি অ্যাটাচ করার অর্থ হল তা হস্তান্তর, বিক্রি বা অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া যাবে না। রানা আয়ুব তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগগুলির বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
প্রসঙ্গত, রানা আয়ুবের বিরুদ্ধে অর্থ তছরূপের প্রথম এফআইআর দায়ের করা হয় গত বছরের সেপ্টেম্বরে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ পুলিশের কাছে। 'হিন্দু আইটি সেল’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও গাজিয়াবাদের বাসিন্দা বিকাশ সংকৃত্যায়ন এই অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল জনকল্যাণমূলক কাজের নাম করে টাকা তুলে তা নিজে ব্যবহার করতেন সাংবাদিক।
আর্থিক মামলার তদন্তকারী এজেন্সি ইডির তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ওই সাংবাদিক জনহিতকর কাজের নাম করে অনলাইন ক্রাউডফান্ডিং মাধ্যম কেটো–এর মাধ্যমে প্রায় ২.৬৯ কোটি টাকার বেশি সংগ্রহ করেছেন। আয়ুব তখন সেই সময় বলেছিলেন, 'কেটোর মাধ্যমে সংগ্রহ করা গোটা অনুদানই দানের কাজে ব্যবহার হয়েছিল এবং একটা পয়সাও অপব্যবহার হয়নি।’ ইডি তার তদন্তে জানিয়েছে, 'মোট ২,৬৯,৪৪,৬৮০ টাকা কেটোর মাধ্যমে রানা আয়ুব সংগ্রহ করেছিলেন। এই অর্থ তোলা হয়েছিল আয়ুবের বোন ও তাঁর বাবার অ্যাকাউন্ট থেকে।’ ইডি আরও জানিয়েছে যে এই গোটা অর্থ আয়ুবের নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থেকে স্থানান্তর হয়েছিল। ইডির কাছে রানা আয়ুব ৩১ লক্ষ টাকার খরচের নথি জমা দিয়েছিল, এরপর সেই ব্যয় ইডি খতিয়ে দেখার পর দেখা যায় যে প্রকৃতপক্ষে খরচ হয়েছে ১৭.৬৬ লক্ষ টাকা মাত্র। ইডি অভিযোগ তোলে যে, 'রানা আয়ুব ত্রাণ কাজে ব্যয় দাবি করার জন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নামে জাল বিল তৈরি করেছিলেন। ত্রাণের কাজে ব্যয় করা অর্থ আসলে নিজের ব্যক্তিগত সফরের কাজে ব্যবহৃত হয়েছে।’
ইডির তদন্তে এটা স্পষ্ট যে জনহিতকর কাজের নাম করে যে অনুদান নেওয়া হয়েছিল তা সম্পূর্ণ পূরব পরিকল্পিত ও পদ্ধতিগতভাবে সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং যে জনহিতকর কাজের নামে অনুদান সংগ্রহ করা হয় সেই অর্থ পুরোটা সেই কাজে ব্যবহৃত হয়নি। ইডি আরও যোগ করেছে যে রানা আয়ুব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে অর্থ সংগ্রহ করে ৫০ লক্ষ টাকার ফিক্সজ ডিপোজিট তৈরি করেন এবং সেই অর্থ দানের কাজে ব্যবহৃত হয়নি। ইডির তদন্তে এও উঠে এসেছে রানা আয়ুব প্রধানমন্ত্রী কেয়ার ফান্ড এবং সিএম রিলিফ ফান্ডে মোট ৭৪.৫০ লক্ষ টাকা জমা করেছেন।