চিরতরে বদলে যাবে সীমান্তরেখা, লাদাখ নিয়ে নয়া চিন্তার মাঝেই নেওয়া হতে পারে সামরিক পদক্ষেপ
সীমান্ত থেকে চিন যতক্ষণে সেনা প্রত্যাহার করছে ততক্ষণ ভারতীয় সেনা এলএসিতে আগের মতো আর টহল দিতে যেতে পারছে না। আর এতেই বেড়েছে চিন্তা। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা কী তবে চিরতরে বদলে যাবে। ভারত যদিও দাবি করছে যে চিনা সেনা প্রত্যাহার সম্পূর্ণ হলেই ফের টহলদারি চালু করবে ভারত, তবে সেনার মধ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে আশঙ্কার ভূত।
প্যাংগংয়ে চিনা নির্মাণ কাজ
সম্প্রতি, একটি স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যায় যে প্যাংগং সোতে চিনের সেনা নির্মাণ কাজ করছে। হটস্প্রিং থেকে সরে গেলেও নাছোড়বান্দা চিন এখনও অবস্থান করছে প্যাংগংয়ে। তাই লাদাখে ভারত-চিন উত্তেজনা কমার কোনও নাম নেই। এছাড়াও এলএসি বরাবর বিভিন্ন স্থানে ফের ভারত-চিন সেনার দূরত্ব মাত্র কয়েক মিটার। যার জেরে ফের ফের সীমান্তে উত্তেজনা বেড়েছে।
নাছোড়বান্দা চিন এখনও অবস্থান করছে প্যাংগংয়ে
হটস্প্রিং থেকে সরে গেলেও নাছোড়বান্দা চিন এখনও অবস্থান করছে প্যাংগংয়ে। লাদাখে ভারত-চিন উত্তেজনা কমার কোনও নাম নেই। যেই প্যাংগং সো নিয়ে এত বিতর্ক, সেখানে চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৫ এ ফিরে এসেছিল, তবে তারা এখনও ফিঙ্গার ৪-এর রিজলাইন দখল করে রয়েছে। চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৪ থেকে আঙুলের ৮-এর মধ্যে ৮-কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাজুড়ে তাদের তৈরি কাঠামোগুলিকেই এলএসি বলে দাবি করে যাচ্ছে এখনও।
সেনা মোতায়েন দুই দেশেরই
এরই মধ্যে জানা গিয়েছে যে লাদাখের খুব কাছেই চিন আরও ৪০০০০ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে। এই আবহেই এবার ভারতীয় নৌসেনা উত্তেরের বেসগুলিতে মিগ ২৯ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করল। এছাড়া উত্তর লাদাখে ভারত পি৮আই এয়ারক্রাফ্ট মোতায়েন করেছে। এই যুদ্ধবিমানগুলি সাবমেরিন প্রতিহত করতে সমর্থ। এর জবাবে লাদাখে আরও অতিরিক্ত তিন ডিভিশন সেনা মোতায়েন করবে ভারত। যেখানে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া চলছিল, ঠিক তখনই সেনার এই সিদ্ধান্ত খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এছাড়া ভারতীয় নৌসেনাও তাদের বেশ কয়েকটি মিগ ২৯ উত্তর ভারতের ফরোয়ার্ড বেসগুলিতে স্থানান্তর করেছে বলে খবর মিলছে।
তীক্ষ্ণ নজর রাখছে ভারত
চিনের তিন দফায় সেনা সরানোর প্রক্রিয়ার উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে ভারত। কোনও ভাবে যদি চিন সেই চুক্তি লঙ্ঘন করে তাহলে ভারতও থমকে যাবে। সেনা প্রত্যাহারের চুক্তি যাতে কোনও ভাবে লঙ্ঘন না করা হয় সেদিকে নজর রাখছে ভারতীয় সেনা। এর জন্য দিনের পাশাপাশি রাতেও বায়ুসেনার বিমান এবং চিনুক ও অ্যাপাচে হেলিকপ্টর টহল দিচ্ছে লাদাখের সীমান্ত জুড়ে।
ভারত-চিনের মধ্যে চাপা উত্তেজনা
টহলদারী সীমান্ত নিয়ে বরাবরই ভারত ও চিনের মধ্যে চাপা উত্তেজনা ছিল। ভারত বিশ্বাস করে 'ফিঙ্গার ১' থেকে 'ফিঙ্গার ৮' পর্যন্ত টহল দেওয়ার অধিকার রয়েছে তাদের এবং চিন মনে করে যে 'ফিঙ্গার ৮' থেকে 'ফিঙ্গার ৪' পর্যন্ত টহল দেওয়ার অধিকার রয়েছে তাদেরই।
ভারতকে রুখতে চিনের চাল
১৫ জুন, এই 'ফিঙ্গার ৪' এলাকাতেই উভয় পক্ষের সেনার মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ বাঁধে। পরে উভয় পক্ষের সীমানা যেখানে কয়েক হাজার ভারতীয় সৈন্যকে কাঁটাতারের সাথে জড়িত লাঠির মতো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছিল। 'ফিঙ্গার ৪'-এ এই জন্যেই উল্লেখযোগ্য হারে সেনার সংখ্যা বাড়িয়েছিল চিন যাতে ভারতীয় সেনারা আর 'ফিঙ্গার ৮' এর দিক দিয়ে টহল দেওয়ার সুযোগ না পায়।