পেটেন্ট যুদ্ধে ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে ভারত, দেশের মাটিতেই অবস্থা শোচনীয়
বরাবরই পেটেন্ড গ্রহণের বিশ্ব ক্রমতালিকায় অনেক পিছিয়ে ভারত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে নিজেদের দেশেও পেটেন্ট গ্রহণে ভারতীয় সংস্থাগুলিকে অনেক পেছনে ফেলে দিচ্ছে বিদেশী সংস্থাগুলি।
ভারতের মাটিতে ভারতীয় গবেষণাগারগুলিই ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে পেটেন্ট আদায়ের যুদ্ধে। বিশ্বে পেটেন্ট অর্জনে ভারতের অবস্থাটা বরাবরই করুন। পেটেন্ড গ্রহণের বিশ্ব ক্রমতালিকায় অনেক পিছিয়ে এই দেশ। কিন্তু দেখা যাচ্ছে নিজেদের দেশেও পেটেন্ট গ্রহণে ভারতীয় সংস্থাগুলিকে অনেক পেছনে ফেলে দিচ্ছে বিদেশী সংস্থাগুলি।
সবার আগে কোয়ালকম আইএনসি
ভারতীয় সবকটি ল্যাব মিলিয়ে যেখানে মাত্র ৭৮১টি পেটেন্ট অ্যাপ্লিকেশন জমা দিয়েছে, সেখানে একা কোয়ালকম আইএনসি-ই ১৮৪০ টি অ্যাপলিকেশন দিয়েছে। এই মার্কিন ফার্মটি সেমিকন্ডাকটর ও টেলিকম সংক্রান্ত যন্ত্রাংশ তৈরি করে। তারপরেই আছে স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স ও হুয়ায়েই টেকনোলজিস।
প্রতি ১০টি অ্যাপ্লিকেশনের মাত্র ২.৯টি ভারতীয়
২০১৬-১৭ সালে ভারতে মোট ৪৫ হাজার ৪৪৪টি পেটেন্ট অ্যাপ্লিকেশন ফাইল করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭১ শতাংশই ফাইল করেছে বিদেশী সংস্থা গুলি। বাকি মাত্র ২৯ শতাংশ পেটেন্টের অ্যাপ্লিকেশন জমা পড়েছে ভারতীয়দের তরফে।
এগিয়ে আমেরিকা, জাপান, চিন
দেশ অনুযায়ী ভারতের পেটেন্ট আবেদনের তালিকার প্রথম তিন স্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও চিন। তিনদেশের মিলিত অ্যাপ্লিকেশনের সংখ্যা ১৪ হাদার ৬৩৬টি। যা ভারতীয় সংস্থাগুলির তরফে জমা দেওয়া অ্যাপ্লিকেশনের সংখ্যার চেয়ে ১ হাজার ৬৫৯ টি বেশি।
গবেষণা কম হয় না
ভারতে কিন্তু গবেষণার অভাব নেই। অভাব নেই গবেষণাগারেরও। ডিআরডিও-র হাতে রয়েছে ৫০ টি ল্যাব, আইআইএসসি-র ৪০ টি, সিআইএসআর-এর ৩৮টি, এনআইআইটি-র ৩১টি, আইআইটির ২৩টি এবং ইসরো পরিচালনা করে আরও ৬টি অত্যন্ত উন্নত গবেষণাগার। কিন্তু এতগুলির মিলিত পেটেন্টের প্রায় দ্বিগুন পেটেন্ট নিয়েছে একা কোয়ালকমই।
কেন পিছিয়ে ভারত ?
প্রখ্যাত বৈজ্ঞানিক প্রফেসর রদ্দাম নরসিংহের মতে, 'আমাদের প্রতিভা বা উদ্যোগের অভাব নেই, অভাব রয়েছে পরিবেশের। বিজ্ঞান এবং উদ্ভাবনের কাজে এখনও অনেক দূর যেতে হবে। কারণ আমাদের বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে দুর্বল নীতি আছে এবং ঝুঁকি নেওয়ার আত্মবিশ্বাসের অভাব।'
কী করলে অবস্থাটা পাল্টাবে?
ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান কে কস্তুরিরঙ্গন বলছেন, 'আমাদের পেটেন্ট সংস্কৃতি ফেরাতে হবে, সব ইনস্টিটিউশনে কিন্তু এটা নেই। কতিপয় ব্যক্তির কাজ পেটেন্ট পাওয়ার যোগ্য হয়। এই অবস্থাটা পাল্টাতে হবে।' তবে প্রফেসর রদ্দাম নরসিংহ অবশ্য আশাবাদী। তিনি বলছেন, 'গত কয়েকবছর ধরে অবস্থাটা পাল্টাচ্ছে।'