জরুরি অবস্থার নিয়মবিধি নিয়ে কোনও ধারণা ছিল না ইন্দিরা গান্ধীর, বইতে দাবি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের
ওই বইতে প্রণববাবু লিখেছেন, শুধুমাত্র আভ্যন্তরীন নিরাপত্তার ভিত্তিতে যে জরুরি অবস্থা জারি করা যায় তা জানতেন না ইন্দিরা গান্ধী। সিদ্ধার্থ শংকর রায়কে ইন্দিরা অনুরোধ করেছিলেন তাঁর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়ার জন্য। রাষ্ট্রপতি এসএস রায়কে সংবিধান অনুসারে সঠিক শব্দ প্রয়োগ করতে বলেন এবং প্রধামন্ত্রীকে তার সুপারিশ করতে বলেন। আর তার ফলেই বিরোধী নেতাদের জেলে পোরা হয়, বহু প্রতিবন্ধকতা আরোপ করা হয় গণমাধ্যমের উপর। যাকে গণতন্ত্রের অন্ধকারময় অধ্যায় বলে ব্যাখ্যা করা হয়।
লেখকের দাবি, কিন্তু সিদ্ধার্থশংকর রায় সেইসব নেতাদের মধ্যে একজন যিনি জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে গঠিত হওয়া শাহ কমিশনের সামনে একেবার ভোল পাল্টে ফেলে সমস্ত দায় ইন্দিরা গান্ধীর উপরই চাপিয়ে দেন।
প্রণব মুখোপাধ্যায়ের এই বই থেকে বেশ কিছু গোপন তথ্য জানা গিয়েছে। যেমন, জরুরি অবস্থায় যাবতীয় দায় নিজের কাঁধে নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখেছিলেন ইন্দিরা। জানিয়েছিলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমস্ত দায় তাঁর ক্যাবিনেটে আলোচনা না করেই এই সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছিলেন।
রাষ্ট্রপতি বইতে স্পষ্টভাবেই লিখেছেন জরুরি অবস্থাকে এড়িয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ছিল। যদিও তিনি এও জানিয়ছেন যে, এই ঘটনার ইতিবাচক দিকও ছিল কিছু। যেমন, জনজীবনে অনুশাসন, অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি, মুদ্রাস্ফীতির নিয়ন্ত্রণ, বাণিজ্য ঘাটতির পরিবর্তন, উন্নয়নে খরচের বৃদ্ধির পাশাপাশি করফাঁকি, চোরাচালাও ও পাচারও নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছিল।
২০১২ সালে রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। ভারতীয় রাজনীতির বরিষ্ঠ ও অন্যতম অভিজ্ঞ ব্যক্তি প্রণববাবু। অর্থ, প্রতিরক্ষা, বিদেশ মন্ত্রক সামলেছেন। তার লেখা এই বই ভারতীয় রাজনীতির অনেক অজানা তথ্যের দলিল হয়ে উঠে এসেছে।