অদূর ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের সম্মুখীন হতে চলেছে ভারত, বলছেন বিশেষজ্ঞরা
আমফান হোক বা নিসর্গ, সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েছে গোটা দেশ। এমতাবস্থায় এবার ভারতের জন্য আরও বড়সড় আশঙ্কার কথা শোনাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে ভারত সহ সারাবিশ্বে আছড়ে পড়া করোনা ঝড়ের প্রকোপ বর্তমানে অনেকটাই কমেছে। সংক্রমণের মাত্রায় তারতম্য দেখা দিলেও ভারতে কমছে মৃত্যুহার। যদিও বর্তমানে ভারতবাসীর আশঙ্কা বাড়িয়ে দিল আবহাওয়াবিদদের সমীকরণ। দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষকরা জানিয়েছেন যে, আগামী দিনে ভারতে যেসব ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে চলেছে, তাদের রূপ হবে আরও ভয়ঙ্কর ও একইসাথে ধ্বংসাত্মকও।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়ে আতঙ্কিত বিজ্ঞানীরা
এ বছর আমফান, নিসর্গ, নিভার, বুরেভির মত ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে প্রবলভাবে তছনছ হয়েছে ভারতীয় ভূখন্ড। দক্ষিণ কোরিয়ার 'দ্য ওয়েদার চ্যানেল'-এর গবেষকদের মতে, ক্রমবর্ধমান বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলিতে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা আগের থেকে হয়তো কমবে, কিন্তু তাদের শক্তি তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে। ফলে বাড়বে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা।

ভারত মহাসাগরে বাড়বে ঘূর্ণিঝড়ের আধিক্য
দক্ষিণ কোরিয়ার পুসান বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক গত ১৩ মাস ধরে 'অ্যালেফ' নামক সুপারকম্পিউটারে এই গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা যাচ্ছে। তাঁদের মতে, ভারত মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণেই তেজ বাড়বে একধিক ঘূর্ণিঝড়ের। এই গবেষণার রিপোর্টে দিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া দফতরও। ফলস্বরূপ গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলিতে জলীয় বাষ্প সঞ্চয় করে একটি ঘূর্ণিঝড় স্যাফির-সিম্পসন স্কেলে ৩-এও পৌঁছাতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যার অর্থ যেকোনো ভূখন্ডকে নিমেষে তছনছ করে দিতে পারে এই 'সুপার-সাইক্লোন'।

এখনও দগদগে ভয়াবহ আমফানের স্মৃতি
২০২০-এর প্রথমার্থেই বাংলা, ওড়িশা সহ ভারতের উপকূলবর্তী বিস্তৃর্ণ অঞ্চলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় আমফান। গত ১৯শে মে নাগাদ ভারত সহ বাংলাদেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলে প্রবলবেগে ধেয়ে আসে আমফান। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই সুপার-সাইক্লোনের কারণে ঘরছাড়া হন কয়েক হাজার মানুষ, তছনছ হয়ে যায় সুন্দরবন অঞ্চল। অন্যদিকে আরব সাগরে সৃষ্ট 'নিসর্গ' সুপার-সাইক্লোন মুম্বইয়ের কাছে আলিবাগে আছড়ে পড়ে। এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণেই কেরলে ১লা জুনের মধ্যেই ঢুকে পড়ে বর্ষা।

একজনজরে সাম্প্রতিককালের একাধিক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়
কিছুদিন আগেই ভারতের পশ্চিমতটের উপর আঘাত আনে ঘূর্ণিঝড় 'গাতি'। তছনছ হয়ে যায় কেরলের একাংশ। অন্যদিকে ২৫শে নভেম্বরের রাতে তামিলনাড়ুর উত্তর তান্ডব চালায় 'নিভার'। আবহাওয়াবিদদের মতে, এ বছরের সবচেয়ে দুর্বল ঘূর্ণিঝড় সম্ভবত 'বুরেভি'। ২রা নভেম্বর শ্রীলঙ্কার উপকূল পার করে তামিলনাড়ুতে পৌঁছালেও সাইক্লোন থেকে বদলে গিয়ে এটি পরিবর্তিত হয় গভীর নিম্নচাপে। এদিকে ভারতের ঋতুচক্রের উপর যেরকম নিয়ন্ত্রণ রয়েছে ঘূর্ণিঝড়গুলির, তাতে সাইক্লোনের শক্তিবৃদ্ধির সাথেসাথে জলবায়ুতেও বড়সড় পরিবর্তন দেখা যাবে বলেই মত আবহাওয়াবিদদের।
বাড়ির সামনে জঞ্জাল রেখে দিয়ে গেল পুরকর্মী, মানসিক আঘাতে মৃত্যু তেলঙ্গানার ৫৮ বছরের মহিলার