নতুন বছরের শুরুতেই দরপত্র আহ্বান, ১০০ রুটে চলবে ১৫০ বেসরকারি ট্রেন
সারা দেশ জুড়ে ১০০ টি রুটে ১৫০ বেসরকারি প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালানো হবে। এই রুটগুলির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে নতুন বছরের শুরুতেই। এমনটাই জানিয়েছেন ভারতীয় রেলের এক আধিকারিক। ইতিমধ্যেই অর্থ মন্ত্রকের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অ্যাপ্রাইসাল কমিটি ১৯ ডিসেম্বর বিষয়টিতে তাদের অনুমোদন দিয়েছে। ফলে দেশে রেলে বেসরকারিকরণের জন্য দরজা কার্যত খুলে গিয়েছে। আর এরই পাশাপাশি গাড়ি চালানো নিয়ে ভারতীয় রেলের একাধিপত্যও শেষ হতে বসেছে। অন্যদিকে, এই কাজে দেশের সাধারণ মানুষের কতটা উপকার হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

চিহ্নিত দূরপাল্লার রুট
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দূরপাল্লার যেসব রুটগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, মুম্বই-কলকাতা, মুম্বই-চেন্নাই, মুম্বই-গুয়াহাটি, নিউদিল্লি-মুম্বই, তিরুবানন্তপুরম-গুয়াহাটি, নিউদিল্লি-কলকাতা, নিউদিল্লি-বেঙ্গালুলরু, নিউদিল্লি-চেন্নাই, কলকাতা-চেন্নাই, কলকাতা-যোধপুর।
এছাড়াও অন্য রুটগুলি হল মুম্বই-বারাণসী, মুম্বই-পুনে, মুম্বই-লখনৌ, মুম্বই-নাগপুর, নাগপুর-পুনে, সেকেন্দ্রাবাদ-বিশাখাপত্তনম, পাটনা-বেঙ্গালুরু, পুনে-পাটনা, চেন্নাই-কোয়েম্বাটোর, চেন্নাই-সেকেন্দ্রাবাদ, সুরাট-বারাণসী, ভুবনেশ্বর-কলকাতা। এছাড়াও নিউ দিল্লি থেকে পটনা, এলাহাবাদ, অমৃতসর, চণ্ডীগড়, কাটরা, গোরক্ষপুর, চাপড়া, ভাগলপুরের মধ্যে সংযোগকারী রুট নির্বাচিত রুটগুলির তালিকায় রয়েছে।

মেট্রো শহরগুলির সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগকারী রুট
রুটগুলি চিহ্নিত করার সময় সেগুলির বাণিজ্যিক বাস্তবতার দিকেও লক্ষ্য রাখা হয়েছে। অর্থাৎ সেই রুটে বেসরকারি সংস্থা ট্রেন চালালে কতটা লাভবান হবে, তাও খতিয়ে দেখা হয়েছে। এই ১০০ তালিকায় রয়েছে, নতুন দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগকারী ৩৫ টি রুট, মুম্বইয়ের সঙ্গে যোগাযোগকারী ২৬ টি রুট, কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগকারী ১২ টি রুট, চেন্নাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগকারী ১১ টি রুট, বেঙ্গালুরুর সঙ্গে যোগাযোগকারী ৮ টি রুট।

তালিকায় রয়েছে দেশের বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য শহরও
রুট বেসরকারিকরণের তালিকায় দেশের কয়েকটি অন্য শহরও রয়েছে, যেগুলি মেট্রোশহর হিসেবে পরিচিত নয়। তার মধ্যে রয়েছে, গোরক্ষপুর-লখনৌ, কোটা-জয়পুর, চণ্ডীগড়-লখনৌ, বিশাখাপত্তনম-তিরুপতি, নাগপুর-পুনে।
যোগাযোগ করা হলে রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান বিনোদকুমার যাদব জানিয়েছেন, বেসরকারি ট্রেনের জন্য রুট চিহ্নিত করার কথা। তিনি জানিয়েছেন, ১৫০ টি ট্রেনের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আইআরসিটিসির তেজস এক্সপ্রেসে সাফল্য
ট্রেনটি ৫ অক্টোবর বানিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরুর পর থেকেই মোট আসনের ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ ভর্তিই থাকছে। অক্টোবরের ৫ থেকে ২৮, ২১ দিনে( সপ্তাহের ছয় দিন চলে এই ট্রেন) ট্রেন চালাতে আইআরসিটিসির খরচ হয়েছে ৩ কোটি টাকা। ভারতীয় রেলের সহযোগী এই সংস্থা গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা খরচ করে এই ট্রেন চালাতে। অন্যদিকে যাত্রী ভাড়া বাবদ তাদের আয় হয় ১৭.৫০ লক্ষ টাকা। সহযোগী সংস্থা আইআরসিটিসির হাত ধরেই ভারতীয় রেল লখনৌ এবং নয়াদিল্লির মধ্যে বেসরকারি পর্যায়ে ট্রেন চালানো শুরু করেছে। এই ট্রেনে আইআরসিটিসির দেওয়া সুবিধার মধ্যে রয়েছে, খাবার, ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিমা এবং ট্রেন লেটে ক্ষতিপূরণ।