ঝাড়খণ্ডে তফসিলি, মুসলিম ও যাদব ভোটাররাই কি সম্মিলিতভাবে বিজেপিকে হারিয়ে দিল?
ভাবা হয়েছিল যে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার, রাম মন্দির ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের ফলে আরও উঠতে থাকবে বিজেপির রাজনৈতিক গ্রাফ। তবে দেখা গিয়েছে এর প্রভাব খুব একটা পড়েনি বিজেপির ঝুলিতে।
ভাবা হয়েছিল যে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার, রাম মন্দির ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের ফলে আরও উঠতে থাকবে বিজেপির রাজনৈতিক গ্রাফ। তবে দেখা গিয়েছে এর প্রভাব খুব একটা পড়েনি বিজেপির ভোট বাক্সে। উল্টে লোকসভা নির্বাচনের পর অনুষ্ঠিত হরিয়ানায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি পদ্ম শিবির। মহারাষ্ট্রে একক বৃহত্তম দল হলেও সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হয়। এই দুই তুলনামূলক নিম্নগামী গ্রাফের রেখার পর ঝাড়খণ্ডের নির্বাচন হয়ে দাঁড়ায় বিজেপির জন্য প্রেস্টিজের লড়াই।
বাকি দেশের থেকে আলাদা ঝাড়খণ্ড
ঝাড়খণ্ডের নির্বাচন অবশ্য বাকি দেশের নির্বাচন থেকে একটু আলাদা। এখানে বাকি হিন্দি বলয়ের মতো রাম মন্দির বা ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার অতটা প্রভাব ফেলে না। রাজ্যে মোট ২৬ শতাংশ তফশিলি উপজাতির ভোটার। পাশাপাশি ১২ শতাংশের কিছু বেশি ভোটার রয়েছে তফশিলি জাতিরও। বিজেপি চেয়েছিল বাকি ৬২ শতাংশ ভোটারের শিংহভাগ যেন তাদের ঝুলিতে আসে। হরিয়ানাতে এরকমভাবে অ-জাট ভোট বিজেপির ঝুলিতে আসাতেই ক্ষমতা দখল রাখতে সমর্থ হয়েছিল বিজেপি।
মুসলিম, যাদবদের ভোটও বিরোধী ঝুলিতে
এদিকে ৮১টির মধ্যে ৪১টি আসনে মুসলিম, যাদব ও তফসিলি ভোটার সংখ্যা বেশি। সেই ক্ষেত্রেও বিরোধীরা জোট গড়ায় এই ভোট ভাগ হচ্ছে না এবার। জএমএম-কংগ্রেস জোটের সঙ্গে আরজেডি থাকায় যাদব ভোটের সিংহভাগ যেতে পারে বিরোধীদের ঝুলিতে।
বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রচার
ঝাড়খণ্ডে ভোটপ্রচারে এসে কেন্দ্রীয় স্বররাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন যে চার মাসে মধ্যে গগনচুম্বী রামমন্দির তৈরি করবে তাদের সরকার। এদিকে প্রধানমন্ত্রী ভোটপ্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তুলেছিলেন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রসঙ্গ। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় স্তরের নেতারা এসে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার নিয়েও ভোট টানার চেষঅটা করেন। কিন্তু তাতে যে বিজেপির পালে খুব একটা হাওয়া লাগেনি তা প্রাথমিক প্রবণতাতেই স্পষ্ট হয়ে যায়।
তফসিলি ভোটের ভোটের জন্যে ঝাপায়নি বিজেপি
ঝাড়খণ্ড রাজনীতিতে রামমন্দির, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের কোনও প্রভাব তফসিলিদের উপর পড়ে না। হয়ত এই কারণেই দেশ জুড়ে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষওভের মাঝেও ঝাড়খণ্ডে এই সংক্রান্ত কোনও উত্তাপ নেই। আর এই বিষয়টা বিজেপির পক্ষে নির্বাচনে খুব একটা লাভদায়ক হয়নি এই রাজ্যে। রামমন্দিরের বিষয়টিও মূলত হিন্দি ভাষীদের মধ্যে কিছুটা প্রভাব ফেললেও উপজাতি ভোটাররা এর দ্বারা প্রভাবিত নয়। এর জেরেই হয়ত বিজেপি মূলত উপজাতিদের ভোটের জন্যে না ঝাপিয়ে জেনারেল কাস্টের ভোটকে এক করার দিকে বেশি সচেষঅট হয়েছিল।
একমাত্র সঙ্গী আজসুও সঙ্গে নেই
ঝাড়খণ্ডে এই মুহূর্তে বিজেপির একমাত্র শরিক হিসাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়ন (আজসু)। ঝাড়খণ্ডের ভোট ময়দানে আজসু ছাড়া বিজেপির সঙ্গ একে একে ছেড়ে দিয়েছে রামবিলাস পাসওয়ানের এলজেপি ও নীতীশ কুমারের জেডিইউ। এদিকে সঙ্গ না ছাড়লেও ঝাড়খণ্ডের ৮১টির মধ্যে ২৭টি আসনে বিজেপির বিপরীতে প্রার্থী দিয়েছে আজসু। প্রসঙ্গত, ২০০০ সাল থেকে বিজেপির সঙ্গে শরিক থেকেছে আজসু। সেই দিক দিয়ে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে বিজেপি।
'ভারতীয়রা গুগল করেই দেখতে পারেন'! 'ডিটেনশন সেন্টার' নিয়ে মোদীর মন্তব্যের জবাব কংগ্রেসের