শিনা বোরা হত্যা মামলা : মূল অভিযুক্ত ইন্দ্রাণীর গ্রেফতার থেকে জামিন, সাতবছরের কাণ্ডকারখানা একনজরে
শিনা বোরা হত্যা মামলা : প্রায় সাত বছর জেল খাটার পর জামিন মঞ্জুর ইন্দ্রাণীর
শিনা বোরা হত্যা মামলায় সাড়ে ৬ বছর পর জামিন মঞ্জুর হল তাঁর মা ও প্রধান অভিযুক্ত ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে। এদিন সিবিআই তাঁর জামিনের আদেশের কোনও বিরোধিতা করেনি। ফলে তিনি জামিন পেলেনে। আর তাঁর স্বামী পিটার মুখার্জি আর্থার রোড জেল থেকে বেরিয়ে আসেন দু-বছর আগে।
২০১২ সালের ২৩ মে স্থানীয় পুলিশ মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলায় একটি পচা-গলা দেহ উদ্ধার করে। সিবিআই পরে দাবি করে যে এটি শিনার মৃতদেহ। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে ২০১৫ সালের ২১ অগাস্ট ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের গাড়ির প্রাক্তন চালক শ্যামবর রাইকে বেআইনি অস্ত্র রাখার জন্য গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনিই তিন বছর আগে শীনার হত্যাকাণ্ড এবং এই ঘটনায় ইন্দ্রাণীর জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে পুলিশকে জানান।
এরপর ২০১৫ সালের ২৫ অগাস্ট ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশ। এরপর পরদিনই এই ঘটনায় ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খান্নাকে কলকাতায় গ্রেফতার করা হয়। এরপর নাম উঠে আসে কলকাতার বাসিন্দা সিদ্ধার্থ দাসের। তিনি ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের প্রাক্তন লাইফ পার্টনার। তিনি নিজেকে শিনা বোরার পিতা বলে নিজেকে দাবি করেন।
এই মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে স্থানান্তরিত হয় ২০১৫-র ১৮ সেপ্টেম্বর। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়, সঞ্জীব খান্না ও শ্যামবর রাইয়ের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করে। এরপর ২০১৫-র ১৯ নভেম্বর ইন্দ্রানীর তৎকালীন স্বামী পিটার মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই। এরপর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সিবিআই ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় এবং শ্যামবর রাইয়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। পরে অভিযোগপত্রে পিটার মুখোপাধ্যায়ের নাম যোগ করা হয়।
এরপর শুরু হয় বিচার। বিশেষ সিবিআই আদালত ইন্দ্রাণী, পিটার মুখোপাধ্যায় ও সঞ্জীব খান্নার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, অপহরণ, প্রমাণ নষ্ট করা এবং শিনা বোরা হত্যার পাশাপাশি মিথ্যা তথ্য দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করে। ২০১৯-এর ৪ অক্টোবর ইন্দ্রাণী ও পিটার মুখোপাধ্যায় কারাগারে থাকাকালীন একে অপরকে ডিভোর্স দেন। মুম্বইয়ের পারিবারিক আদালতে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁদের।
এরপর ২০২০-র ৬ ফেব্রুয়ারি পিটার মুখোপাধ্যায়ের জামিন মঞ্জুর করে বোম্বে হাইকোর্ট। এই মামলায় তার জড়িত থাকার কোন প্রাথমিক প্রমাণ নেই বলে জানায় আদালত। ওইদিন বোম্বে হাইকোর্ট ইন্দ্রানীর জামিনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। এরপর ২০২০-র ২০ মার্ত সিবিআই জামিন আদেশকে চ্যালেঞ্জ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে পিটার মুখোপাধ্যায় আর্থার রোড জেল থেকে বেরিয়ে আসেন। আর তার দু-বছর পর ২০২২-এর ১৮ মে ইন্দ্রাণী মুখ্যোপাধ্যায় জামিন পেলেন। প্রায় সাত বছর পর তিনি জামিন পেলেন।