গান্ধী বিরোধী সুর চড়ছে কংগ্রেসে! সিব্বলের টুইটে ভাঙন রেখা ফুটে উঠল হাত-শিবিরে
ফের কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট পদে সনিয়া গান্ধীর উপস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ কপিল সিব্বলের। এদিন কপিল সিব্বল অভিমানের কম্বল জড়ানো এক টুইটে বুঝিয়ে দিলেন যে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরও কংগ্রেস এখনও স্থিতিশীল অবস্থায় পৌঁছায়নি। এবং অসন্তোষের আগুন এখন দলের অন্দরে ধিকধিক করে জ্বলছে।

কপিল সিব্বলের টুইট
এদিন কোনও বিষয় স্পষ্ট না করেই কপিল সিব্বল শুধু টুইট করেন, 'এটা শুধুমাত্র কোনও পোস্টের (কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট) বিষয় না, এটা আমার দেশের বিষয়, যাকে আমি সব থেকে বেশি ভালোবাশি।' আর এরপরই ফের জল্পনা শুরু হয় যে, রাহুল গান্ধীর সঙ্গে কথা বলে এক দফা শান্তি ফিরলেও দীর্ঘক্ষণ তা বিরাজ করল না। কারণ কংগ্রেসের ক্ষমতা এখনও সেই গান্ধীদের হাতেই রয়েছে।

রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের পর উত্তপ্ত হয় বৈঠক
গতকাল বিজেপির সঙ্গে দলীয় নেতাদের একাংশের যোগ রয়েছে। রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যের পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা গুলাম নবি আজাদ, কপিল সিবাল সহ অনেকেই এর প্রতিবাদ করেন।

রাহুলকে তোপ দেগেছিলেন কপিল
কপিল বলেন, 'বিগত ৩০ বছরে আমি একবারও বিজেপির পক্ষে মুখ খুলিনি। রাজস্থানে কংগ্রেসের সরকার বাঁচানোর পাশাপাশি মণিপুরেও দলের হয়ে লড়ছি। সেখানে বিজেপি সরকারের পতনের জন্যে চেষ্টা চালাচ্ছি। আর আপনি বলছেন আমরা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছি?'

সুরজেওয়ালা শান্ত করেন সিব্বলকে
এরপর সুরজেওয়ালা টুইট করে লেখেন, 'রাহুল গান্ধী এরম কোনও কথাই বলেননি বা এরম কোনও কথা বোঝাতেও চাননি। দয়া করে মিডিয়ার ভুল খবরে বিশ্বাস করবেন না। হ্যাঁ আমাদের সকলকেই একত্রিত হয়ে মোদী সরকারের বিরোধিতা করতে হবে। আমাদের নিজেদের মধ্যে লড়াই করা উচিত না তাতে কংগ্রেসের ক্ষতি।' এদিকে সুরজেওয়ালার এই টুইটের পরেই নিজের টুইটটি ডিলিট করে দেন কপিল সিব্বল। কপিল বলেন, রাহুল গান্ধী নাকি নিজে তাঁকে এই বিষয়ে বোঝান।

২৩ জন শীর্ষনেতা সনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখেছিলেন
প্রসঙ্গত, দলের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের দাবি জানায় শীর্ষ নেতৃত্ব। ২৩ জন শীর্ষনেতা এই মর্মে সনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখেছিলেন। পাশাপাশি তাঁরা ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের জন্যও আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁদের চিঠির উত্তরে সনিয়া গান্ধী জানিয়েছিলেন, বৈঠক হবে। সকলে মিলে নতুন সভাপতির খোঁজ করা হবে।

কংগ্রেসে অভ্যন্তরে বিদ্রোহের আগুন
যে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে তাতে স্বাক্ষর রয়েছে কপিল সিব্বল, শশী থারুর, গুলাম নবি আজাদ, পৃথ্বীরাজ চৌহান, বিবেক তানখা এবং আনন্দ শর্মার মতো প্রবীণ নেতাদের। দাবি করা হয়েছে, রাহুল গান্ধী যদি দলের সভাপতি পদ গ্রহণে ইচ্ছুক না হন তবে দলের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে উপযুক্ত নেতা বেছে নেওয়া হোক ৷ সংগঠনের শীর্ষনেতৃত্ব থেকে তৃণমূলস্তর,সব জায়গাতেই আমূল সংস্কারেরও দাবি তুলেছেন কংগ্রেসের ওই পোড়খাওয়া প্রবীণ নেতারাই৷

আজাদের বাড়িতে বৈঠক
এই নেতাদেরই ৯ জন ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পর আজাদের বাড়িতে বৈঠকে বসেন। যেই ২৩ জন নেতা চিঠি লিখেছিলেন, তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা শুধু চান দল যেভাবে ক্রমাগত নানা দিকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে, তার সমাধানে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং দলে সংস্কারের জন্য যেন উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে গতকালের বৈঠকের পর সেই সনিয়ার হাতেই থাকল ক্ষমতার ছড়ি, আর তাতেই অসন্তোষ আরও বাড়তে শুরু করেছে দলের অন্দরে।

বিদ্রোহের আগুনে পুড়বে 'হাত'! আজাদের বাড়িতে ৯ কংগ্রেস নেতার বৈঠক ঘিরে জোর জল্পনা