For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

‌খালি বেড রয়েছে পড়ে, কেন করোনা পরিস্থিতিতেও পাটনার বড় সরকারি হাসপাতালে যেতে নারাজ রোগীরা

কেন করোনা পরিস্থিতিতেও পাটনার বড় সরকারি হাসপাতালে যেতে নারাজ রোগীরা

Google Oneindia Bengali News

করোনার দ্বিতীয় ওয়েভে বিধ্বস্ত গোটা দেশ। ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক রাজ্যের মধ্যে বিহারের পরিস্থিতিও খুব খারাপ। রাজ্যের রাজধানী পাটনার বড় বড় সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো একেবারেই ভেঙে পড়েছে এরকম অবস্থায়। তারই চিত্র তুলে ধরল এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম।

সরকারি হাসপাতালের অবস্থা করুণ

সরকারি হাসপাতালের অবস্থা করুণ

গত ৬ মে পাটনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (‌পিএমসিএইচ)‌ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় দীনা রাইয়ের (‌৬৫)‌। তাঁর ছেলে মুন্না যাদব বিহারের গঙ্গা তোলা গ্রামে বাবার মৃত্যর খবর পরিবারকে দেওয়ার সময় বলেন, '‌তারা মৃত ঘোষণা করে দিয়েছে, হয়ত বাবার কিডনিও বের করে নিয়েছে, দেখতে হবে।'‌ ২৮ বছরের মুন্নার গলা আতঙ্ক ও উদ্বেগে রীতিমতো কাঁপছে। কোভিড ওয়ার্ডের বাইরে দাঁড়িয়ে যাদব তাঁর বন্ধু ও পরিবারকে ফোন করার মাঝে গামছা দিয়ে নিজের চোখের জল মুছলেন। প্রত্যেকটা ফোনেই যাদবের গলায় তাঁর বাবার মৃত্যুর কারণ নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে আর তাই তিনি নিজের শক্তি বাড়াতে পরিবারকে ফোন করে জানাচ্ছেন। যাদব বলেন, '‌আমায় দেখতে হবে তারা কোনও দেহের অংশ বের করে নিয়েছে কিনা, কিডনি চুরি করেছে কিনা। তারা (‌হাসপাতালের চিকিৎসক)‌ হয়ত আমার বাবাকে খুন করে ফেলেছে।'‌ এর ঠিক আধঘণ্টা আগে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের নজরে আসে যাদব ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকের সঙ্গে বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছেন। কারণ তিনি যাদবকে তাঁর বাবার স্বাস্থ্যের বিষয়ে, অক্সিজেন স্তরের সম্বন্ধে সঠিকভাবে বলছিলেন না। এমনকী ওই দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক যখন জানান যে তাঁর বাবার অক্সিজেন স্তর স্বাভাবিক তাও যাদব ক্রমাগত তাঁর ওপর চিৎকার করে যান। এরপর যাদব এক সাফাই কর্মীকে ৫০ টাকার ছোট ঘুষ দিয়ে তাঁর বাবাকে দেখে আসার জন্য বলেন। এই হাসপাতালে তিনটে অডিও-ভিস্যুয়াল স্ক্রিন রয়েছে, যেখানে রোগী ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়। কিন্তু সেগুলিও কাজ করছে না। যাদব এ নিয়ে অভিযোগও করেন। এছাড়াও তিনি জানান যে বড় বড় ইঁদুর হাসপাতালে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

 পাটনার দুই সরকারি হাসপাতালের চিত্র

পাটনার দুই সরকারি হাসপাতালের চিত্র

এই দৃশ্য পাটনা শহরের দু'‌টি বড় বড় সরকারি হাসপাতালের-পাটনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল (‌পিএমসিএইচ)‌ ও নালন্দা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল (‌এনএমসিএইচ)‌। এই দু'‌টি হাসপাতালের অবস্থাই কমবেশি একই। প্রস্রাবের দুর্গন্ধ বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে, হাসপাতালের বহু জায়গায় জঞ্জাল পরে রয়েছে এবং শৌচালয থেকে নোংরা জল এসে করিডর ভাসিয়ে দিচ্ছে। এর মধ্যেই রোগীর পরিবারদের অপেক্ষা করতে হয়, হাসপাতালের কর্মীদের টাকা দিয়ে জল বা রোগীর জন্য জীবনদায়ী ওষুধ আনাতে হয়। রাজ্যের স্বাস্থ্য বুলেটিন অনুযায়ী, ৯ মে পাটনায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৪৬ জন, এটাই বিহারের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা। ওইদিনেই রাজ্যে ১১,২৫৯টি নতুন করোনা কেস সনাক্ত হয়। ৮ মে এই পাটনা শহরে সক্রিয় কোভিড কেস ধরা পড়ে ২২ হাজার, যা গোটা রাজ্যের ২০ শতাংশ।

দেশের করোনা ভাইরাসের বিস্ময়কর সংখ্যা থাকা সত্ত্বেও দেশের একাধিক জায়গায় হাসপাতালগুলি বেড, অক্সিজেন ও ওষুধের ঘাটতি নিয়ে লড়াই করে চলেছেন, তা পাটনায় কিন্তু উপলব্ধ। স্বাস্থ্য পরিষেবা কর্মীরা এটা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন যে মানুষ অসুস্থ হওয়ার পরও চিকিৎসার জন্য আসছেন না যা বেশ চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর জন্য অনেকেই দায়ি করছেন যে পাটনার হাসপাতালের ব্যবস্থা ক্ষতিকর ও অস্বচ্ছন্দ তাই মানুষ এখানে আসতে ভয় পাচ্ছেন।

 আইসিইউ বেড খালি

আইসিইউ বেড খালি

পিএমসিএইচের স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, '‌মানুষ ভর্তি হোয়ার পরও আইসিইউ বেড খালি করে দিচ্ছে যা খুবই উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্য পরিষেবা পদ্ধতির ওপর থেকে মানুষের আস্থা চলে যাচ্ছে এটা তারই আভাস।'‌ মুন্না যাদব আরও আশঙ্কা করছেন যে রোগীর দেহের অংশ গায়েব হয়ে গিয়েছে হাসপাতালে, যদিও এ ধরনের কেস এখনও রিপোর্ট হয়নি। এ নিয়ে যদি শীর্ষ স্বাস্থ্য আধিকারিক এই আতঙ্ক ভুল তথ্য পাওয়ার কারণে হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

খারাপ অডিও–ভিস্যুয়াল স্ক্রিন

খারাপ অডিও–ভিস্যুয়াল স্ক্রিন

পিএমসিএইচ অফিসার বলেন, '‌প্রতিদিন আমরা করোনায় মৃত পরিবারদের সঙ্গে মোকাবিলা করি যারা জোর করে কোভিড দেহ দেখতে চায়, তারা দেখে মৃতদেহের চোখ ও কিডনি সঠিক জায়গায় আছে কিনা। পরিবারের সঙ্গে সঙ্গে এটা আমাদের জন্যও দুঃস্বপ্নের চেয়ে কম নয়।'‌ অডিও-ভিস্যুয়াল স্ক্রিন, যেখানে পরিবারের সদস্যরা রোগার স্বাস্থ্যের বিষয়ে জানতে পারেন তা কাজ না করা প্রসঙ্গে তিনি জানান যে রোগীদের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের কারণে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকারি হাসপাতালের প্রশাসন জানিয়েছে যে উভয় সরকারি হাসপাতালেই দৈনিক গড়ে ১৫ জনের বেশি কোভিড সংক্রান্ত মৃত্যু হয়।

বাড়িতে মৃত্যু সুখের

বাড়িতে মৃত্যু সুখের

পিএমসিএইচের বাইরে দাঁড়িয়ে যাদব বলেন, '‌গ্রামে গ্রামে এই কথা ছড়িয়ে গিয়েছে যে, যারাই হাসপাতালে যাবে তারাই মারা যাবে।'‌ খুব বিরক্তভাবে যাদব তাঁর বাবার চটি জঞ্জাল ফেলার জায়গায় ফেলে দেন এবং বিড়বিড় করে বলতে থাকেন, '‌পুরো একটা মানুষকে খেয়ে ফেলল, জুতো নিয়ে কি করব।' এই হাসপাতালেই ভর্তি দু'‌জন কোভিড রোগীর পরিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য আর্জি জানান। এক কোভিড রোগীর পরিবারের সদস্য বলেন, '‌এখানো সম্পূর্ণভাবে গাফিলতি করা হয়। সাফাই কর্মী, যিনি রোগীর স্নায়ু দেখতে জানেন না, অক্সিজেন স্তর বা কি ওষুধ দেওয়া হবে সে বিষয়ে জ্ঞান নেই, তিনি রোগীর যত্ন নিচ্ছেন।'‌ তিনি এও বলেন, '‌চিকিৎসক ও নার্সদের কোথাও দেখা যায়নি। বরং আমাদের রোগী এটা ভোগার চেয়ে বাড়িতে মারা গেলে ভালো। সেটা হলে অন্তত আমরা শেষবারের মতো তাঁর মুখতো দেখতে পাব।' চিকিৎসক এবং নার্সরা অতিরিক্ত চাপের মুখে পড়ায় এটা সত্যি যে প্রায়শই রোগীদের অক্সিজেনের স্তরগুলি পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব ওয়ার্ড কর্মীদের উপর পড়ে এবং কোভিড রোগীদের পরিবার পর্যাপ্ত হাসপাতালের কর্মীদের অভাবে কেয়ারগিভারদের দিকে তাকিয়ে থাকেন। পিএমসিএইচের মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট ডাঃ আই এস ঠাকুর জানিয়েছেন যে দ্বিতীয় করোনার ওয়েভ সংক্রমণের পর থেকেই অতিরিক্ত চাপ এসে পড়েছে তবে তিনি আশাবাদী যে হাসপাতালের এই পরিস্থিতি শীঘ্রই শুধরাবে।

কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনায় নাগাড়ে বাড়ছে সংক্রমণ, এবার ছাড় নেই জেলারওকলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনায় নাগাড়ে বাড়ছে সংক্রমণ, এবার ছাড় নেই জেলারও

English summary
Despite having empty beds, no patient wants to be admitted to two government hospitals in Patna
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X