হেমন্ত সোরেনকে টানা জেরা ইডির, ঝাড়খণ্ডে কোনদিকে গড়াচ্ছে পরিস্থিতি
অবৈধ খনি মামলায় ইডি হেমন্ত সোরনকে নয় ঘণ্টার বেশি জিজ্ঞাসাবাদ করল
অবৈধ কয়লাখনির মামলা ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরনকে ৯ ঘণ্টার বেশি জিজ্ঞাসাবাদ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ইডির দফতরে যাওয়ার আগে হেমন্ত সোরেন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানে তিনি বিরোধীদের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেন। ইডির তরফে আগেই ঝাড়খণ্ডে একটি অবৈধ খনি মামলায় ১০০০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছিল। সেই মামলাতেই ইডি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেমন্ত সোরেনকে তলব করেন।
ইডির জিজ্ঞাসাবাদের মুখে হেমন্ত সোরেন
অবৈধ খনির মামলায় প্রধান অভিযুক্ত পঙ্কজ মিশ্র। পঙ্কজ মিশ্রের নাম ওঠার পরেই ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের নাম চলে আসে। পঙ্কজ মিশ্রের বাড়ি থেকে একটি ব্ল্যাঙ্ক চেক বই পাওয়া গিয়েছিল। জানা গিয়েছে, ইডি মুখ্যমন্ত্রীকে ব্ল্যাঙ্ক চেক বই সম্পর্কে প্রশ্ন করে। পাল্টা হেমন্ত সোরেন জানিয়েছেন, ভোটের সময় পঙ্কজ মিশ্রকে তিনি বেশ কিছু নথি রাখতে দিয়েছিলেন। তার মধ্যে ওই চেক বইটা থাকতে পারে। হেমন্ত সোরেনের বিরুদ্ধে ইডি অভিযোগ করেছিল, বিচারবিভাগীয় তদন্তের সময় পঙ্কজ মিশ্রের জন্য একাধিক ব্যক্তিকে ইডি ফোন করেছিলেন। যদিও জিজ্ঞাসাবাদের সময় ইডি এই অভিযোগ অস্বীকার করে। জানা গিয়েছে, ইডির জিজ্ঞাসাবাদে হেমন্ত সোরেন জানিয়েছেন, অবৈধ খনি রুখতে তিনি কখনই ডিসিপি ও এসপিকে বাধা দেননি।
ইডির জিজ্ঞাসাবাদে অস্বস্তিতে ঝাড়খণ্ড সরকার
হেমন্ত সোরেন প্রেম প্রকাশকে চিনতে অস্বীকার করেন। প্রেম প্রকাশের বাড়ি থেকে অবৈধ একে ৪৭ উদ্ধার করা হয়। ইডি সূত্রের খবর এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে হেমন্ত সোরেন এড়িয়ে যান। প্রেম প্রকাশকে নিয়ে সরাসরি কোনও প্রশ্নের ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী উত্তর দেননি। ইডির তরফে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, কীভাবে খনির ইজারা দেওয়া হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে ইডির প্রশ্নের উত্তর দেননি। তিনি বলেন, এই খনির ইজারাকে ইস্যু করে বর্তমানে আদালতে মামলা চলছে। হেমন্ত সোরেনতাঁর সম্পত্তি, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট এবং বিনিয়োগ সম্পর্কে উত্তর দেওয়ার জন্য ইডির কাছে সময় চেয়েছিলেন।
হেমন্ত সোরেনের সাংবাদিক বৈঠক
বৃহস্পতিবার দুপুরে ইডির দফতরে যান হেমন্ত সোরেন। রাতে সাড়ে ৯টার কিছু পড়ে তিনি ইডির দফতর থেকে ছাড়া পান। রাত ৯টা নাগাদ হেমন্ত সোরেনের স্ত্রী ইডি দফতরে তাঁকে নিতে যান। ইডির দফতরে যাওয়ার আগে হেমন্ত সোরেন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, 'ইডি পাথর খনিতে ১০০০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ করেছে। পাথর খনির বার্ষিক আয় যদি হিসেব করি, সেক্ষেত্রে কখনই তা ১০০০ কোটি টাকা হয় না। আমি জানতে চাই ইডি কীভাবে ১০০০ কোটি টাকার হিসেব এনেছে।' পাশাপাশি তিনি বলেন, 'আমি একজন মুখ্যমন্ত্রী। একটি সাংবিধানিক পদে রয়েছি। কিন্তু এমনভাবে সমন জারি করেছে, যেন আমি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাব। আমার জীবনে কোনও রাজনৈতিক নেতা বা ব্যক্তিত্বকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে দেখেনি। কিন্তু একাধিক ব্যবসায়ীকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে দেখেছি।'