ব্রিটেনের পর ডিসেম্বরেই জরুরি ভিত্তিতে টিকাকরণে ছাড়পত্র দিতে পারে ভারত, বলছেন এইমস অধিকর্তা
বুধবারেই ব্রিটেনে জরুরিভিত্তিতে প্রতিষেধক প্রয়োগের ছাড়পত্র পেয়েছে ফাইজার। বরিস জনসনের সরকারের এহেন পদক্ষেপের পর তালিকায় পরবর্তী নাম হিসেবে উঠে এল ভারত। এইমসের অধিকর্তা ডাঃ রণদীপ গুলেরিয়া জানিয়েছেন যে ডিসেম্বরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতেই ভারতে জরুরিভিত্তিতে প্রয়োগের জন্য অনুমতি পেয়ে যাবে কোনো একটি সম্ভাব্য প্রতিষেধক। আর এই ঘোষণার পরেই স্বভাবতই ফের নতুন করে আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন ভারতবাসী।

ছাড়পত্র পেতে পারে কোন ভ্যাকসিন ?
ডঃ গুলেরিয়া জানিয়েছেন, "ভারতে এখনও পর্যন্ত একাধিক ভ্যাকসিন সর্বশেষ ট্রায়ালের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে। তারই মধ্যে একটি ভ্যাকসিন ব্যবহারের চেষ্টা চালাবেন গবেষকরা।" যদিও কোন সংস্থার ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হতে পারে সেই বিষয়ে এদিন ধোঁয়াশা বজায় রাখলেন তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, "সুরক্ষা ও কার্যকারিতার দিকটিও খতিয়ে দেখা হয়েছে। প্রায় ৭০,০০০-৮০,০০০ স্বেচ্ছাসেবকের উপর একটি ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে দেখা গেছে যে এই প্রতিষেধক স্বল্প সময়েই কার্যকরী। সহজ ভাবে বললে প্রয়োগের বিচারে এই টিকাটিকেই এগিয়ে রাখা হচ্ছে।"

প্রয়োগের পূর্বে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতিতে জোর
এদিকে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে চেন্নাইয়ের এক স্বেচ্ছাসেবক যে অভিযোগ তুলেছিলেন, ডঃ গুলেরিয়া তা সম্পূর্ণ নাকচ করে দেন। তাঁর বক্তব্য, "আসলে ভ্যাকসিন নয়। স্বেচ্ছাসেবকদের পূর্ব শারীরিক সমস্যাই এইরকম ভোগান্তি ডেকে এনেছে।" ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয়ে এইমসের এক আধিকারিক জানান, "যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মাঠে নেমেছে কেন্দ্র সহ সমস্ত রাজ্য সরকারই। পরিবহন, হিমঘর ও সরঞ্জামের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জোর দেওয়া হচ্ছে পরিকাঠামোর উন্নয়নেও।"

তালিকা মেনে ভ্যাকসিন প্রয়োগের ভাবনা
ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিধি সম্পর্কে ডঃ গুলেরিয়া জানান, "প্রথম ধাপে কোমর্বিডিটিযুক্ত বয়স্ক এবং সম্মুখ সারির কোভিড যোদ্ধাদের এই ভ্যাক্সিন দেওয়া হবে।" তাঁর মতে, "কোভিডের প্রভাব আগের তুলনায় অনেকটাই কমে এসেছে। আগামী তিনমাস যদি আমরা এভাবেই সতর্কভাবে জীবনযাপন করে সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে পারি, তাহলে সহজেই করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সম্ভব।"

ভারতে শেষ ধাপের ট্রায়ালে একঝাঁক ভ্যাকসিন
চিকিৎসকমহলের মতে, ভারতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে সারা জাগানো ভ্যাকসিন প্রতিযোগী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার 'কোভিশিল্ড'। পুনের সিরাম ইনস্টিটিউটের তত্ত্বাবধানে এই ভ্যাকসিনের অন্তিম পর্যায়ের ট্রায়াল সংঘটিত হচ্ছে বলে খবর সূত্রের। অন্যদিকে, রাশিয়ার স্পুটনিক ভি-ও বেশ ভাল ফল করেছে ট্রায়ালে। পাশাপাশি ভারত বায়োটেক ও আইসিএমআরের যৌথ উদ্যোগে তৈরি 'কোভ্যাক্সিন'-কে নিয়েও যথেষ্ট আশাবাদী ভারতীয় চিকিৎসকমহল।