মানব পাচার সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে তৈরি হলো বিশেষ ফোরাম
অবৈধ হলেও দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ভারতে মানব পাচার এখন একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে এবার মানব পাচার রোধে তৈরি হলো বিশেষ ফোরাম। পাচারকারীদের হাত থেকে উদ্ধার পাওয়া সাতটি রাজ্যের প্রায় ২,৫০০ জনেরও বেশি মানুষের প্রতিনিধিত্বে গতকাল তৈরি হলো মানব পাচার বিরোধী ইন্ডিয়ান লিডারশীপ ফোরাম বা (আইএলএফএটি)। ফোরামটি মানব পাচার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এই বিষয়ে নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রেও সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো বা এনসিআরবি তথ্য অনুসারে, ২০১৬ সালে পাচার হওয়া পাঁচজনের মধ্যে গড়ে তিনজনের বয়সই ১৮ বছরের কম। এর মধ্যে ৪,৯১১ জন মেয়ে এবং ৪,১২৩ জন ছেলে ছিল বলেও জানা যায়। এনসিআরবির তথ্য আরও জোরের সঙ্গে প্রমাণ করছে ভারতে শিশু শ্রমের পরে পতিতাবৃত্তির জন্যই ভারতে সর্বাধিক মানব পাচার হয়ে থাকে।
অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা তথা আইএলএফএটি-র অন্যতম সদস্য হাসিনা মাত্র ১৩ বছর বয়সে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েন। চরম দারিদ্র পরিবারের মেয়ে হাসিনাকে এরপর তিন বছর ধরে বিভিন্ন পানশালায় নাচের কাছে ব্যবহার করা হয়। এই প্রসঙ্গে হাসিনা বলেন “পরবর্তীকালে আমি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে হই এবং দুই বছরের মধ্যে দুই সন্তানের মা হয়ে যাই। বিয়ের পর থেকেই আমার স্বামী নিয়মিত আমাকে উত্ত্যক্ত করত। এই সময় আমার পরিবারও আমাকে সমর্থন করেনি। আমার আর কোথাও যাওয়ার ঠিকানা না থাকায় শুধুমাত্র বাচ্চা দুটোর মুখের দিকে তাকিয়ে আবার ওই পেশায় ফিরে যাই। তখন পুনরায় আমাকে ১০০০টাকা দিয়ে মেলে মাথা গোঁজার ঠাঁই।" বর্তমানে স্থানীয় একটি এনজিওর সহায়তায় তিনি সুস্থ ভাবে বাঁচার পথ খুঁজে পেয়েছেন। এনজিওর কাজের দৌলতে তার উপার্জিত অর্থের সাহায্যেই এখন তার সংসার চলে।
হাসিনার মতোই এই বিশেষ ফোরামে মহিলা পুরুষ নির্বিশেষে থাকছেন একাধিক ব্যক্তি যারা আগামীতে মানব পাচার রোধে ও এই সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নিরলস ভাবে কাজ করে যাবেন।