অরুণ জেটলিকে চিঠি দিয়ে আইএনএক্স মিডিয়া কাণ্ডে স্বেচ্ছা সাক্ষী হতে চেয়েছিল ইন্দ্রাণী
অরুণ জেটলিকে চিঠি দিয়ে আইএনএক্স মিডিয়া কাণ্ডে স্বেচ্ছা সাক্ষী হতে চেয়েছিল ইন্দ্রাণী
আইএনএক্স মিডিয়া কাণ্ডে কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের পাশাপাশি জেলবন্দী হয়ে রয়েছেন এই মামলার অন্যতম সাক্ষী ইন্দ্রাণী মুখার্জি। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মামলায় অভিযুক্ত পি চিদম্বরম ও তাঁর ছেলে কার্তির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছায় সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ২০১৭ সালের জুলাই মাসে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে চিঠি লেখে ইন্দ্রাণী। এরপরই কেন্দ্রীয় সংস্থা তার সঙ্গে কথা বলবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়।
আইএনএক্স মিডিয়া কাণ্ড ও ইন্দ্রাণী মুখার্জি
২০০৭ সালে পি চিদম্বরম যখন অর্থমন্ত্রী ছিলেন সেই সময় আএনএক্স মিডিয়াকে ৪০৩.০৭ কোটি টাকার বৈদেশিক বিনিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে সরকারি অনিয়মের অভিযোগ ওঠে কংগ্রেস নেতা ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে। তাঁদের ফাঁসানোর জন্য ইন্দ্রাণী মুখার্জিকে সিবিআই বিবৃতি দিতে বাধ্য করেছে এমনটা মনে করার কোনও কারণ নেই। সাক্ষ্য ইন্দ্রাণী মুখার্জি ও তার স্বামী আইএনএক্স মিডিয়ার কর্ণধার। বর্তমানে তারা দু'জনেই তাদের মেয়ে শিনা বোরা হত্যাকাণ্ডের জন্য কারাবন্দী রয়েছে। কিন্তু এরাই পি চিদম্বরমের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণের কাজ করেছিল। দিল্লির তিহার জেলে বন্দী রয়েছেন কংগ্রেস নেতা। গত ২১ আগস্ট তাঁকে সিবিআই গ্রেফতার করে।
ইন্দ্রাণীর বয়ানেই ফাঁসলেন চিদম্বরম
আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীকে জেলে পাঠানোর জন্য অনেকাংশেই দায়ি ইন্দ্রাণী। কারণ সে ২০১৭ সালের জুলাইতে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে চিঠি দিয়ে এই মামলায় বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছায় সাক্ষ্য হতে চেয়েছিল। সেই চিঠি অরুণ জেটলি পাওয়ার পর তা সিবিআইয়ের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ বছরের আগস্টে আচমকাই মারা যান অরুণ জেটলি। যদিও কার্তি চিদম্বরম এ প্রসঙ্গে উল্টো সুরেই গান গেয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি জীবনে কোনওদিন ইন্দ্রাণী মুখার্জিকে দেখিনি। শুধুমাত্র ২০১৮ সালের মার্চ মাসে সিবিআই আমাকে জেরা করার জন্য বাইকুল্লা জেলে নিয়ে যায়, তখনই প্রথম আমি তাকে দেখি। জেরার সেই ভিডিও রেকর্ড করা আছে, সিবিআইয়ের উচিত তা প্রকাশ করা। আমি ইন্দ্রাণী মুখার্জিকে চিনি না এবং আইএনএক্স বা বৈদেশিক বিনিয়োগের ব্যাপারে কিছুই জানি না।' সাংসদ তথা বরিষ্ঠ আইনজীবী ডঃ অভিষেক মনু সিংভি আদালতে চিদম্বমরমের পক্ষে জানান, ইন্দ্রাণীর মতো সাক্ষীকে সিবিআই চাপ দিয়ে কংগ্রেস নেতা ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে বয়ান রেকর্ড করিয়েছে। আইএনএক্স মিডিয়া কাণ্ডের ১১ বছর পর কেন ইন্দ্রাণী মুখ খুলল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক মনু সিংভি। তিনি জানিয়েছেন, গত চার বছর ধরে ইন্দ্রাণী তার মেয়ের খুনের জন্য জেলে রয়েছে। এখনই তার আইএনএক্স মিডিয়া কাণ্ডের কথা মনে পড়ল।
অরুণ জেটলিকে চিঠি ইন্দ্রাণীর
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের ১২ জুলাই মুম্বইয়ের বাইকুল্লা জেল থেকেই অরুণ জেটলিকে চিঠি লেখে ইন্দ্রাণী। জেটলির কৈলাস কলোনির বাসভবন এবং তাঁর দিল্লির নর্থ ব্লকের অফিসের ঠিকানায় সেই চিঠি যায়। চিঠির প্রথমে ইন্দ্রাণী নিজের মেয়ের হত্যার জন্য যে জেলে বন্দী রয়েছে সেই কথা উল্লেখ করে এবং তার দাবি সে নির্দোষ এবং এই মামলা থেকে বেড়িয়ে আসার জন্য তাঁর সাহায্য চায়। এরপরই ইন্দ্রাণী আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় সাহায্য করা ইচ্ছা প্রকাশ করে। সে চিঠিতে লেখে, ‘আর একটি প্রসঙ্গ যেখানে আইএনএক্স মিডিয়া কাণ্ডে কার্তির বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে, আমি জানাতে চাই যে কার্তি ও পি চিদম্বরমের বিরুদ্ধে আমি কিছু বলতে চাই, যা সিবিআইকে সাহায্য করবে এই মামলায় এবং আমি স্বেচ্ছায় এই মামলায় সাক্ষী হতে চাই।'
চিঠিতে ইন্দ্রাণী আরও লেখে, ‘শিনা এবং আইএনএক্স মিডিয়া (কেসি এবং পিসি) সম্পর্কিত উভয় বিষয়েই আমি আপনার দিকনির্দেশনা চাই কারণ আমি আপনাকে একজন বন্ধু হিসাবে বিবেচনা করি এবং আপনি এমন এক ব্যক্তি যিনি সিস্টেমে কোনওরকম অবিচার বা দুর্নীতি সহ্য করবেন না বা অনুমতি দেবেন না। দয়া করে পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে আমাকে পরামর্শ দিন যাতে আমি আপনাকে এই ধরনের দুষ্কর্মের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে সাহায্য করতে পারি। আমার মেয়ে শিনার নিখোঁজ হওয়া এবং ২০১২ সালে তাঁর সম্ভাব্য মৃত্যুর বিষয়ে আমার নির্দোষতা প্রমাণ করতে সক্ষম হতে পারি। আমি আপনার জবাবের অপেক্ষায় রইলাম।' চিঠিতে তার ঠিকানাটি বাইকুলা মহিলা কারাগার হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সেই বছরের ১৫ মে কার্তির বিরুদ্ধে সিবিআই এই মামলায় অভিযোগ দায়ের করে। এফআইআরে পি চিদম্বরমের নাম না থাকলেও চার্জশিটে তাঁর নাম ছিল, যা এ বছরের ১৮ অক্টোবর পেশ করা হয়। যেখানে ইন্দ্রাণীকে রাজসাক্ষী হিসাবে দেখানো হয়েছে।
ইন্দ্রাণীর প্রথম বয়ান
এই চিঠিটি অরুণ জেটলির কাছ থেকে সিবিআই পাওয়ার পর ওই বছরের ৭ ডিসেম্বর তারা বাইকুলা কারাগারে ইন্দ্রাণী মুখার্জির সঙ্গে দেখা করে এবং তার রেকর্ড বয়ান করে।
রাজ্যে রুটি রুজির খোঁজ না পেলে আবারও পুরনো কাজে ফিরে যাওয়ার ভাবনা সদ্য কাশ্মীর ফেরত শ্রমিকদের
অধ্যাপকদের জন্য বেতন বৃদ্ধির সুখবর মমতার! জানালেন ইউজিসি হারে বেতন নির্ধারণ