ধর্মভীতি নিয়ে দ্বৈত মানসিকতা কখনই মানদণ্ড হতে পারে না, রাষ্ট্রসংঘে সরব ভারত
ধর্মভীতি নিয়ে দ্বৈত মানসিকতা কখনই মানদণ্ড হতে পারে না, রাষ্ট্রসংঘে সরব ভারত
নবী নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যে বিশ্বের একাধিক দেশ ভারতের নিন্দা করেছে। রাষ্ট্রসংঘে পরোক্ষে এই বিষয়ে মন্তব্য করলেন ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি। তিনি বলেন, ধর্মভীতির বিষয়ে কখনই দ্বৈত মনোভাব থাকতে পারে না। তিনি মন্তব্য করেন, ধর্মভীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা প্রয়োজন। তবে একটি বা দুটি ধর্মের বিরুদ্ধে যে ভীতি রয়েছে, শুধু মাত্র সেইক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। অ-আব্রাহামিক ধর্মের বিরুদ্ধে মানুষের যে ফোবিয়া রয়েছে, তার বিরুদ্ধেও লড়াইয়ের প্রয়োজন বলে টিএস তিরুমূর্তি মন্তব্য করেছেন।
শনিবার রাষ্ট্রসংঘে টিএস তিরুমূর্তি বিশ্বে এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান করেন, যেখানে আক্ষরিক অর্থেই গণতন্ত্রের নীতির ওপর জোর দেওয়া হবে। বহুত্ববাদকে সম্মান দেওয়া হবে। সেই শিক্ষাব্যবস্থা অবশ্যই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবদান রাখবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, 'আমরা ধর্মভীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জোর দিয়েছে।
নির্দিষ্ট একটা বা দুটো ধর্মের বিরুদ্ধে মানুষের যে ভীতি রয়েছে তার বিরুদ্ধে লড়াই করা যেমন প্রয়োজন, তেমনি অ-আব্রাহামিক ধর্মের বিরুদ্ধে মানুষের লড়াইয়ের প্রয়োজন। ধর্মভীতি নিয়ে অনেক সময় দ্বৈত মনোভাব দেখতে পাওয়া যায়। যা কখনই কাম্য নয়। এই ভীতিগুলো দূর না হলে আন্তর্জাতিক দিবসগুলো কখনই তাদের উদ্দেশ্যে সফল হতে পারবে না।'
নবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বিশ্বের বিভিন্ন ইসলামিক দেশে ভারত সমালোচনার শিকার হয়েছে। বিজেপি এই বিতর্কিত মন্তব্যের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছে। বিজেপি জাতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে বহিষ্কার করেছে। পাশাপাশি দিল্লির মিডিয়া প্রধান নবীন জিন্দলকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। তারপরেও বিতর্ক থামেনি।
এই পরিস্থিতিতে নেতিবাচক মন্তব্যের বিরোধিতায় আন্তর্জাতিক দিবসের প্রথম বছরে রাষ্ট্রসংঘের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে টিএস তিরুমূর্তি বলেন, 'আব্রাহামিক ধর্মগুলোর বিরুদ্ধে যে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে, যে নেতিবাচক মন্তব্য হয়, সেই বিষয়েই আলোচনা হয়। কিন্তু আব্রাহামিক নয়, এমন ধর্মের বিরুদ্ধেও অনেক নেতিবাচক মন্তব্য শোনা যায়, নানাভাবে হেনস্থার শিকার হতে হয়। সেই অ-আব্রাহামিক ধর্মের মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। না হলে ধর্মভীরু নিয়ে দ্বৈত মানসিকতা প্রকাশ পাবে।'
প্রসঙ্গত, শনিবার কাবুলে বাগ-ই-বালা এলাকায় গুরুদ্বার কার্তে পারওয়ানে বিস্ফোরণে এক শিখ সহ দুই জন নিহত হয়েছেন। সাত জন আহত হয়েছেন। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। এই বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগেই টিএস তিরুমূর্তি রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে আব্রাহামিক ধর্মের পাশাপাশি হিন্দু, শিখ ও বৌদ্ধ ধর্মের ওপর বার বার যে হামলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে সরব হওয়ার আহ্বান জানান।
'দিদিকে বলো’র ধাঁচে 'দিলীপকে বলো’ অভিযান! বাংলায় প্রাসঙ্গিক থাকার প্রয়াসে নয়া বিতর্ক
পাশাপাশি তিনি বলেন, মঠ, মন্দির, গুরুদ্বারে হামলা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। তার বিরুদ্ধেও বিশ্বের সরব হওয়া প্রয়োজন। এই প্রসঙ্গে তিনি ২০২০ সালে গুরুদ্বারে বিস্ফোরণের কথা উল্লেখ করেন। সেই বিস্ফোরণে ২৫ জন শিখ উপাসক নিহত হন।