
দ্রব্যমূল্য আকাশ ছুঁয়েছে ভারতে! বার্ষিক মূল্যস্ফীতি মার্চে বেড়েছে রেকর্ড ১৪.৫৫ শতাংশ
ভারতে আকাশ ছুঁয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। ভারতের বার্ষিক পাইকারি মূল্য-ভিত্তিক মূল্যস্ফীতি মার্চে রেক্রড করেছে। গত মাসের থেকে মার্চ মাসে রেকর্ড করেছে মূল্যবৃদ্ধির হার। গত মাসে ১৩.১১ শতাংশ ছিল মূল্যবৃদ্ধির হার। তা ছাড়িয়ে মার্চ মাসে রেকর্ড ১৪.৫৫ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। সোমবার সরকারি সূত্রে উঠে এসেছে এই তথ্য।

বিশ্লেষকদের সমীক্ষায় ১৩ শতাংশ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু মার্চের পরিসংখ্যান তার থেকে অনেক বেশি ছিল। পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসেও তার প্রভবা পড়েছে। পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বছরে ৩৪.৫২ শতাংশ বেড়েছে। তার মধ্যে শুধু ফেব্রুয়ারিতেই বেড়েছে ৩১.৫০ শতাংশ।
সেই জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে পাইকারি মূল্য-ভিত্তিক মূল্যস্ফীতি মার্চ মাসে চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ১৪.৫৫ শতাংশ দামবৃদ্ধি হয়েছে মার্চ মাসে। প্রধানত অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে ভারতের বাজারে জ্বালানিত দাম বেড়েছে। তার ফলে পণ্যের দামও আকাশ ছুঁয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি হলেও শাকসবজির দামের চাপ কমানো হয়েছে।
সোমবার প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল ২০২১ থেকে শুরু হওয়া টানা দ্বাদশ মাসে ডব্লুপিআই বা হোলসেল প্রাইস ইনডেক্স মুদ্রাস্ফীতি ডাবল ডিজিটে রয়ে গিয়েছে। শেষবার ডব্লিউপিআই-এর এই ধরনের স্তরটি ২০২১ সালের নভেম্বরে রেকর্ড করা হয়েছিল, যখন মুদ্রাস্ফীতি ছিল ১৪.৮৭ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে ডব্লুপিআই মূল্যস্ফীতি ছিল ১৩.১১ শতাংশ। মার্চে তা বেড়ে হয়েছে ১৪.৫৫। উল্লেখ্য, গত বছরের মার্চ মাসে তা ছিল মাত্র ৭.৮৯ শতাংশ৷
খাদ্য সামগ্রীর মূল্যস্ফীতি ফেব্রুয়ারিতে ৮.১৯ শতাংশ ছিল, তা এই মাসে কমে ৮.০৬ শতাংশে নেমে এসেছে। সবজির মূল্যস্ফীতি ১৯.৮৮ শতাংশ, যা ফেব্রুয়ারিতে ২৬.৯৩ শতাংশ ছিল। মার্চ মাসে উৎপাদিত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৭১ শতাংশ, যা ফেব্রুয়ারিতে ৯.৮৪ শতাংশ ছিল।
জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির হার ছিল ৩৪.৫২ শতাংশ। অপরিশোধিত পেট্রোলিয়ামের মূল্যস্ফীতি মার্চ মাসে ৮৩.৫৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা ফেব্রুয়ারিতে ৫৫.১৭ শতাংশ ছিল৷ মার্চ মাসে খুচরা মূল্যস্ফীতি ৬.৯৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। পরপর তৃতীয় মাসে যে গ্রাহক মূল্য সূচকটি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সহনশীলতার সীমা ৬ শতাংশ লঙ্ঘন করেছে। গত সপ্তাহে প্রকাশিত তথ্যে এই পরিসংখ্যান দেখিয়েছে।

এই মাসের শুরুর দিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তার মূল রেপো রেট ধরে রেখেছে। যাতে ব্যাঙ্কগুলিকে স্বল্পমেয়াদী টাকা ধার দেওয়া যায়। একাদশতম বারের জন্য অপরিবর্তিত থেকেছে ৪ শতাংশে। তা দেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধিকে সমর্থন করে। এসবের মধ্যে সবথেকে চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যস্ফীতি। যা সরাসরি সাধারণ মানুষের হেঁশেলে ঢুকে পড়েছে।