ফের লাদাখ ইস্যুতে উস্কানিমূলক বক্তব্য চিনের! বেজিংকে রেয়াত না করে কড়া জবাব দিল্লির
ভারত-চিনের মধ্যকার লাদাখ সীমান্ত নিয়ে বিবাদ দীর্ঘদিনের। উভয় দেশই ১৯৬২ সালের অক্টোবর মাসে অল্প সময়ের জন্য যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তাতে তাদের সমস্যার কোনও নিষ্পত্তি হয়নি এবং এর অন্তত সাত দশক পরও সম্পর্কে সেই অস্বস্তি চলছে। সম্প্রতি ফের সীমান্ত সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতেই চিন ধারণ করেছে রণংদেহী মূর্তি। ভারত শান্তির বার্তা দিলেও বেজিং তাতে কর্ণপাত করছে না।
আলটপকা মন্তব্য করল চিন
এই আবহে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে ফের আলটপকা মন্তব্য করল চিন। এদিন চিনের বিদেশমন্ত্রকের তরফে লাদাখ ইস্যুতে একটি বিবৃতি পেশ করে বলা হয় যে বেজিং নাকি লাদাখকে ভারতীয় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বলে মানতে নারাজ। আর বেজিংয়ের এহেন মন্তব্যকে পুরোপুরি নাকচ করে দিয়েছে দিল্লি।
সমস্যার সূত্রপাত ১৯৫৯ সালে
লাদাখ সীমান্ত নিয়ে সমস্যার সূত্রপাত ১৯৫৯ সালে। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে একটি চিঠি লিখে এলএসি নিয়ে তাঁদের ঐতিহ্য অনুযায়ী সীমান্তের কথা বলেন চিনা প্রধানমন্ত্রী ঝু এনলাই। যদিও ভারত তা অস্বীকার করে। তবে বর্তমানে সেই সীমাকেই এলএসি বলে দাবি করতে শুরু করেছে চিন। তবে ভারত এই বদল মানতে নারাজ।
ভারতের পরিকাঠামোগত নির্মাণ কাজের বিরোধ
শান্তি ফেরার প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বার্তা বলছে দুই দেশই। তবে এরই মধ্যে এদিন চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়্যাং ওয়েবিন বলেন যে ভারত নাকি বেআইনি ভাবে লাদাখকে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হিসাবে গঠন করেছে। এবং সীমান্ত এলাকায় ভারতের পরিকাঠামোগত নির্মাণ কাজের বিরোধ করা হয়।
১৯১৪ সালের ম্যাকমোহন লাইন
এলএসি মূলত ১৯১৪ সালের ম্যাকমোহন লাইনকে অনুসরণ করে। এর জেরে পূর্বে অরুণাচলপ্রদেশের কয়েকটি এলাকা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এদিকে চিন অরুণাচলকে নিজেদের দেশের অংশ বলে দাবি করে। তাদের ভাষায় অরুণাচল হল দক্ষিণ তিব্বত। লংজু ও আসাফিলা এলাকাতেও কয়েকটি জায়গা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে মতান্তর রয়েছে।
গত কয়েক দশকেও মেটেনি সমস্যা
পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে চিনে প্রিমিয়ার লি পেং যখন ভারত সফরে আসেন, তখন পিভি নরসিমহা রাও এলএসি-র এই মত মেনে নেন। পরে ১৯৯৩ সালে বেজিংয়ে গিয়ে এই সংক্রান্ত চুক্তিপত্রে সই করেছিলেন পিভি নরসিমহা রাও। তবে ভারতের পক্ষ থেকে কোনও দিনও এলএসি-র মানচিত্র অদলবদল করা হয়নি। এরপর ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদী যখন এই সংক্রান্ত বিবাদ মেটানোর প্রস্তাব করেন, তখন তা প্রত্যাখ্যান করেছিল বেজিং। আর এবছর মে মাস থেকেই লাদাখ নিয়ে ফের উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে দুই দেশের সীমান্ত।