ভারত-ভূটান সীমান্তে কেন বাড়তি নজরদারি চাইছে চিন
ভারত-ভূটান-চিন সীমান্তের ডোকলায় বাড়ছে উত্তেজনা ভারত তখন এলাকায় আরও সেনা পাঠাচ্ছে, চিন সেই সেনা প্রত্যাহারের দাবি করছে ভারত-ভূটান সীমান্তে বাড়তি নজরদারি করতেই ডোকলা নিয়ে চিনা-চাপ, বলছেন বিশেষজ্ঞরা
ভারত-ভূটান-চিন সীমান্তের ডোকলায় যখন ভারত সেনার সংখ্যা বাড়াচ্ছে, ঠিক তখনই এলাকা থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের দাবি করল চিন। ডোকলায় বেজিং-এর রাস্তা তৈরিতে এলাকার শান্তি বিঘ্নিত হবে বলে ভারতে দাবিও খারিজ করে দিয়েছে বেজিং। বিষয়টি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক ঐক্য থেকে সরে না আসতেও ভারতকে বলা হয়েছে। চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা জিনহুয়ার সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
এলাকা থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের দাবি করে জিনহুয়া, ১৮৯০ সালে সিকিম এবং তিব্বতের মধ্যে হওয়া চুক্তির কথাই ফের উল্লেখ করেছে।
স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের সরকার বারংবার লিখিতভাবে বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিতও করেছে বলে দাবি জিনহুয়ার। একইসঙ্গে দুপক্ষরই কারও কোনও বিষয় নিয়েও বিরোধিতা ছিল না বলে দাবি। চিনের অভিযোগ, ভারতীয় বাহিনী চিনের বাহিনীকে ডোকলায় রাস্তা তৈরিতে বাধা দিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ছায়া ফেলেছে।
একদিকে চিন যখন ডোকলা নিয়ে সিকিম-তিব্বতের চুক্তির কথা সামনে আনছে, ঠিক সেই সময়ই বিদেশ মন্ত্রকের তরফে নয়াদিল্লিতে, ২০১২-র চিন-ভারত চুক্তির বিষয়কে হাতিয়ার করা হয়েছে। সেখানে দুপক্ষই বিষয়টি নিয়ে সমন্বয় রক্ষা করে চলার কথা বলেছিল।
১৯৬২ সালের পর থেকে ডোকলায় এত উত্তেজনা দেখা যায়নি। দুটি বাঙ্কার ধংসের পরই সেখানে আরও সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সূত্রের খবর, পিপিলস লিবারেশন আর্মি এবছরের ১ জুন, ডোকলার লালটেন-এ ২০১২-তে তৈরি করা দুটি বাঙ্কার সরিয়ে নিতে বলে। সঙ্গে সঙ্গে প্রহরারত সেনা জওয়ানরা দার্জিলিং-এর সুকনায় ৩৩ কর্পের সদর দফতরে বিষয়টি জানান। এরই মধ্যে ৬ জন রাতে চিন বাঙ্কার দুটি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেয় বলে জানা গিয়েছে। তবে সেখানে থাকা ভারতীয় বাহিনী পিএলএ-জওয়ানদের প্রতিরোধও করে বলে সূত্রের খবর। এরপর ৮ জুন ভারত সেখানে আরও সেনা পাঠালে দুপক্ষের হাতাহাতিও হয়। এলাকায় পিএলএ সেনার সংখ্যা বাড়ানোয় ভারতও সেখানে তাঁদের অবস্থান মজবুত করতে থাকে।
এদিকে ডোকলা নিয়ে উত্তেজনার জেরে ৪৭ জন কৈলাস-মানস সরোবর তীর্থযাত্রীকে ঢুকতে বাধা দেয়। একইসঙ্গে পরবর্তী ৫০জন যাত্রীর ভিসা বাতিলের কথা জানায়।
তবে ডোকলা নিয়ে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা এইবারই প্রথম নয়। ২০০৮-এর নভেম্বরে পিএলএ ভারতীয় সীমান্তের বেশ কিছুঅস্থায়ী নির্মাণ ভেঙে দিয়েছিল।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডোকলা নিয়ে চাপ বাড়িয়ে ভারত-ভূটান সীমান্ত এলাকায় বাড়তি নজরদারি করতে চাইছে চিন।