লাগাতার ছাত্র আন্দোলনের চাপে অবশেষে বর্ধিত হোস্টেল ফি আংশিক প্রত্যাহার জেএনইউ কর্তৃপক্ষ
লাগাতার ছাত্র আন্দোলনের চাপে অবশেষে বর্ধিত হোস্টেল ফি আংশিক প্রত্যাহার জেএনইউ কর্তৃপক্ষ
গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার ছাত্র আন্দোলনের চাপে অবশেষে পিছু হটলো জওহরলাল নেহেরু বিশ্বপবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসি বৈঠকের পরে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল অংশের শিক্ষার্থীদের জন্য বর্ধিত হোস্টেল ফি আংশিক বাবে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিল কর্তৃপক্ষ।
আগের নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রত্যেক পড়ুয়া পিছু সার্ভিস চার্জ ধার্য্য করা হয়েছিল ১৭০০ টাকা, যা এর আগে ছিল না বলে জানা গেছে। হোস্টেল ভাড়া প্রায় ২৫ থেকে ৩০ গুণ বৃদ্ধি পায়। সিঙ্গেল রুমের ভাড়া ২০ টাকা থেকে ভাড়া বেড়ে হয়েছিল ৬০০ টাকা। ডবল রুমের ক্ষেত্রে সেই ভাড়া ১০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছিল ৩০০ টাকা। এবং এককালীন মেস সুরক্ষা হিসেবে ছাত্রছাত্রীদের দিতে বলা হয়েছিল ১২,০০০ টাকা যা আগে ছিল ৫,৫০০ টাকা।
আর কর্তৃপক্ষের এই খামখেয়ালী সিদ্ধান্তের পরই গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই চলে ছাত্র বিক্ষোভ। মঙ্গলবার জল কামান, লাঠি চার্জ করে বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে সরকার। এরপর বুধবার আন্দোলন আরও তীব্রতর হলে এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক ক্যাম্পাসের বাইরে স্থানান্তরিত করতে হয়। এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের (ই.সি) বৈঠকে এরপর বর্ধিত হোস্টেল ফি বৃদ্ধির আংশিক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে।
এই প্রসঙ্গে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সভাপতি ডঃ শুভ্রমাণ্যম একটি টুইট বার্তায় জানান, "জেএনইউয়ের কার্যনির্বাহী কমিটি বর্ধিত হোস্টেল ফি আংশিক প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছে। অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখেই মূলত প্রস্তাব দেওয়া হয়েচে। এবার ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার পালা।"
আংশিক হোস্টেল ফি প্রত্যাহার করা হলেও জারি থাকছে আন্দোলন
জেএনইউর কার্যনির্বাহী কমিটির নতুন প্রস্তাবের আওতায় ডবল রুমের ভাড়া, যা প্রতি মাসে ১০টাকা থেকে বাড়িয়ে প্রতি মাসে ৩০০ টাকা করা হয়েছিল, তা এখন প্রতি মাসে ১০০ টাকা করা হয়েছে। সিঙ্গেল রুমের ভাড়া, যা প্রতি মাসে ২০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা প্রস্তাবিত হয়েছিল, তা প্রতি মাসে ২০০ টাকা করা হয়েছে। যদিও এককালীন মেস সুরক্ষা ফি তে কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। যা ইতিমধ্যেই ৫,৫০০টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২,০০০টাকা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। একই সাথে সার্ভিস চার্জের কোনও পরিবর্তন না করায় বিতর্ক আরও দানা বাধে। ছাত্রছাত্রীরা এই কর্তৃপক্ষের বর্তমান এই সিদ্ধান্তকে টোপ হিসাবে আখ্যা দিয়ে 'ললিপপের' সাথে তুলনা করে। পাশাপাশি যতক্ষণ না তাদের সম্পূর্ণ দাবি গুলি মেনে নেওয়া হচ্ছে ততক্ষন আন্দোলন অব্যাহত রাখার ডাক দিয়েছে তারা ।
ইসি বৈঠকে অনুপস্থিত ৮ সদস্য
জেএনইউ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (জেএনটিএ) বিক্ষোভকারী ছাত্রদের সমর্থন জানিয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি করেছিল। পাশাপাশি পুনে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট(এফটিআইআই), বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (বিএইচইউ) এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও জেএনইউয়ের আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সমর্থন জানিয়েছেন। হোস্টেল ম্যানুয়ালে পরিবর্তন না দেখা পর্যন্ত হওয়া পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে আন্দোলনরত এক ছাত্র জানিয়েছেন, " এটি সামান্য পরিবর্তন মাত্র, আমরা এই ইসিকেই বৈধই মনে করিনা, কারণ প্রশাসনের তরফ থেকে স্থান পরিবর্তনের জন্য প্রায় ৮জন সদস্য বৈঠকে উপস্থিত থাকতেই পারেননি। "