গ্রেফতারিকে ভয় পাই না, প্রতিবাদ জারি থাকবে; বললেন জেএনইউ ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষ
৫ জানুয়ারি জেএনইউ-তে হিংসার ঘটনায় বহিরাগতদের যোগ নস্যাৎ করে শুক্রবার দিল্লি পুলিশ জানায়, হিংসায় জড়িতদের মধ্যে তারা জেএনইউ ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষকে চিহ্নিত করেছেন। এরপরেই দিল্লি পুলিশের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঐশী দাবি করেন, তিনি মুখোশ পরে ছিলেন না। বরং তিনিই আক্রান্ত হয়েছিলেন। পাশাপাশি গ্রেফতারি নিয়ে তিনি ভয় পান না বলে জানিয়ে দিলেন। ঐশী বলেন, 'আমার ভয় পাওয়ার কী আছে? আমি গ্রেফতার হতে তা আমার জন্যে একটি নতুন অভিজ্ঞতা হবে।'
ঐশীর বক্তব্য
ঐশী ঘোষ এদিন বলেন, আইন ব্যবস্থার প্রতি তাঁর সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। কেননা তাঁরা কোনও অবিচার করেননি। দিল্লি পুলিশ ফুটেজ প্রকাশ করলেই কাউকে এইভাবে সন্দেহভাজন করা যায় না। তাদের পক্ষের কেউই কোনও অন্যায় করেননি, দাবি করেন তিনি। ঐশী ঘোষের দাবি, তাঁদের প্রতিবাদ জারি থাকবে। তাঁর অভিযোগ অমিত শাহের নির্দেশে কাজ করছে দিল্লি পুলিশ।
দিল্লি পুলিশের দাবি
শুক্রাবর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিল্লি ক্রাইম ব্রাঞ্চের ডিসিপি জয় তির্কে জানান যে বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তারা এখনও পর্যন্ত ৯ জনকে চিহ্নিত করতে পেরেছে যারা হিংসার ঘটনায় জড়িত ছিল। এদের অনেকেই পেরিয়ার হস্টেলে হামলা চালানোর ঘটনায় জড়িত। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন ঐশী। এই বিষয়ে সাংবাদিকদের সামনে সিসিটিভি ফুটেজের প্রিন্টআউটও দেখান ডিসিপি।
দিল্লি পুলিশের দুটি এফআইআর-এ ঐশীর নাম
জেএনইউ ক্যাম্পেসে ঘটা তাণ্ডবের ঘটনায় সোমবার এফআইআর নেয় দিল্লি পুলিশ। পাশাপাশি তারা জানিয়েছে যে অভিযুক্ত দুষ্কৃতীদের বিভিন্ন ভিডিও দেখে শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে তারা। এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির ডিসিপি দেবেন্দ্র আচার্য এই বিষয়ে বলেন, 'আমরা সিসিটিভি ফুটেজ ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিও খতিয়ে দেখে দোষীদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়াশুরু করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে আমরা এফআইআর করেছি।' ইতিমধ্যেই দিল্লি পুলিশ তাদের দুটি এফআইআর-এ ঐশীর নাম করেছে।
ঘটনার সূত্রপাত
হস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে সম্প্রতি সরব হয়েছিল জেএনইউ। সেই রেশেই রবিবার সন্ধ্যে ৬টা নাগাদ শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেন জেএনইউএর টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন। সেখানেই শুরু হয় অতর্কিত হামলা। ঘটনার কথা জানিয়ে পুলিশকে ডাকা হলে ক্যাম্পাসে আসে প্রায় ৭০০ পুলিশকর্মী। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সাড়ে সাতটা নাগাদ। যদিও তাণ্ডব তখনও চলছে। অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সামনে অ্যাম্বুলেন্স ভাঙা হলেও পুলিশ চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল। শুধু মাঝে মাঝে একজন দুজনকে পুলিশ আটকাচ্ছিল। তবে তারা কোনও দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়নি। এদিকে ঘটনায় জখম হয়ে এইমস-এ ভর্তি হয় ৩৪ জন ছাত্র ও শিক্ষক। তাদের মধ্য ঐশী ঘোষের মাথায় ১৫টি সেলাই পড়েছে। তবে অশান্তি ছড়ানোর দায়ে তাঁরই বিরুদ্ধে এবার অভিযোগ দায়ের করল দিল্লি পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভার রুমে ভাঙচুর চালিয়েছেন।