মার্কিন কূটনীতিকদের রসদ, সফরে ছাড় বন্ধ, সরল পুলিশি ব্যারিকেডও
অথচ এদিন সকালেও এতটা রণং দেহী মূর্তিতে ছিল না ভারত। অবস্থা ঘুরে যায় দেবযানীর বাবা উত্তম খোবরাগাডে বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদের সঙ্গে দেখা করার পর। আমেরিকায় মেয়েকে কীভাবে অপমান করা হয়েছে, তার বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। তার পরই সরকার সিদ্ধান্ত নেয় পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার।
কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে আমেরিকার বিরুদ্ধে?
প্রথমত, ভিসা জালিয়াতি ছাড়াও দেবযানী খোবরাগাডের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি পরিচারিকাকে কম বেতনে কাজ করাতেন। তাই ভারতে অবস্থিত মার্কিন কনসুলেটগুলিতে যে ভারতীয় কর্মীরা কাজ করেন, তাঁরা কত বেতন পান, তা জানতে চেয়েছে কেন্দ্র। শুধু জানা নয়, এ-সংক্রান্ত বিস্তারিত কাগজপত্র পাঠাতে মার্কিন কনসুলেটগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি দেখা যায়, তাঁরা কম বেতন পান, তা হলে এদেশের আইন মোতাবেক মামলা রুজু করা হবে।
দ্বিতীয়ত, মার্কিন কূটনীতিকদের পরিচয়পত্র জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ ভারতের কোনও জায়গায় পরিচয়পত্র দেখিয়ে তাঁরা আর কূটনীতিক সুবিধা পাবেন না।
তৃতীয়ত, মার্কিন কূটনীতিকদের এয়ারপোর্ট 'পাস' বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে, বিমানে ওঠার সময় তাঁদের আলাদা মর্যাদা দেওয়া হবে না। সাধারণ যাত্রীদের মতোই ব্যাগ, শরীর তল্লাশি করা হবে এবং সন্দেহ হলে জামাকাপড় খুলে পরীক্ষা করা হবে।
চতুর্থত, দূতাবাস, কনসুলেটগুলিতে রসদ আনার ক্ষেত্রে আর রক্ষাকবচ পাচ্ছে না আমেরিকা। খাবার, আসবাব, বিলাসসামগ্রী ভারত পরীক্ষা করতে পারবে। সন্দেহ হলে তা আটক করে বাজেয়াপ্ত করতে পারবে। এই আদেশ অবিলম্বে বলবৎ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
এর আগে এদিন ভারত সফররত মার্কিন সাংসদদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে অস্বীকার করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন, বিজেপি পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী, কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্ডে। আগে থেকে ঠিক ছিল এঁরা সবাই সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। কিন্তু, সটান জানিয়ে দেন দেবযানী-কাণ্ডের পর আর দেখা করতে রাজি নন।