ফের লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি চিনের! মাথা নত করবে না ভারত, স্পষ্ট বার্তা নয়াদিল্লির
ড্রাগন বাহিনীর রক্তচক্ষুর সামনে মাথা নত তো দূরের কথা সামরিক শক্তি বাড়িয়ে চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়েছে ভারত। বিগত ৫ মাস ধরে লাদাখে ভারত-চিন সীমান্তে উত্তেজনা অব্যাহত। স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে উভয়পক্ষই একাধিকবার জন্য কূটনৈতিক ও সামরিকস্তরে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছে। তবে শান্তি ফেরার আশা মাঝে মাঝে উঁকি দিলেও সেই আলো ফের হারিয়ে যায়।
১২ অক্টোবর ভারত ও চিনের সেনার মধ্যে বৈঠক হবে
১২ অক্টোবর ভারত ও চিনের সেনা আধিকারিকদের মধ্যে বৈঠক আছে৷ এর আগে ছ'বার সীমান্তে কর্পস কমান্ডার তরফে বৈঠক হয়েছে৷ যদিও এরই মাঝে চিন তাদের নির্মাণ কাজ এবং সেনা বাড়ানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে সেনা সূত্রে খবর মিলেছে। পাশাপাশি পিএলএ-র জন্য এক বিশেষ ধরনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে যা থেকে এটা স্পষ্ট যে শীতকালে চিন এলএসি বরাবর থাকবে। এবং পিছিয়ে যাওয়ার কোনও ইচ্ছাই তাদের নেই।
লাদাখের বেশ কিছু এলাকা নিজেদের এলাকা বলে দাবি করেছে চিন
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার এপারে লাদাখের বেশ কিছু এলাকা নিজেদের এলাকা বলে দাবি করেছে চিন। চিনের এই দাবি সমূলে নস্যাৎ করেছিল ভারত। দিল্লির থেকে বলা হয়, চিন ১৯৫৯ সাল থেকে যে দাবি করে এসেছে, তা পুরোপুরি একতরফা। বিদেশমন্ত্রক এবিষয়ে জানিয়েছে, উভয় দেশ একটি সাধারণ সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য এলএসি-র স্পষ্টতা এবং নিশ্চয়তার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার বিরোধী চিনের দাবি
কিন্তু চিনের একতরফাভাবে এলএসি নিয়ে দাবি করছে তা দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার বিরোধী। এর আগে চিন বলেছিল, নিয়ম বহির্ভূতভাবে লাদাখকে নিজেদের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বলে ঘোষণা করেছে ভারত। চিন এটা মানে না। এবং লাদাখের খুব কাছেই চিনের তরফে প্রায় ৫২ হাজার সেনা মোতায়েন করা রয়েছে বলে খবর।
ভারতের ঘাড়ে দোষ চাপানোর আপ্রাণ চেষ্টা
সীমান্তে চলতে থাকা উত্তেজনার দোষ ভারতের ঘাড়ে চাপানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে এসেছে চিন। তবে তাদের এই নয়া দাবিতে তারা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে একতরফা ভাবে সীমান্তের অবস্থান বদলানোর চেষ্টা করা হয়েছিল চিনের তরফেই। এবং ভারত নিজেদের জমি না ছাড়াতে চাওয়াতেই সংঘাত বাঁধে এবং উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়।
চিন শক্তিপ্রদর্শনের পথে হেঁটেছে বারবার
এহেন পরিস্থিতিতে ভারতকে বার্তা পাঠাতে চিন শক্তিপ্রদর্শনের পথে হেঁটেছে বারবার। পিএলএ-র রকেট ফোর্স বাহিনী তিব্বতে বেশ কয়েকবার মিসাইল পরিক্ষণ চালিয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে ভারতও চিনের বিরুদ্ধে তাদের মিসাইল তৈরি রেখেছে। চিনা আক্রমণ প্রতিহত করার লক্ষ্যে বর্তমানে ভারত তিন ধরনের মিসাইল মোতায়েন করে রেখেছে- ব্রহ্মস, আকাশ, নির্ভয়।
তৎপর ভারতীয় বায়ুসেনা
এদিকে ইতিমধ্যেই সীমান্তে প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি সেনা জওয়ান ও অস্ত্র মোতায়েন করেছে ভারত৷ পাহাড়ের উচ্চতায় মোতায়েন করা হয়েছে সুখোই ৩০, এমকেআই, জাগুয়ার, মিরাজ ২০০০৷ পূর্ব লাদাখের এয়ার বেসে ও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় মোতায়েন করা হয়েছে সেনা৷ সঙ্গে নতুন সংযুক্ত হওয়া ৫ টি রাফালও পূর্ব লাদাখে মোতায়েন করা হয়েছে৷ সেনা সূত্রে খবর, রাতের সীমান্তে চলছে কমব্যাট এয়ার প্যাট্রোলিং৷
মোতায়েন সেনা
শুধু তাই নয়, সমতল থেকে ১৪৫০০ ফিট উঁচুতে চিন সেনার মোকাবিলায় যুদ্ধ ট্যাঙ্ক ও কমব্যাট ভেহিকেলস মোতায়েন করা হয়েছে। পূর্ব লাদাখের এলএসি বরাবর চুমার ডেমচক এলাকায় টি-৯০, টি-৭২ ব্যাটল ট্যাঙ্ক ছাড়াও বিএমপি-২ কমব্যাট ভেহিকেলস রাখা হয়েছে। যা মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও কাজ করবে। শত্রুর পাশাপাশি লাদাখের কনকনে শীত থেকে বাঁচতে জওয়ানদের জন্য নতুন আশ্রয় তৈরির কাজ করছে ভারতীয় সেনা।
নয়াদিল্লির বক্তব্য
যদিও ভারত আলোচনার মাধ্যমেই শান্তি স্থাপন চায়। ভারতের দাবি, ১৯৯৩-৯৬ সালে হওয়া চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে চিনের তরফে। তবে এরই মধ্যে দিল্লির বক্তব্য, উভয় দেশের নেতাদের উচিৎ আলোচনায় বসা এবং মতভেদকে বিবাদে পরিণত না করার উপায় বের করা। তাছাড়া দুই দেশের বাহিনী নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা চালিয়ে যাবে এবং সীমান্তের পরিস্থিতি সংশোধন করার জন্য চেষ্টা হবে।
গঙ্গাপারে একা দাঁড়িয়ে চিরাগ, বিহারে কোন সমীকরণে হাত মেলাল বিজেপি-জেডিইউ?