৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের জন্য ১৯৭০ থেকেই তৈরি ছিল ভারত
১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের সাধআরণ নির্বাচনে জয় লাভ করে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লিগ। তবে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে নারাজ হয় পশ্চিম পাকিস্তানের সমনদে বসে থাকা রাজনৈতিকরা।
১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের সাধআরণ নির্বাচনে জয় লাভ করে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লিগ। তবে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে নারাজ হয় পশ্চিম পাকিস্তানের সমনদে বসে থাকা রাজনৈতিকরা। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের উপর শুরু হয় অকথ্য অত্যাচার। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। হয় মুক্তিযুদ্ধ। তবে এই যুদ্ধের কথা ইন্দিরা গান্ধী আঁচ করতে পেরেছিলেন ১৯৭০ সালেই। সেই মর্মে ভারতীয় সেনাকে তৈরি করতেও নির্দেশ দিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী।
১৯৭০ সালেই প্রস্তুতি শুরু
এই যুদ্ধের প্রস্তুতি ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারতে করতে শুরু করেছিল ১৯৭০ সালেই। ১৯৭০ সালে পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন হয়েছিল। রাজ্যে নকশাল আন্দোলন ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার কারণে সে সময় প্রচুর সৈন্য তখন আগে থেকেই মোতায়েন ছিল। যুদ্ধের আগে সেটা ভীষণ কাজে দিয়েছিল। পাশাপাশি ভারতীয় একটি বিমান হাইজ্যাক হওয়ায় ভারতের উপর দিয়ে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যকার বিমান চলাচলের পথ বন্ধ করে দেয় ভারত। এর জেরে পাকিস্তান ভারী সামরিক সরঞ্জাম, রসদ বা সৈন্যসামন্ত সরাসরি আকাশপথে পূর্বদিকে আনতে পারেনি।
স্যাম মানেকশকে ৭১-এর এপ্রিলে নির্দেশ দেন
১৯৭১ সালের বিজয় দিবসের ঠিক আগের দু সপ্তাহ ধরে চলেছিল তীব্র যুদ্ধ। একদিকে ছিল পাকিস্তানি সেনা, আর অন্যদিকে ভারতীয় সেনা আর বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী। ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনা যখন একযোগে ভারতের মোট এগারোটি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়, সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা সেনা অভিযানের কথা ঘোষণা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম সীমান্তে পুরাদস্তুর যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় সেদিন থেকেই, যদিও তার প্রস্তুতিপর্বটা চলছিল আগের বেশ কয়েক মাস ধরে। তৎকালীন ভারতীয় সেনাপ্রধান স্যাম মানেকশ পরে জানিয়েছিলেন ভারতীয় সেনাকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে এপ্রিল মাসেই নির্দেশ দিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী।
১৩ দিনের যুদ্ধ শেষে বিজয় দিবস পালিত হয়
৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয় ভারত। ১৩ দিন ধরে যুদ্ধ হয় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। তবে ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেননি। এই পরিস্থিতিতে দেশের তিন সেনার প্রধানকে ইন্দিরা গান্ধী সবরকম স্বাধীনতা প্রদান করেন। ৩ ডিসেম্বর ভারতের উপর যখন পাকিস্তান আক্রম করেন, সেই সময় কলকাতায় ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। আক্রমণের খবর পেয়েই তিনি দিল্লির উদ্দেশে রওয়ানা হন। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি রাজধানী থেকে ভাষণ রাখেন।