মার্কিন বৈদ্যুতিন বর্জ্যের ভাগাড় হবে ভারত, আশঙ্কা রাষ্ট্রসংঘের
আধুনিক জীবনে ক্রমশ চাহিদা বাড়ছে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, টিভি, রেফ্রিজারেটর ইত্যাদি সামগ্রীর। একটা সময়ের পর যখন এদের আয়ু ফুরিয়ে যায়, তখন তা ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। এইভাবে জমা হয় ই-ওয়েস্ট বা বৈদ্যুতিন বর্জ্য। উক্ত জিনিসগুলিতে থাকে সিসা, পারদ, ক্যাডমিয়াম, আর্সেনিক ইত্যাদি ক্ষতিকর পদার্থ। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এগুলি নষ্ট করে ফেলতে হয়। নইলে জল, হাওয়া মারফত তা ছড়িয়ে পড়ে পরিবেশে। চর্মরোগ, পেটের অসুখ, চুল পড়া, এমনকী ক্যান্সার পর্যন্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
'স্টেপ (সলভিং দ্য ই-ওয়েস্ট প্রবলেম) ইনিশিয়েটিভ' শীর্ষক রিপোর্টে রাষ্ট্রসংঘ জানাচ্ছে, দুনিয়ায় ফি বছর সবচেয়ে বেশি বৈদ্যুতিন বর্জ্য জড়ো করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যেমন গত বছর আমেরিকায় মাথাপিছু বৈদ্যুতিন বর্জ্যের পরিমাণ ছিল ২৯.৮ কিলো। ২০১২ সালে তারা মোট এক কোটি টন বৈদ্যুতিন বর্জ্য জড়ো করেছে। এর একটা বড় অংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জমা করত মালয়েশিয়ায়। কিছুটা চীনে। কিন্তু, আগামী বছরের গোড়া থেকে সেখানে আর বর্জ্য জড়ো করা যাবে না। কারণ, বিদেশের বৈদ্যুতিন বর্জ্য নষ্ট করার যে চুল্লি এই দু'দেশে আছে, সেগুলি বন্ধ করা হচ্ছে জনস্বাস্থ্যের কথা ভেবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাই চায় ভারতকে 'ভাগাড়' হিসাবে ব্যবহার করতে।
ভারত নিজেই প্রত্যেক বছর প্রচুর বৈদ্যুতিন বর্জ্য উৎপাদন করে। তার ওপর যদি বিদেশের বিপুল পরিমাণ বর্জ্য জমা হয়, তা হলে অবস্থা খারাপ হবে। প্রথমত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এত বিপুল বৈদ্যুতিন বর্জ্য নষ্ট করার পরিকাঠামো আমাদের দেশে নেই। ফলে, পরিবেশ দূষণ অবশ্যম্ভাবী। দ্বিতীয়ত, মালয়েশিয়ার মতো একটা ছোট্ট দেশও আমেরিকাকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রত্যাখ্যান করতে পারে নিজেদের জনগণের স্বার্থে। ভারত আদৌ কি তা পারবে, উঠছে সেই প্রশ্ন।