গ্যালাক্সি আবিষ্কার ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের, ছায়াপথে গঠিত হচ্ছে নতুন তারার দল
গ্যালাক্সি আবিষ্কার ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের, ছায়াপথে গঠিত হচ্ছে নতুন তারার দল
ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছে একটি গ্যালাক্সি। এই তারকা-গঠনকারী গ্যালাক্সি আবিষ্কার বলেও তা এখনও পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি। গ্যালাক্সিটি একটি বড় ও উজ্জ্বল ছায়াপথের সামনে লুকিয়ে ছিল। আদতে ভূতের মতো চেহারা ওই গ্যালাক্সিটির। গ্যালাক্সিটিতে মিলেছে নক্ষত্রের ইঙ্গিত। এবং তা সৌরজগতের থেকে খুব বিশেষ দূরে নয়।
মাত্র ১৩৬ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে নতুন গ্যালাক্সি
মাত্র ১৩৬ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে এই মহাজাগতিক বস্তু উদ্ধার হয়েছে। একটি পরিচিত ইন্টারেক্টিং গ্যালাক্সি নিয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে গবেষণা করছিলেন বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের গবেষকরা। তাঁরা গ্যালাক্সিটির মধ্যে নক্ষত্রের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করেন। ওই লুকানো গ্যালাক্সির প্রথম ইঙ্গিত এসেছিল যখন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেছিলেন যে, এনজিসি ৬৯০২এ গ্যালাক্সির দক্ষিণ-পশ্চিম বাইরের অঞ্চলের রঙিন চিত্রটি নীল নির্গমনকে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
অতিরিক্ত আলো দেখে গবেষকরা অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যটি তদন্তে
এনজিসি ৬৯০২এ গ্যালাক্সির দক্ষিণ-পশ্চিম বাইরের অঞ্চলের রঙিন চিত্রটি নীল নির্গমনগুলি ও এবং বি প্রকৃতির নক্ষত্র থেকে আসছিল বলে অনুমান করেন বিজ্ঞানীরা। ওই গ্যালাক্সির সবথেকে বড় তারা এবং ছায়াপথের সবথেকে স্বল্পস্থায়ী তারা বলে বর্ণনা করা হয় ওই নীল নির্গমণকে। এই অতিরিক্ত আলো গবেষকদের অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যটি তদন্ত করতে প্ররোচিত করেছিল।
ক্ষীণ ছায়াপথগুলি মহাবিশ্বের ভরের ১৫ শতাংশ
ছায়াপথটিকে নিম্নপৃষ্ঠের উজ্জ্বলতা দ্বারা শ্রেণিবদ্ধ করা হয়, যা আশেপাশের রাতের আকাশের থেকে কমপক্ষে দশগুণ ক্ষীণ। অপটিক্যাল টেলিস্কোপগুলি যত বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠছে, তারা এই ছায়াপথগুলি থেকে নির্গত ক্ষীণ উজ্জ্বলতা তুলে নিতে সক্ষম হয়েছে। গবেষকরা বলেন, এই ধরনের ক্ষীণ ছায়াপথগুলি মহাবিশ্বের ভরের ১৫ শতাং পর্যন্ত হতে পারে।
নীল নির্গমনটি একটি ফোরগ্রাউন্ড গ্যালাক্সি থেকে আসে
গবেষকরা এনজিসি-৬৯০২এ'র দূরত্ব পরিমাপ করেছেন। পূর্ব পরিচিত একটি গ্যালাক্সি এবং বর্ণালীর নির্গমন লাইন ব্যবহার করে অস্পষ্ট তারকা-গঠনকারী অঞ্চল আবিষ্কার করেছেন তাঁরা। এই তারা-গঠনকারী অঞ্চলগুলি প্রায় ১৩৬ মিলিয়ন আলোকবর্ষের দূরত্বে রয়েছে, যেখানে এনজিসি-৬৯০২এ-র দূরত্ব প্রায় ৮২৫ মিলিয়ন আলোকবর্ষ। এর মানে হল যে, বিচ্ছুরিত নীল নির্গমনটি একটি ফোরগ্রাউন্ড গ্যালাক্সি থেকে হয়েছিল।
মহাবিশ্বের ভরের পাঁচ শতাংশ ব্যারিওনিক পদার্থ
'অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স' জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটি সম্পর্কে বলা হয়েছে একইরকম বিচ্ছুরিত গ্যালাক্সি থাকতে পারে, যেগুলিকে ফোরগ্রাউন্ড বা ব্যাকগ্রাউন্ড গ্যালাক্সির সঙ্গে সুপারপজিশনের কারণে মিথস্ক্রিয়া গ্যালাক্সি হিসাবে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। জ্যোতি যাদব, মৌসুমী দাস এবং সুধাংশু বারওয়ে, কলেজ ডি ফ্রান্সের ফ্রাঙ্কোয়েস কম্বসের সাথে এই গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন। গবেষকরা বলেছেন যে আমরা আমাদের চারপাশে যে উপাদানগুলি দেখি তা ব্যারিওনিক পদার্থ হিসাবে পরিচিত। মহাজাগতিক গবেষণায় দেখা যায় যে ব্যারিওনিক পদার্থ মহাবিশ্বের ভরের পাঁচ শতাংশ হওয়া উচিত।
মহাকাশে হাঁটছেন নভশ্চর, আসাধারণ ছবি! নয়া কীর্তি গড়লেন স্পেস-ফোটোগ্রাফার