চিনের গতিবিধি বুঝতে নয়া কৌশল! সেনাবাহিনীতে মান্দারিন ভাষা বিশেষজ্ঞ নিয়োগের পরিকল্পনা
চিনের গতিবিধি বুঝতে নয়া কৌশল! সেনাবাহিনীতে মান্দারিন ভাষা বিশেষজ্ঞ নিয়োগের পরিকল্পনা
পূর্ব লাদাখে ইন্দো-চিন সীমান্তে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। মান্দারিন ভাষা বিশেষজ্ঞদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগের পরিকল্পনা করা হয়েছে। লাদাখ সীমান্তে চিনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী মান্দারিন ভাষা বিশেষজ্ঞদের নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
সেনাবাহিনীতে মান্দারিন ভাষা বিশেষজ্ঞ নিয়োগ
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পাঁচজন সাধারণ নাগরিক ও একজন প্রাক্তন সেনা আধিকারিককে মান্দারিন ভাষা বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগ করা হবে। ৩,৪০০ কিলোমিটারের বেশি অঞ্চল জুড়ে ভারত-চিন সীমান্ত রয়েছে। সেখানে নজরদারি বাড়ানোর কৌশল হিসেবে সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে মান্দারিন ভাষার ওপর জোর দেওয়া শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। সূত্রের খবর, মধ্যপ্রদেশের পঞ্চমড়িতে সামরিক প্রশিক্ষণ স্কুল ও দিল্লির স্কুল অফ ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজে মন্দারিন ভাষা বিশেষজ্ঞদের চাকরি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেনারা মান্দারিন ভাষা আদৌ আয়ত্ত করতে পারছে কি না, তা পরখ করে দেখা হচ্ছে।
সেনাবাহিনীতে মান্দারিন ভাষার প্রয়োজনীয়তা
সেনাবাহিনীতে মান্দারিন ভাষায় প্রয়োজনীয়তা ক্রমেই বাড়ছে। দুই বছর আগে গালওয়ান উপত্যকায় দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর দুই দেশের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ আধিকারিকরা একাধিকবার বৈঠকে বসেন। সেখানে মান্দারিন ভাষা বিশেষজ্ঞদের প্রয়োজনীয়তা বেশি করে অনুভব হয়। এছাড়াও সীমান্তে চিনা সেনাবাহিনীকে নিজেদের কথা পরিষ্কার করে বোঝানোর জন্য ভারতীয় সেনাদের মান্দারিন ভাষা জানা প্রয়োজন। এছাড়াও দুদেশের বাহিনীর কোর কমান্ডার পর্যায়ে আলোচনা, ফ্ল্যাগ মিটিং, বর্ডার পার্সোনাল মিটিং বা যৌথ সামরিক মহড়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে। এছাড়া চিনা সেনাবাহিনী তাদের গতিবিধি বোঝাতে চাইলে, মান্দারিন ভাষা জানা থাকলে ভারতীয়দের সুবিধা হবে।
ইন্দো-চিন সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ার কারণ
২০২০ সালে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পূর্ব লাদাখের ইন্দো-চিন সীমান্ত। লাদাখে ভারতের একটি প্রকল্প নিয়ে প্রথমে চিন আপত্তি জানায়। ভারত লাদাখের সীমান্তে রাস্তা তৈরির কাজ করে। যার ফলে খুব সহজেই এলএসি বা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সহজে সেনাবাহিনী আনা সম্ভব হবে। ভারত চিনের আপত্তি গ্রাহ্য করে না। এরপরে চিনও অবৈধভাবে দখল নেওয়া লাদাখের অংশে অবৈধ নির্মাণ শুরু করে। ঘটনার জেরে সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। দুই দেশের সেনাবাহিনী সীমান্তে সেনা মজুত করতে শুরু করে।
গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষ
গালওয়ান উপত্যাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুই দেশের সেনারা। ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনা সেনারা প্রবেশ করে বলে অভিযোগ। এরপরেই গালওয়ান সীমান্তে দুই দেশের সেনারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ঘটনার জেরে ভারতের ২০ জন সেনার মৃত্যু হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়, লাল ফৌজের কয়েকজন সেনা ও এক আধিকারিকের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু চিনা প্রশাসন এই বিষয়ে কোনও বিবৃতি দেয়নি। তারপর থেকে কূটনৈতিকভাবে এবং সামরিরকভাবে একাধিকবার চিনের আধিকারিকদের সঙ্গে ভারতীয় আধিকারিকদের বৈঠক হয়।
নাগাড়ে বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতি, ঘরছাড়া ৩ হাজার, লাল সতর্কতা জারি করল IMD